1 of 3

002.031

আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
And He taught Adam all the names (of everything) , then He showed them to the angels and said, ”Tell Me the names of these if you are truthful.”

وَعَلَّمَ آدَمَ الأَسْمَاء كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلاَئِكَةِ فَقَالَ أَنبِئُونِي بِأَسْمَاء هَـؤُلاء إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
WaAAallama adama al-asmaa kullaha thumma AAaradahum AAala almala-ikati faqala anbi-oonee bi-asma-i haola-i in kuntum sadiqeena

YUSUFALI: And He taught Adam the names of all things; then He placed them before the angels, and said: “Tell me the names of these if ye are right.”
PICKTHAL: And He taught Adam all the names, then showed them to the angels, saying: Inform Me of the names of these, if ye are truthful.
SHAKIR: And He taught Adam all the names, then presented them to the angels; then He said: Tell me the names of those if you are right.
KHALIFA: He taught Adam all the names then presented them to the angels, saying, “Give me the names of these, if you are right.”

৩১। আর তিনি আদমকে সকল জিনিসের প্রকৃতি শিক্ষা দেন ৪৮। অতঃপর তিনি সেগুলি ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করেন এবং বলেন, ‘এগুলির প্রকৃতি সম্বন্ধে আমাকে বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’

৪৮। এই আয়াতের তর্জমা এরকম দাঁড়ায় যে, ‘বস্তুর প্রকৃতি শিক্ষা দেন’ অনুবাদেকরা একে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে বস্তুসামগ্রীর নাম, এদের গুণাগুণ ও লক্ষনাদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভের যোগ্যতা। অর্থাৎ একমাত্র আদমই সেই বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যার সাহায্যে মানুষ জড় প্রকৃতিকে অতিক্রম করে তার প্রকৃত সত্তাকে উদ্‌ঘাটনে সক্ষম হবে। এ যোগ্যতা কেবলমাত্র আদম সন্তানকেই দেয়া হয়েছে। ফেরেশতাদের স্বভাব প্রকৃতি মোটেই এর উপযোগী নয়। এসব কিছুই আদমকে তার স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ধর্ম হিসেবেই শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বাহ্যিকভাবে শিক্ষাদানের কোনও আয়োজনই করা হয় নাই। বরং আদম (আঃ) কে সৃষ্টির প্রারম্ভিক পর্যায়ে এসব জ্ঞান স্বভাবগত করেই দেওয়া হয়েছিল। যেমন-সদ্যজাত শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই মায়ের দুধ পান করতে এবং হাঁসের ছানা সাঁতার কাটতে জানে। এ ব্যাপারে কোনও বাহ্যিক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয় না। হযরত আদমের (আঃ) জন্য জন্মগতভাবে যে বিশেষ গুণাবলী ছিল, তা হচ্ছে তার আবেগ ও অনুভূতি, যার সাহায্যে তিনি বস্তু জগতের উর্ধ্বেও চিন্তা করতে সক্ষম ছিলেন। সমস্ত আয়াতটাই এক বিশেষ অর্থবোধক। যে বিশেষ চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য আদম সন্তানকে ফেরেশতাদের থেকে পৃথক এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে তা হচ্ছে – ১) মানুষ ভালবাসতে পারে, ২) নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগে কোনও কাজের পরিকল্পনা করতে পারে, ৩) ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে, ফলে আল্লাহ্‌র প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখে। মানুষের এই বিশেষ গুণাবলীর জন্যই মানুষ স্রষ্টাকে না দেখেও নিজের সত্ত্বার ভিতরে স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। সে বিশ্বাস করে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌ আদম সন্তানকে ভালবাসেন। তিনি সর্বজ্ঞ। তিনি সব দেখেন, সব শুনেন। মানুষ তার অন্তরের অন্তঃস্থলের কোনও চিন্তা, কোনও কাজ, কোনও অনুভব, কোনও কিছু তাঁর কাছে গোপন করতে পারে না। সর্বশক্তিমানের উপর বিশ্বাস, তাঁর প্রতি আনুগত্য, ভালবাসা, সবই জন্মলাভ করে মানুষের সেই বিশেষ চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য, আর তা হচ্ছে আবেগ ও অনুভূতি (Feeling)। এই বিশেষ গুণটি অর্থাৎ আবেগ ও অনুভূতি শুধু যে ফেরেশতাদের মধ্যেই অনুপস্থিত তাই নয়, সমগ্র বিশ্ব চরাচরে মানুষ বাদে সমস্ত প্রাণীকূলের মধ্যেও অনুপস্থিত।