০২১.০৬৯

আমি বললামঃ হে অগ্নি, তুমি ইব্রাহীমের উপর শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।
We (Allâh) said: ”O fire! Be you coolness and safety for Ibrâhim (Abraham)!”

قُلْنَا يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَى إِبْرَاهِيمَ
Qulna ya naru koonee bardan wasalaman AAala ibraheema

YUSUFALI: We said, “O Fire! be thou cool, and (a means of) safety for Abraham!”
PICKTHAL: We said: O fire, be coolness and peace for Abraham,
SHAKIR: We said: O fire! be a comfort and peace to Ibrahim;
KHALIFA: We said, “O fire, be cool and safe for Abraham.”

৬৮। তারা বলেছিলো, ” তাকে পোড়াও এবং যদি তোমরা [ প্রকৃতই কিছু ] করতে চাও, তবে তোমাদের দেবতাদের রক্ষা কর। ”

৬৯। আমি বললাম, ” হে আগুন ২৭২৪। তুমি ইব্রাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপত্তার [ কারণ ] হয়ে যাও” ২৭২৫।

২৭২৪। আগুনের ধর্মই হচ্ছে উত্তপ্ত হয়ে কোনও জিনিষকে পুড়িয়ে ফেলা। আল্লাহ্‌র হুকুমে সেই আগুন তার ধর্ম হারিয়ে শীতল হয়ে যায়।

২৭২৫। হযরত ইব্রাহীমকে কোথায় আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো এবং কোথায় তাঁর জীবন প্রথম শুরু হয় সে সম্বন্ধে ধারণা করার প্রয়াস হোক। পারস্য উপসাগর থেকে একশত মাইল দূরে ইউফ্রেটিস নদীর নিম্ন অববাহিকায় চালদিসের [ Chaldees ] উর নামক স্থানে হযরত ইব্রাহীম জন্ম গ্রহণ করেন। এই স্থানটি হচ্ছে প্রাচীন মানব সভ্যতার ক্রোড়ভূমি বা আদি ভূমি। সেই প্রাচীন যুগেই তারা জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শীতা লাভ করে। তারা সূর্য , চন্দ্র এবং তারার পূঁজা করতো ধর্ম হিসেবে। হযরত ইব্রাহীম জীবনের শুরুতেই এই মিথ্যা উপাস্যের বিরোধিতা করেন এবং তাঁর বক্তব্যকে তুলে ধরা হয়েছে সূরা [ ৬ : ৭৪ – ৮২ ] আয়াতে। ইব্রাহীমের সম্প্রদায় মন্দিরে পূঁজা করতো। সম্ভবতঃ মূর্তিগুলি স্বর্গীয় বস্তুর প্রতীক ছিলো। ইব্রাহীম যখন মূর্তিগুলি ভাঙ্গেন তখন তিনি ছিলেন একজন তরুণ মাত্র [ ২১ : ৬০ ]। এই ঘটনা ছিলো তাঁর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়। এই ঘটনার পরে তাঁকে বিদ্রোহী বলে চিহ্নিত করা হয়। সম্ভবতঃ এই ঘটনার পরে কয়েক বৎসর অতিবাহিত হয় এবং তার পরে তাঁকে বিদ্রোহী হিসেবে আগুনে নিক্ষেপ করা হয় [ ২১ : ৬৮ – ৬৯ ]। ঐতিহ্যগত ভাবে যে রাজা ইব্রাহীমকে আগুনে নিক্ষেপ করেন তাকে নমরূদ নামে অভিহিত করা হয় , যার সম্পর্কে আছে [ ১১ : ৬৯ ] আয়াতের টিকা ১৫৬৫ তে। নমরূদের পরিচয় সম্বন্ধে জানা যায় যে, তার রাজধানী ছিলো নিনেভার [ বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর নিকট ] নিকটবর্তী আসেরিয়াতে [ Assyria ]। যদি তাই হয় তবে তার রাজত্ব সমগ্র মেসোপটেমিয়াতে বিস্তৃত ছিলো। কারণ হযরত ইব্রাহীমের জন্ম স্থান থেকে আসেরিয়ার দূরত্ব সমগ্র মেসোপটেমিয়ার মালভূমি। অথবা হযরত ইব্রাহীম বেবীলনের মধ্য দিয়ে উত্তরে পরিভ্রমণ করেন নমরূদের রাজধানী আসেরিয়া পর্যন্ত। হযরত ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে শত্রুরা বহু পরিকল্পনা করে [ ২১ : ৭০ ] , কিন্তু আল্লাহ্‌র করুণা সর্বদা তাকে রক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি যখন যৌবন প্রাপ্ত হন, তিনি তাঁর পিতার সাথে সর্ম্পক ছেদ করেন। এই ঘটনার বর্ণনা আছে আয়াতে [ ১৯ : ৪১ – ৪৮ ]। তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের দেশ ত্যাগ করে বিদেশে যাত্রা করেন। এই যাত্রাতে তিনি সিরিয়ার মরুভূমিকে পবিহার করে, ক্যানানের [ Canaan ] দক্ষিণে আরাম [Aram ] নামক সিরিয়ার উর্বর স্থানে গমন করেন। এখানেই আয়াতের [ ১১ : ৬৯ – ৭৬ ] বর্ণিত ঘটনার সূত্রপাত হয়। সম্ভবতঃ এই ঘটনার কয়েক বৎসর পরে তিনি ইসমাঈল সহযোগে কাবা ঘর নির্মাণ করেন [ ২ : ১২৪ -১২৯ ]। এবং এ সময়ে তাঁর প্রার্থনার বিবরণ আছে আয়াতে [ ১৪ : ৩৫ – ৪১ ]। তাঁর মিশরে ভ্রমণের কথা অবশ্য কোরাণে উল্লেখ নাই। এর উল্লেখ আছে [ Gen xii 10] তে।