পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।
But if they (both) strive with you to make you join in worship with Me others that of which you have no knowledge, then obey them not, but behave with them in the world kindly, and follow the path of him who turns to Me in repentance and in obedience. Then to Me will be your return, and I shall tell you what you used to do.
وَإِن جَاهَدَاكَ عَلى أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Wa-in jahadaka AAala an tushrika bee ma laysa laka bihi AAilmun fala tutiAAhuma wasahibhuma fee alddunya maAAroofan waittabiAA sabeela man anaba ilayya thumma ilayya marjiAAukum faonabbi-okum bima kuntum taAAmaloona
YUSUFALI: “But if they strive to make thee join in worship with Me things of which thou hast no knowledge, obey them not; yet bear them company in this life with justice (and consideration), and follow the way of those who turn to me (in love): in the end the return of you all is to Me, and I will tell you the truth (and meaning) of all that ye did.”
PICKTHAL: But if they strive with thee to make thee ascribe unto Me as partner that of which thou hast no knowledge, then obey them not. Consort with them in the world kindly, and follow the path of him who repenteth unto Me. Then unto Me will be your return, and I shall tell you what ye used to do –
SHAKIR: And if they contend with you that you should associate with Me what you have no knowledge of, do not obey them, and keep company with them in this world kindly, and follow the way of him who turns to Me, then to Me is your return, then will I inform you of what you did–
KHALIFA: If they try to force you to set up any idols beside Me, do not obey them. But continue to treat them amicably in this world. You shall follow only the path of those who have submitted to Me. Ultimately, you all return to Me, then I will inform you of everything you have done.
১৫। “কিন্তু যদি তারা তোমাকে আমার শরীক করার জন্য বাধ্য করে ৩৫৯৭ , যদিও সে সম্বন্ধে তোমার কোন জ্ঞান নাই, তবে তাদের কথা মানবে না। তবুও পৃথিবীতে তাদের সাথে [ শ্রদ্ধা ও ] ন্যায়ের ভিত্তিতে বসবাস করবে। যারা [ভালোবেসে ] অনুগত ভাবে আমার দিকে ফিরে আসে তাদের পথ অনুসরণ কর ৩৫৯৮। অবশেষে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন আমার নিকটে এবং আমি তোমাদের বলে দেবো তোমরা যা করতে তার সত্যতা [ ও অর্থ] ৩৫৯৯। ”
৩৫৯৭। বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্র এবাদত হচ্ছে মানুষের প্রধান কর্তব্য। এই কর্তব্যে কোনরূপ বাধা উপস্থিত হলে তা গ্রহণীয় নয়। সে বাধাকে উপেক্ষা করতে হবে বিনয় ও সুবিবেচনার মাধ্যমে। আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্য করতে যেয়ে আমাদের কোনও অবস্থাতেই উদ্ধত ও একগুয়ে হওয়া চলবে না। আল্লাহ্র এবাদতের ব্যাপারে দৃঢ়তাই হবে আমাদের চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এমন কি স্নেহময় ও শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতাও যদি এ ব্যাপারে বাধা দান করেন, সেক্ষেত্রেও আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে তাদের প্রতি হতে হবে দয়ালু, বিনয়ী ভদ্র এবং সুবিবেচক। যদি তারা এমন কিছু হুকুম করেন যা আল্লাহ্র হুকুমের বিরুদ্ধে যায়, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে বিনয়ের সাথে তাদের প্রত্যাখান করা। সেটাই হবে সন্তানের কর্তব্য। আয়াতটির উপদেশ হচ্ছে সর্বোচ্চ কর্তব্যের ডাকে হতে হবে দৃঢ় সংকল্প এবং নির্ভিক। তবে কর্তব্য কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে হতে হবে বিনয়ী , ভদ্র, দয়ালু এবং সুবিবেচক।
আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপাসনার অর্থই হচ্ছে মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করা। আর যা কিছু মিথ্যা তাই-ই আত্মার জ্যোতিকে নিভিয়ে দেয়। আত্মাকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করে। স্রষ্টা মানুষের আত্মাকে সৃষ্টি করেছে পূত পবিত্র রূপে। তাই যা কিছু মিথ্যা তা সবই আমাদের প্রকৃতি বিরুদ্ধ কাজ – যে প্রকৃতি অনুযায়ী স্রষ্টা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আত্মাকে যখন মিথ্যার দ্বারা কলুষিত করে ফেলা হয়, সেখানে স্বর্গীয় আলোর প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রকৃত জ্ঞান বা ঐশী জ্ঞান অন্তরে প্রবেশে বাধা পায়।
৩৫৯৮। জীবনে চলার পথে কর্তব্য কর্মের সাথে বিরোধ উপস্থিত হলে, আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে , আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব কর্তব্যের প্রতি অবিচল থাকা। যারা আল্লাহ্কে ভালোবাসে, তাদের জন্য এই-ই একমাত্র বিধান। আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্য দেখাতে যেয়ে যদি তাদের পিতামাতা বা কর্তৃপক্ষ ও শাসক গোষ্ঠির অবাধ্য হতে হয় তবে তাই-ই তাদের করা কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্যতা তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা বা আবেগ অনুভূতির ফসল নয়। অপর পক্ষে তা হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য থেকে উৎসারিত, যা জীবনের সর্বোচ্চ ভালোবাসার প্রকাশ। কারণ আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা জীবনকে করে মহিমান্বিত। আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা ও কর্তব্যে আমাদের অবিচল থাকতে হবে, কারণ ” তোমাদের ও আমাদের সকলকে আল্লাহ্র নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে শেষ পর্যন্ত।” সুতারাং আমরা সর্বান্তঃকরণে আল্লাহ্ ইচ্ছা বা বিধানকে অনুসরণ করবো এবং তোমরা এমন কিছুর হুকুম দেবে না যা আল্লাহ্র ইচ্ছার বিপরীত হবে।
৩৫৯৯। আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যের সাথে যখন বিরোধ উপস্থিত হয়, সাধারণ মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ জাগতিক মান-সম্মান, বিষয়-বুদ্ধি, স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন ইত্যাদির দ্বারা পরিচালিত হয়ে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে। সে এসব জাগতিক ব্যাপারকে আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যের উপরে স্থান দিয়ে থাকে। পৃথিবীর জীবনই শেষ কথা নয়। মৃত্যুর পরে শেষ বিচারের দিনে প্রতিটি আত্মাকে তাঁর প্রতিটি কাজ, মূল্যবোধ , কাজের নিয়ত প্রভৃতি সম্বন্ধে প্রকৃত সত্যের মুখোমুখি করা হবে। আমরা পার্থিব জীবনের সকল ব্যাপারে মর্মার্থ ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সমর্থ হব, যাদের আমরা ভালোবাসি যেমন : পিতা-মাতা, আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্য কর্মের জন্য তাদের অবাধ্য হওয়া ,আবার একই সাথে তাদের ভালোবাসা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। আল্লাহ্র হুকুম আমাদের জন্য পরীক্ষা বৈকি। পৃথিবীতে এভাবেই আমাদের চরিত্রের প্রকৃতিগত ধর্ম আল্লাহ্ পরীক্ষা করে থাকেন।