030.028

আল্লাহ তোমাদের জন্যে তোমাদেরই মধ্য থেকে একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেনঃ তোমাদের আমি যে রুযী দিয়েছি, তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীরা কি তাতে তোমাদের সমান সমান অংশীদার? তোমরা কি তাদেরকে সেরূপ ভয় কর, যেরূপ নিজেদের লোককে ভয় কর? এমনিভাবে আমি সমঝদার সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করি।
He sets forth for you a parable from your ownselves, – Do you have partners among those whom your right hands possess (i.e your slaves) to share as equals in the wealth We have bestowed on you? Whom you fear as you fear each other? Thus do We explain the signs in detail to a people who have sense.

ضَرَبَ لَكُم مَّثَلًا مِنْ أَنفُسِكُمْ هَل لَّكُم مِّن مَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُم مِّن شُرَكَاء فِي مَا رَزَقْنَاكُمْ فَأَنتُمْ فِيهِ سَوَاء تَخَافُونَهُمْ كَخِيفَتِكُمْ أَنفُسَكُمْ كَذَلِكَ نُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
Daraba lakum mathalan min anfusikum hal lakum mimma malakat aymanukum min shurakaa fee ma razaqnakum faantum feehi sawaon takhafoonahum kakheefatikum anfusakum kathalika nufassilu al-ayati liqawmin yaAAqiloona

YUSUFALI: He does propound to you a similitude from your own (experience): do ye have partners among those whom your right hands possess, to share as equals in the wealth We have bestowed on you? Do ye fear them as ye fear each other? Thus do we explain the Signs in detail to a people that understand.
PICKTHAL: He coineth for you a similitude of yourselves. Have ye, from among those whom your right hands possess, partners in the wealth We have bestowed upon you, equal with you in respect thereof, so that ye fear them as ye fear each other (that ye ascribe unto Us partners out of that which We created)? Thus We display the revelations for people who have sense.
SHAKIR: He sets forth to you a parable relating to yourselves: Have you among those whom your right hands possess partners in what We have given you for sustenance, so that with respect to it you are alike; you fear them as you fear each other? Thus do We make the communications distinct for a people who understand.
KHALIFA: He cites for you herein an example from among yourselves: Do you ever elevate your servants or subordinates to the level where they rival you, and to the point that you pay them as much allegiance as is being paid to you? We thus explain the revelations for people who understand.

রুকু – ৪

২৮। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের [ অভিজ্ঞতা ] থেকে দৃষ্টান্ত , বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছেন ৩৫৩৫। তোমাদের আমি যে ধন-সম্পদ দিয়েছি , তোমাদের অধিকারভূক্ত দাস-দাসীগণের কেহ কি তাতে সমান অংশীদার ৩৫৩৬ ? তোমরা কি তাদের সেরূপ ভয় কর যেরূপ তোমরা পরস্পর পরস্পরকে কর ৩৫৩৭ ? এরূপেই আমি যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য নিদর্শন সমূহ বিশবদভাবে ব্যাখ্যা করে থাকি ৩৫৩৮।

৩৫৩৫। এই আয়াতের রূপকের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ আমাদের অন্তরে নিজস্ব সংস্কৃতি ও জীবন যাত্রার উর্দ্ধে অবস্থিত শক্তির অনুধাবনের চেষ্টা করতে বলেছেন। আল্লাহ্‌র অবস্থান এবং শক্তি আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষের এতই উর্দ্ধে যে, আপ্রাণ চেষ্টা করেও আমরা তা সম্পূর্ণ অনুধাবনে সক্ষম হব না। কারণ তা আমাদের সকল অনুমান ও বোধশক্তিকে অতিক্রম করে যায়। আমাদের চিন্তার সর্বোচ্চ অধিষ্ঠানের বহু উর্দ্ধে তাঁর অবস্থান , সর্বোচ্চ জ্ঞানের বহুগুণ তাঁর জ্ঞান।

৩৫৩৬। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌ – যার জ্ঞান, ক্ষমতা আমাদের উপলব্ধি করা কখনও সম্ভব নয় – কারণ তাঁর অবস্থান আমাদের অবস্থানের বহু উর্দ্ধে। এখানে যে উপমার সাহায্যে তার অবস্থানকে তুলে ধরা হয়েছে – তা হচ্ছে প্রভু কি কখনও নিজেকে তার ক্রীতদাস দাসীদের সমকক্ষ মনে করে ? তার ধন-সম্পদ ও ক্ষমতার সামান্যতম অংশীদরিত্বের অধিকার দান করে ? যদিও তার সকল ধন-সম্পদ ও ক্ষমতা তার নিজস্ব নয়, সবই আল্লাহ্‌ তাকে দান করেছেন। কেউ ধনী কেউ গরীব বা ক্রীতদাস এ সকলই দৈব ঘটনা, এটা কারও ইচ্ছাধীন নয়। তবুও মানব সম্প্রদায় নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ করে। অতএব চিন্তা কর ফেরেশতা , মানব ও জ্বিনসহ সমগ্র সৃষ্ট জগত আল্লাহ্‌র সৃজিত ও তাঁরই দাস বা গোলাম। সুতারাং আল্লাহ্‌র সৃজিত জিনিষ আল্লাহ্‌র সমকক্ষ অথবা তাঁর শরীক কিরূপে বিশ্বাস করে ?

৩৫৩৭। মানুষ সমাজ বদ্ধ জীব। কিন্তু এই সমাজে যে মানুষ সবল সে সর্বদা দুর্বলের উপরে অত্যাচার করতে উদ্যত। যদি সমাজে এদের দমনের কোনও বন্দোবস্ত না থাকতো তবে সমাজ মনুষ্য বাসের অযোগ্যরূপ ধারণ করতো। সমাজের শৃঙ্খলা ও শান্তিকে সঠিক রাখার জন্য মানুষ সামাজিক কাঠামোকে এভাবে বিন্যস্ত করেছে যে, রাজা বা প্রজাতন্ত্র প্রধান, সমাজে অত্যাচারী ও অন্যায়কারীর প্রতিরোধ করেন এবং সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারীকে শ্রদ্ধা করবে, মেনে চলবে, এবং শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্য তাঁর কর্তৃত্বের উপরে নির্ভরশীল হবে। সমাজে মানুষ শুধু যে ক্ষমতা ও কতৃর্ত্বর অধিকারীকে ভয় পায় তাই নয়, সে তার সমকক্ষদেরও সম্মান করে, তাদের মতামত ও বদনামের ভয় করে। কিন্তু তারা তাদের ক্রীতদাস-দাসীদের বা নির্ভরশীলদের মতামতকে গ্রাহ্য করে না বা ভয়ও পায় না। এই উপমার সাহায্যে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে, মানুষ তো সর্বোতভাবে সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভরশীল। এই বিশাল বিশ্ব ভূবনের মালিক একমাত্র আল্লাহ্‌ তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তিনি কারও উপরে নির্ভরশীল নন। সুতারাং কিভাবে মানুষ মহান আল্লাহ্‌র সঙ্গে তাঁর কোনও সৃষ্টির কোন ব্যাপারে শরীকানা করে ? যেখানে সৃষ্টির প্রতিটি বস্তুই আল্লাহ্‌র সৃষ্টি, তাঁর অধীনে এবং একমাত্র তাঁরই উপরে নির্ভরশীল ? আমাদের উচিত আল্লাহ্‌র বিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা ও তা মেনে চলা। কারণ আল্লাহ্‌ ভীতিই হচ্ছে সকল জ্ঞানের প্রারম্ভ বা উৎস এবং “যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য নিদর্শনাবলী। ”

৩৫৩৮। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৭ : ৩২, ১৭৪ ] প্রভৃতি।