1 of 3

002.022

যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান।
Who has made the earth a resting place for you, and the sky as a canopy, and sent down water (rain) from the sky and brought forth therewith fruits as a provision for you. Then do not set up rivals unto Allâh (in worship) while you know (that He Alone has the right to be worshipped).

الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الأَرْضَ فِرَاشاً وَالسَّمَاء بِنَاء وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقاً لَّكُمْ فَلاَ تَجْعَلُواْ لِلّهِ أَندَاداً وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
Allathee jaAAala lakumu al-arda firashan waalssamaa binaan waanzala mina alssama-i maan faakhraja bihi mina alththamarati rizqan lakum fala tajAAaloo lillahi andadan waantum taAAlamoona

YUSUFALI: Who has made the earth your couch, and the heavens your canopy; and sent down rain from the heavens; and brought forth therewith Fruits for your sustenance; then set not up rivals unto Allah when ye know (the truth).
PICKTHAL: Who hath appointed the earth a resting-place for you, and the sky a canopy; and causeth water to pour down from the sky, thereby producing fruits as food for you. And do not set up rivals to Allah when ye know (better).
SHAKIR: Who made the earth a resting place for you and the heaven a canopy and (Who) sends down rain from the cloud then brings forth with it subsistence for you of the fruits; therefore do not set up rivals to Allah while you know.
KHALIFA: The One who made the earth habitable for you, and the sky a structure. He sends down from the sky water, to produce all kinds of fruits for your sustenance. You shall not set up idols to rival GOD, now that you know.

২২। যিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিছানা এবং আকাশকে ছাদ করেছেন; এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি প্রেরণ করে তা দিয়ে জীবিকার জন্য ফলমূল উৎপন্ন করেছেন। সুতরাং যখন তোমরা [সত্যকে] জানো তখন আল্লাহ্‌র প্রতিদ্বন্দী দাঁড় করিও না ৪১।

৪১। এই আয়াতে আল্লাহ্‌র মাহাত্ম্য, তাঁর অপরিসীম করুণার কথা বলা হয়েছে। আমাদের এই দেহ-মন, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক জীবন সবই স্রষ্টার দান, তারই উপরে সবই নির্ভরশীল। এই আয়াতে আকাশ ও জমিকে প্রতীক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে জমিকে বিছানা অর্থাৎ পার্থিব আরাম-আয়েশ এবং আকাশকে ছাদ অর্থাৎ আধ্যাত্মিক জীবনের নিরাপত্তা বোঝানো হয়েছে। আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়, বৃষ্টি হচ্ছে আল্লাহ্‌র রহমতের প্রতীক। কারণ বৃষ্টির অভাবে শস্য-শ্যামল ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়। আবার বৃক্ষলতা বিহীন ভূমি বৃষ্টির পানিতে সজীবতা ধারণ করে। তাই বৃষ্টিকে এখানে প্রতীকধর্মী শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীতে যে বৃষ্টি হয় তা পৃথিবীর সজীবতার জন্য প্রয়োজন। সেই রকম আল্লাহ্‌র রহমতের বৃষ্টি আধ্যাত্মিক জগতের বিকাশ ও অন্তর্দৃষ্টি (Spiritual Insight) লাভের জন্য প্রয়োজন। ইহজগত ও পরজগতের সব কিছুই আল্লাহ্‌র উপরই নির্ভরশীল। এই সত্য জানার পর কেউ যদি অন্য কিছুকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষ মনে করে তা হবে মহাপাপ। এই সমকক্ষ মনে করার প্রবণতা আমাদের জীবনে অত্যন্ত প্রবল। এই সমকক্ষ মনে করাকেই বলা হচ্ছে আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদার করা। এটা শুধুমাত্র মূর্তি পূজার মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করলে তা হবে ভুল। শুধুমাত্র মূর্তি পূজায় আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদার করা হয় এ ধারণার বশবর্তী আমাদের অনেকেই। কিন্তু মূর্তি পূজা ছাড়াও বহু ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করতে ভালবাসি। হতে পারে আত্ম-অহংকার, আত্ম-গর্ব, সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি। একটি ছোট উদাহরণ দ্বারা এটাকে উপস্থাপন করা যায় যেমন, রত্ন পাথর ধারণ করা। বিপদ-আপদ, দুঃখ-দুর্দশা এসবের জন্য সর্বশক্তিমানের আশ্রয় প্রার্থনা না করে রত্ন পাথরের আশ্রয় গ্রহণ করা হচ্ছে সর্বশক্তিমানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করা। বিশেষ দিনে যাত্রা করা। শুভ-অশুভ দিন ধার্য করা ইত্যাদি। এর থেকে প্রমাণ হয় আমরা সর্বশক্তিমানের উপর নির্ভরশীল নই। আবার আত্মগর্ব, আত্ম-অহংকার নিজের উপর প্রচণ্ড বিশ্বাসে আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভরশীলতা না থাকা ইত্যাদি এসবই আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদারিত্ব কল্পনা করা। আজকে আমরা বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে চমৎকৃত, মুগ্ধ। মানুষ ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’ এর সাফল্যে স্রষ্টার সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনে ব্যস্ত। গ্রহ-গ্রহান্তরে তার যাত্রা। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। এসবের ফলে অনেকের মধ্যে এমন অহংবোধের জন্ম হয়েছে যে তারা স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার পরিবর্তে তার প্রতি আনুগত্য ফেলছে হারিয়ে। তারা বিজ্ঞানের জ্ঞানকে স্রষ্টার আসনে বসায়। অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক নিজের সাফল্যে বিমোহিত হয়ে একমাত্র নিজেকেই এই সাফল্যের নিয়ামক মনে করে। তার মেধা বা প্রতিভা যে স্রষ্টার দান, তার সাফল্যের পেছনের এই ছোট্ট অথচ মৌলিক শর্তটি সে ভুলে যায়। প্রতিভা, মেধা, ক্ষমতা, অর্থ-বিত্ত এসব মানুষকে আত্মঅহংকারী করে তোলে। আল্লাহ্‌র সাথে এও এক ধরণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও এক ধরনের শেরেকী করা।