1 of 3

০২১.০৭৯

অতঃপর আমি সুলায়মানকে সে ফায়সালা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম এবং আমি উভয়কে প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দিয়েছিলাম। আমি পর্বত ও পক্ষীসমূহকে দাউদের অনুগত করে দিয়েছিলাম; তারা আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করত। এই সমস্ত আমিই করেছিলাম।
And We made Sulaimân (Solomon) to understand (the case), and to each of them We gave Hukman (right judgement of the affairs and Prophethood) and knowledge. And We subjected the mountains and the birds to glorify Our Praises along with Dawûd (David), And it was We Who were the doers (of all these things).

فَفَهَّمْنَاهَا سُلَيْمَانَ وَكُلًّا آتَيْنَا حُكْمًا وَعِلْمًا وَسَخَّرْنَا مَعَ دَاوُودَ الْجِبَالَ يُسَبِّحْنَ وَالطَّيْرَ وَكُنَّا فَاعِلِينَ
Fafahhamnaha sulaymana wakullan atayna hukman waAAilman wasakhkharna maAAa dawooda aljibala yusabbihna waalttayra wakunna faAAileena

YUSUFALI: To Solomon We inspired the (right) understanding of the matter: to each (of them) We gave Judgment and Knowledge; it was Our power that made the hills and the birds celebrate Our praises, with David: it was We Who did (all these things).
PICKTHAL: And We made Solomon to understand (the case); and unto each of them We gave judgment and knowledge. And we subdued the hills and the birds to hymn (His) praise along with David. We were the doers (thereof).
SHAKIR: So We made Sulaiman to understand it; and to each one We gave wisdom and knowledge; and We made the mountains, and the birds to celebrate Our praise with Dawood; and We were the doers.
KHALIFA: We granted Solomon the correct understanding, though we endowed both of them with wisdom and knowledge. We committed the mountains to serve David in glorifying (God), as well as the birds. This is what we did.

৭৭। এবং আমি ঐ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করেছিলাম যারা আমার নিদর্শনকে প্রত্যাখান করেছিলো। প্রকৃতপক্ষে উহারা ছিলো এক মন্দ সম্প্রদায়। সুতারাং আমি তাদের এক সাথে [ বন্যাতে ] নিমজ্জিত করলাম।

৭৮। এবং স্মরণ কর দাউদ ও সুলাইমানকে , যখন তারা বিচার করছিলো কোন সম্প্রদায়ের মেষ পাল সম্বন্ধে , যেগুলি রাত্রিকালে [ অপরের ] শষ্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেছিলো। আমি তাদের বিচার কার্য প্রত্যক্ষ করেছিলাম।

৭৯। সুলাইমানকে আমি বিষয়টির [সঠিক ] মীমাংসায় অনুপ্রাণীত করেছিলাম ২৭৩২। তাদের [ উভয়কে ] আমি প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম। পাহাড় ও বিহঙ্গকুল দাউদের সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো, তা ছিলো আমারই ক্ষমতা ২৭৩৩। [ এ সকল ] আমিই কার্যকর করেছিলাম।

২৭৩২। এক মেষ পালকের কয়েকটি মেষ রাত্রিকালে পার্শ্বের কৃষকের [ আঙ্গুর ] ক্ষেতে প্রবেশ করে এবং তার ক্ষেতের চারা গাছগুলি খেয়ে ফেলে। সম্ভবতঃ সারা বছরের ফসলই এভাবে নষ্ট হয়ে যায়। সে সময়ে দাউদ নবী রাজা ছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক যখন বিচার প্রার্থী রূপে দাউদ নবীর কাছে বিচার প্রার্থনা করলো , দাউদ ক্ষতিপূরণ স্বরূপ মেষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষককে প্রদান করার রায় দেন। সে সময়ে দাউদের পুত্র সোলায়মান ছিলেন এগার বছরের বালক মাত্র। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ ব্যাপারটির রায় ভিন্নভাবে দিলেন। যা হবে ন্যায় বিচার। ক্ষতিগ্রস্থের ক্ষতি ছিলো সাময়িক যা এক বছরের ফসল। যদি সে জমি হারাতো তবে তা হতো স্থায়ী ক্ষতি। সুতারাং সাময়িক ক্ষতির জন্য মেষ পালকের মেষগুলিকে স্থায়ী ভাবে হারানো ন্যায় বিচার নয়। হযরত সোলায়মান প্রস্তাব ছিলো নিম্ন রূপ : কৃষকের নিকট মেষপাল থাকবে, সে উহার দুগ্ধ পান করবে , উল ব্যবহার করবে এবং মেষ পাল যে নূতন বাচ্চা জন্ম দেবে তার অধিকার লাভ করবে। আর মেষের মালিক ক্ষেতটিতে পানি দেবে, ক্ষেতের চারা গাছের যত্ন নেবে। ক্ষেতটি পূর্বের অবস্থা লাভ করলে সে মেষগুলি ফেরত পাবে। দাউদ নবী নিজের রায় নাকচ করে পুত্রের রায় গ্রহণ করলেন। দাউদের যোগ্যতা হচ্ছে , তিনি ন্যায় ও সত্যকে তৎক্ষণাত চিনতে ও অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, যদিও প্রস্তাবটি এসেছিলো মাত্র এগারো বৎসরের বালকের নিকট থেকে। সোলায়মানের যোগ্যতা হচ্ছে তিনি পার্থক্য করতে পেরেছিলেন স্থায়ী আয়ের উৎস এবং অস্থায়ী আয়ের মধ্যে। যদিও তিনি ছিলেন বালকমাত্র। কিন্তু তিনি তাঁর ন্যায় প্রস্তাবকে পিতার নিকট উপস্থাপন করতে দ্বিধা বোধ করেন নাই। কিন্তু এই দ্বিবিধ ক্ষেত্রেই সমস্ত প্রশংসার দাবীদার আল্লাহ্‌। তিনিই বান্দার অন্তরে ন্যায়নীতি অনুধাবনের ক্ষমতা দান করেন। তিনি সকল বিষয়ের সাক্ষী, তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র।

২৭৩৩। [ ১৭ : ৪৪; ৫৭ : ১; ১৬ : ৪৮ – ৫০ ] এই আয়াতগুলির মাধ্যমে বলা হয়েছে আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে , সকলেই আল্লাহ্‌র গুণগান করে। আয়াত [ ১৩ : ১৩ ] তে বলা হয়েছে যে, “বজ্র নির্ঘোষ ও ফিরিশতাগণ সভয়ে তাঁহার সপ্রশংস মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে।” সারা বিশ্বব্রহ্মান্ড আল্লাহ্‌র প্রশংসায় মগ্ন। দাউদ নবীর ধর্মসংগীতে আল্লাহ্‌র প্রশংসা ব্যপকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দাউদ নবী যখন গান গাইতেন তাঁর সাথে বিশ্ব প্রকৃতিও যোগদান করতো। আকাশ , বাতাস , পাহাড় , প্রকৃতি তাঁর সঙ্গীতের প্রতিধ্বনি করতো। দেখুন আয়াত সমূহ [ ৩৪ : ১০ এবং ৩৮ : ১৮ – ১৯ ] যেখানে বলা হয়েছে দাউদ নবীর সাথে তাঁর ধর্ম সংগীতে বিশ্ব প্রকৃতিও যোগ দান করতো।

মন্তব্য : এই আয়াত থেকে এই কথাই প্রতীয়মান হয় যে, সঙ্গীতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র প্রশংসা গীতি নিষিদ্ধ নয়। কারণ সঙ্গীতের এই বিশেষ ক্ষমতা দাউদ নবীকে আল্লাহ্‌ দান করেছিলেন। সঙ্গীত মনের এক বিশেষ ক্ষমতা [ Faculty of mind]। সংগীত মানুষের মনে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে বিধায় কোরাণ শরীফ মানুষ সংগীতের সুরে পাঠ করে , আজান সুললিত সুরে ধ্বনিত হয়। তবে সংগীতের খারাপ ব্যবহার অবশ্যই খারাপ।