নম্র কথা বলে দেয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা ঐ দান খয়রাত অপেক্ষা উত্তম, যার পরে কষ্ট দেয়া হয়। আল্লাহ তা’আলা সম্পদশালী, সহিঞ্চু।
Kind words and forgiving of faults are better than Sadaqah (charity) followed by injury. And Allâh is Rich (Free of all wants) and He is Most-Forbearing.
قَوْلٌ مَّعْرُوفٌ وَمَغْفِرَةٌ خَيْرٌ مِّن صَدَقَةٍ يَتْبَعُهَآ أَذًى وَاللّهُ غَنِيٌّ حَلِيمٌ
Qawlun maAAroofun wamaghfiratun khayrun min sadaqatin yatbaAAuha athan waAllahu ghaniyyun haleemun
YUSUFALI: Kind words and the covering of faults are better than charity followed by injury. Allah is free of all wants, and He is Most-Forbearing.
PICKTHAL: A kind word with forgiveness is better than almsgiving followed by injury. Allah is Absolute, Clement.
SHAKIR: Kind speech and forgiveness is better than charity followed by injury; and Allah is Self-sufficient, Forbearing.
KHALIFA: Kind words and compassion are better than a charity that is followed by insult. GOD is Rich, Clement.
রুকু – ৩৬
২৬১। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজ; যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে, এবং প্রত্যেক শীষে আছে একশত শস্যদানা। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ্ সকলের প্রতি যত্নশীল এবং তিনি সব কিছু জানেন।
২৬২। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে, এবং তাদের উদারতার কথা [দান গ্রহীতাকে] স্মরণ করিয়ে দেয় না বা ক্লেশ দেয় না, তাদের পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর নিকটে। তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না।
২৬৩। যে দানের পরে ক্লেশ দেয়া হয়, তা অপেক্ষা সান্ত্বনা বাণী ও ক্ষমা প্রদর্শন শ্রেয় ৩০৯। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত এবং তিনি পরম সহনশীল।
৩০৯। আয়াতে [২ : ২৬২ – ২৬৪] দানের মান দন্ড বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে-
(১) যাই-ই দান করা হোক না কেন তা হালাল রুজী হতে হবে, এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহ্র রাস্তায় [অর্থাৎ তার সৃষ্ট জীবের সেবায়] তা ব্যয় করতে হবে। [২:২৬৭]
(২) দান করে দানের প্রতিদান চাওয়া উচিত নয়, গ্রহীতার কাছ থেকে। দানের প্রতিদান এ পৃথিবীতে চাওয়া অনুচিত। প্রতিদান শুধুমাত্র চাওয়া যেতে পারে সর্বশক্তিমানের কাছে; যার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য দান করা।
(৩) দানের পরে গ্রহীতার অনুগ্রহ প্রকাশ না করা এবং যাকে দান করা হলো তাকে কষ্ট না দেওয়া বা দানের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে মানসিক কষ্ট বা লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ যাকে দান করা হবে তার সাথে এমন কোন ব্যবহার করা যাবে না যাতে সে নিজেকে ঘৃণিত ও হেয় অনুভব করে বা মানসিক কষ্ট পায়।
(৪) দান করতে হবে বিনয়ের সাথে। নাম যশঃ ইত্যাদির আশায় বা কোনও গোপন উদ্দেশ্য সিদ্ধির [যেমন ভোট পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের লোক সৎ কাজ বা দান করে] আশায় দান করাকে আল্লাহ্র চোখে দান বলে গণ্য হবে না। এমন কোনও দম্ভ বা অহংকার যদি দাতার মনে থাকে যে সে বিপদের সময়ে গ্রহীতার উপকার করেছে তাতেও দাতার দানের কোনও মূল্য থাকবে না। কারণ কাকে দান করলাম বা কী দান করলাম সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে, অহংকার ও দম্ভমুক্তভাবে, বিনয়ের সাথে দান করাই হচ্ছে আসল কথা। মনে এই চিন্তা রাখা যে আমরা যাই দান করি না কেন তা শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। আমরা আল্লাহকেই দান করছি; তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। বিশ্ব প্রতিপালক, সর্বশক্তিমানকে ক্ষুদ্র মানুষ যখন দান করবে, তখন কতটা বিনয়ের সাথে এবং অহংকার মুক্ত মানসিকতা থাকতে হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ তিনি তো সর্বজ্ঞ, আমাদের ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র চিন্তাধারাও তার অজ্ঞাত নয়। নিরহংকার ও বিনয়ী চিত্তের দান আল্লাহ্ গ্রহণ করেন ও সন্তুষ্ট হন। দানের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ।
দানের মূল নির্যাস হচ্ছে; গ্রহীতার দোষত্রুটি ক্ষমা করে, দয়ার সাথে, বিনয়ের সাথে সাহায্যের হাত প্রসারিত করা। দুর্ব্যবহারের সাথে দান করা অপেক্ষা ভালো ব্যবহারের সাথে প্রত্যাখ্যান করা শ্রেয়। দানে কোনও প্রতিদান চাওয়া চলবে না গ্রহীতার কাছ থেকে। একমাত্র আল্লাহ্র কাছে প্রতিদান চাওয়া যেতে পারে। আল্লাহ্ সম্পদশালী ও সহিষ্ণু। তিনি কারও অর্থের বা সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যয় করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে। এই পৃথিবীতে মানব সন্তান প্রতিমূহুর্তে নানা প্রলোভনের শিকার। আমাদের অন্তরের লুকায়িত পাপ, বা লোভ-লালসা বাইরের দৃষ্টিগোচর না হতে পারে, কিন্তু সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ সবই জানেন। এই দোষত্রুটির উর্ধ্বে ওঠা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। পরম করুণাময় আল্লাহ্ আমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করেন বলেই তার দরবারে আমাদের কাজের পুরস্কারের আশা করি। আমরা ক্ষুদ্র ও নগণ্য এবং সর্বোপরি আমাদের আশা-আকাঙ্খা বা কর্মের নিয়ত কখনই সম্পূর্ণ পাপমুক্ত হতে পারে না। কারণ মানুষ অত্যন্ত দুর্বলচিত্ত। তাই আল্লাহ্র রহমতই আমাদের ভরসা।