০২১.০৮৬

আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ।
And We admitted them to Our Mercy. Verily, they were of the righteous.

وَأَدْخَلْنَاهُمْ فِي رَحْمَتِنَا إِنَّهُم مِّنَ الصَّالِحِينَ
Waadkhalnahum fee rahmatina innahum mina alssaliheena

YUSUFALI: We admitted them to Our mercy: for they were of the righteous ones.
PICKTHAL: And We brought them in unto Our mercy. Lo! they are among the righteous.
SHAKIR: And We caused them to enter into Our mercy, surely they were of the good ones.
KHALIFA: We admitted them into our mercy, for they were righteous.

৮৬। আমি তাদের আমার অনুগ্রহভাজন করেছিলাম। কারণ তারা ছিলো পূণ্যাত্মা।

৮৭। এবং স্মরণ কর যুন নুন ২৭৪৪, এর কথা , যখন সে ক্রোধভরে বের হয়ে গিয়েছিলো এবং মনে করেছিলো যে, তার উপরে আমার কোন ক্ষমতা নাই। অতঃপর সে অতল অন্ধকার থেকে আর্তনাদ করেছিলো , ” তুমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তুমি পবিত্র মহান ! আমি তো পাপী।”

২৭৪৪। “যুন -নুন ” অর্থ মাছের অধিকারী বা মাছের সাথে সর্ম্পকিত ব্যক্তি। এই উপাধিটি দেয়া হয় হযরত ইউনুসকে। কারণ তাঁকে এক বিরাট মাছ [তিমি মাছ ] গিলে ফেলেছিলো। আল্লাহ্‌ তাঁকে আসেরিয়ান সম্রাজ্যের রাজধানী নিনেভাতে নবী হিসেবে পাঠান। নিনেভার জন্য দেখুন টিকা ১৪৭৮ এবং আয়াত [ ১০ : ১৮ ] এবং হযরত ইউনুসের কাহিনীর জন্য দেখুন [ ৩৭ : ১৩৯ – ১৪৯ ] আয়াত। যখন নিনেভা নগরীর বাসিন্দারা ইউনুস নবীর প্রথম সাবধান বাণীকে উপেক্ষা করলো। তিনি অধৈর্য্য হয়ে তাদের উপরে আল্লাহ্‌র গজব কামনা করলেন। কিন্তু নিনেভার অধিবাসীরা সময় থাকতেই অনুতপ্ত হয়েছিলো , এবং আল্লাহ্‌র ক্ষমা লাভে সমর্থ হয়েছিলো। কিন্তু ইতিমধ্যে ইউনুস নবী , আল্লাহ্‌ কর্তৃক প্রদত্ত কর্মে সাময়িক ভাবে দৃশ্যতঃ অকৃতকার্য হওয়ার দরুণ নিনেভাবাসীদের উপরে প্রচন্ড ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন এবং রাগে দুঃখে তিনি নগরী ত্যাগ করেন।

কিন্তু আল্লাহ্‌র নবী হিসেবে তাঁর উচিত ছিলো সেই হতাশাভরা দুঃখের দিনগুলিতেও আল্লাহ্‌র করুণার উপরে নির্ভর করে ধৈর্য্য অবলম্বন করা এবং দৃঢ় পদক্ষেপে কর্তব্যকর্মে অগ্রসর হওয়া। সাফল্যের দাবীদার একমাত্র করুণাময় আল্লাহ্‌। কারণ আল্লাহ্‌ সর্ব ক্ষমতার অধিকারী। আল্লাহ্‌-ই একমাত্র ক্ষমতাশালী নিনেভাবাসী ও তার নবীর উপরে। ইউনুস নবী নিনেভা নগরী ত্যাগ করে সমুদ্র যাত্রা করেন। কিন্তু জাহাজের নাবিকেরা তাঁকে “অপয়া” বা অশুভ কল্পনা করে তাঁকে গভীর সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। সেখানে তাঁকে এক বিরাট মাছ গিলে ফেলে। মাছের পেটের ভিতরে সেই নিচ্ছিদ্র অন্ধকারে তিনি ব্যকুলভাবে আল্লাহ্‌র সাহায্য কামনা করেন, নিজের কৃত অপরাধ স্বীকার করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে আল্লাহ্‌র হুকুম ব্যতীত তাঁর উপরে অর্পিত দায়িত্ব ত্যাগ করা এক মহা অপরাধ। ” অন্ধকার থেকে আর্তনাদ করেছিলো।” ” অন্ধকার ” শব্দটি দ্বারা রাত্রির মত অন্ধকার যা মাছের পেটের মাঝে বিদ্যমান ছিলো তা বোঝানো হয়েছে। আক্ষরিক ভাবে , আবার আত্মার অন্ধকারকেও বোঝানো হয়েছে। কারণ ইউনুস নবী এ সময়ে হতাশার অন্ধকারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। আর এই হতাশার অন্ধকার তাঁর আত্মাকে আচ্ছাদিত করে ফেলেছিলো। আল্লাহ্‌ পরম করুণাময়। তিনি তাঁকে ক্ষমা করেন। ফলে তিনি মাছের পেট থেকে অব্যহতি লাভ করেন এবং মাছ তাঁকে তীরে বমি করে ফেলে। ক্লান্ত অবসন্ন ইউনুস নবী তীরের তরুলতা দ্বারা আশ্রয় ও নিরাপত্তা লাভ করেন। অবশেষে তিনি বিপদমুক্ত হন এবং সুস্থতা লাভ করে স্বাস্থ্য ফিরে পেয়ে নিজের কর্তব্য কর্মে মনোনিবেশ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সাফল্য লাভ করেন। এ ভাবেই তিনি অনুতাপ এবং আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভরশীলতা দ্বারা হতাশা ও ব্যর্থতা থেকে মুক্তি লাভ করেন। আল্লাহ্‌ তাঁকে ক্ষমা করেন।

উপদেশ : আমাদের প্রত্যেককে আল্লাহ্‌ কিছু না কিছু কর্তব্য কর্ম দ্বারা এই পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। জীবনের কোনও অবস্থাতেই সেই কর্মকে পরিত্যাগ করার অধিকার আমাদের নাই। ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা দ্বারাই শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভ করা যায়। কারণ পরের আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছিলেন, ” আমি মুমিনদের উদ্ধার করে থাকি।”