1 of 3

036.047

যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় কর। তখন কাফেররা মুমিনগণকে বলে, ইচ্ছা করলেই আল্লাহ যাকে খাওয়াতে পারতেন, আমরা তাকে কেন খাওয়াব? তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত রয়েছ।
And when they are told, “Spend ye of (the bounties) with which Allah has provided you,” the Unbelievers say to those who believe: “Shall we then feed those whom, if Allah had so willed, He would have fed, (Himself)?- Ye are in nothing but manifest error.”

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنفِقُوا مِمَّا رَزَقَكُمْ اللَّهُ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنُطْعِمُ مَن لَّوْ يَشَاء اللَّهُ أَطْعَمَهُ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
Wa-itha qeela lahum anfiqoo mimma razaqakumu Allahu qala allatheena kafaroo lillatheena amanoo anutAAimu man law yashao Allahu atAAamahu in antum illa fee dalalin mubeenin

YUSUFALI: And when they are told, “Spend ye of (the bounties) with which Allah has provided you,” the Unbelievers say to those who believe: “Shall we then feed those whom, if Allah had so willed, He would have fed, (Himself)?- Ye are in nothing but manifest error.”
PICKTHAL: And when it is said unto them: Spend of that wherewith Allah hath provided you, those who disbelieve say unto those who believe: Shall we feed those whom Allah, if He willed, would feed? Ye are in naught else than error manifest.
SHAKIR: And when it is said to them: Spend out of what Allah has given you, those who disbelieve say to those who believe: Shall we feed him whom, if Allah please, He could feed? You are in naught but clear error.
KHALIFA: When they are told, “Give from GOD’s provisions to you,” those who disbelieve say to those who believe, “Why should we give to those whom GOD could feed, if He so willed? You are really far astray.”

৪৭। এবং তাদের বল হয়, ” আল্লাহ্‌ তোমাদের যে [ জীবনোপকরণ ] দান করেছেন ৩৯৯৪, তা থেকে ব্যয় কর।” অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের বলে, ” যাকে আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে খাওয়াতে পারতেন , আমরা কি তাকে খাওয়াবো ? ৩৯৯৫। তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।”

৩৯৯৪। ইসলাম ধর্ম শুধুমাত্র ব্যক্তিগত এবাদতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ব্যক্তিগত এবাদত এবং অপরের জন্য কল্যাণ দান এই দুয়ের সমষ্টিই হচ্ছে ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা। যারা বিশ্বাসী বা পূণ্যাত্মা ব্যক্তি তারা দানে হবেন অকৃপণ। এই দান শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। “জীবনোপকরণ ” অর্থাৎ আল্লাহ্‌ যাকে যে নেয়ামত দান করেছেন যথাঃ অর্থ, সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপ্রত্তি ,জ্ঞান-প্রজ্ঞা,মেধা, প্রতিভা ইত্যাদি যার যে প্রকৃতিগত সম্পদ রয়েছে তাই আল্লাহ্‌ সৃষ্টির সেবায় ব্যয় করতে বলা হয়েছে ,যেনো পৃথিবী আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। কিন্তু পূণ্যাত্মাদের কাফেরদের প্রতি দানের আবেদনের প্রেক্ষিতে কাফেররা যে বিদ্রূপ ও ব্যঙ্গক্তি করে তাই এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। লক্ষণীয়, এখানে কাফের বা অবিশ্বাসী তাদেরই বলা হয়েছে যারা অত্যন্ত স্বার্থপর। ব্যক্তিগত স্বার্থের বাইরে যারা সমষ্টিগত স্বার্থের কথা চিন্তা করতে পারে না। যারা শুধুমাত্র নিজস্ব স্বার্থ ও সুখের জন্য ব্যস্ত ,তারা কাফের সমতুল্য। প্রতিটি মুসলমানের জন্য এই উপদেশ অনুধাবনযোগ্য।

৩৯৯৫। স্বার্থপর ব্যক্তিরা নিজস্ব স্বার্থের চিন্তায় সর্বদা ব্যস্ত থাকে। তাদের হৃদয় স্বার্থ চিন্তায় এত পরিপূর্ণ থাকে যে, তারা উদ্ধত হয়ে পড়ে এবং আল্লাহ্‌র প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করে থাকে। তারা বলে , “আল্লাহ্‌ যদি তাদের , [ অভাবীদের ] কিছু না দিয়ে থাকেন, তবে আমরা কেন তাদের দেবো ? ” তাদের এই উক্তির দ্বারা অহংকার এবং আল্লাহ্‌র প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করা হয়। অহংকার এ জন্য যে, তারা মনে করে যে তারা বিশেষ ব্যক্তি এবং সে কারণেই আল্লাহ্‌ তাদের নেয়ামত দান করেছেন। যোগ্যতার ভিত্তিতে তারা এসব নেয়ামতের হক্‌দার। তারা আরও মনে করে যে, আল্লাহ্‌র অবিবেচনার কারণেই অভাবগ্রস্থদের দুর্ভাগ্য – এখানে তারা আল্লাহ্‌র ন্যায়নিষ্ঠতার প্রতি ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে। এ ভাবেই তারা আল্লাহ্‌র নিন্দায় অগ্রবর্তী ভূমিকা গ্রহণ করে যা তাদের অহংকার ও গর্ব থেকে উৎপত্তি। উপরন্তু তারা মোমেনদের দোষারোপ করে যে, ” তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছো।” তাদের ধারণা মোমেনদের জীবন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভুল। এ সব লোক পার্থিব জীবন সম্বন্ধে এত অন্ধ থাকে যে, পরলোকের কথা তাদের অন্তরে কোনও রেখাপাতই করে না। তারা ভুলে যায় যে, এই জীবন পরলোকের অনন্ত জীবনের জন্য শিক্ষানবীশ কাল মাত্র এবং সে তুলনায় ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীতে মানুষকে প্রেরণ করা হয়েছে পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য। পৃথিবীতে আল্লাহ্‌ তাদের বিভিন্ন নেয়ামতে ধন্য করেছেন যার কিছুই তাদের নিজস্ব নয়। এগুলি সবই তাদের জন্য আল্লাহ্‌র আমানত। এ সব আমানতের জন্য পরলোকে আল্লাহ্‌র নিকট জবাবদিহি করতে হবে। আর এই জবাবদিহিতার মানদন্ডেই তার বিচার হবে এবং বেহেশত বা দোযখ তার জন্য নির্ধারিত হবে। সুতারাং যারা পৃথিবীতে আল্লাহ্‌র কম নেয়ামত প্রাপ্ত [ অর্থ, সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি, মেধা, প্রতিভা ইত্যাদি ] তারা একদিক থেকে ভাগ্যবান বৈকি। কারণ পৃথিবীতে আধিক্যহীন ও পরিমিত জীবন যাপন করার ফলে তারা হন বিনয়ী , ধৈর্য্যশীল, আত্মসংযমী এবং ক্ষণস্থায়ী জীবনের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণে সক্ষম। সংযমী জীবন যাপন তাদের প্রকৃত মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়। সম্পদের আধিক্য তাদের দৃষ্টি ,মন ও অনুভবকে আচ্ছন্ন করতে পারে না।