002.258

তুমি কি সে লোককে দেখনি, যে পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল ইব্রাহীমের সাথে এ কারণে যে, আল্লাহ সে ব্যাক্তিকে রাজ্য দান করেছিলেন? ইব্রাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমি জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইব্রাহীম বললেন, নিশ্চয়ই তিনি সুর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ সীমালংঘণকারী সম্প্রদায়কে সরল পথ প্রদর্শন করেন না।
Have you not looked at him who disputed with Ibrâhim (Abraham) about his Lord (Allâh), because Allâh had given him the kingdom? When Ibrâhim (Abraham) said (to him): ”My Lord (Allâh) is He Who gives life and causes death.” He said, ”I give life and cause death.” Ibrâhim (Abraham) said, ”Verily! Allâh causes the sun to rise from the east; then cause it you to rise from the west.” So the disbeliever was utterly defeated. And Allâh guides not the people, who are Zâlimûn (wrong-doers, etc.).

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِي حَآجَّ إِبْرَاهِيمَ فِي رِبِّهِ أَنْ آتَاهُ اللّهُ الْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّيَ الَّذِي يُحْيِـي وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا أُحْيِـي وَأُمِيتُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ فَإِنَّ اللّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِي كَفَرَ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
Alam tara ila allathee hajja ibraheema fee rabbihi an atahu Allahu almulka ith qala ibraheemu rabbiya allathee yuhyee wayumeetu qala ana ohyee waomeetu qala ibraheemu fa-inna Allaha ya/tee bialshshamsi mina almashriqi fa/ti biha mina almaghribi fabuhita allathee kafara waAllahu la yahdee alqawma alththalimeena

YUSUFALI: Hast thou not Turned thy vision to one who disputed with Abraham About his Lord, because Allah had granted him power? Abraham said: “My Lord is He Who Giveth life and death.” He said: “I give life and death”. Said Abraham: “But it is Allah that causeth the sun to rise from the east: Do thou then cause him to rise from the West.” Thus was he confounded who (in arrogance) rejected faith. Nor doth Allah Give guidance to a people unjust.
PICKTHAL: Bethink thee of him who had an argument with Abraham about his Lord, because Allah had given him the kingdom; how, when Abraham said: My Lord is He Who giveth life and causeth death, he answered: I give life and cause death. Abraham said: Lo! Allah causeth the sun to rise in the East, so do thou cause it to come up from the West. Thus was the disbeliever abashed. And Allah guideth not wrongdoing folk.
SHAKIR: Have you not considered him (Namrud) who disputed with Ibrahim about his Lord, because Allah had given him the kingdom? When Ibrahim said: My Lord is He who gives life and causes to die, he said: I give life and cause death. Ibrahim said: So surely Allah causes the sun to rise from the east, then make it rise from the west; thus he who disbelieved was confounded; and Allah does not guide aright the unjust people.
KHALIFA: Have you noted the one who argued with Abraham about his Lord, though GOD had given him kingship? Abraham said, “My Lord grants life and death.” He said, “I grant life and death.” Abraham said, “GOD brings the sun from the east, can you bring it from the west?” The disbeliever was stumped. GOD does not guide the wicked.

২৫৭। যাদের ঈমান আছে; আল্লাহ্‌ তাদের রক্ষাকর্তা। অন্ধকারের অতল থেকে তিনি তাদের আলোতে পরিচালিত করবেন। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, ‘মন্দ’ [শক্তি] তাদের অভিভাবক হবে। ইহা তাদের আলো থেকে অতল অন্ধকারের দিকে পরিচালিত করে। তারা হবে আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা [চিরদিন] বাস করবে।

রুকু – ৩৫

২৫৮। তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সাথে তার প্রভুর সম্বন্ধে বিতর্ক করছিলো, যেহেতু আল্লাহ্‌ তাকে [ক্ষমতা ও] কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন ৩০২। ইব্রাহীম বলেছিলো, “আমার প্রভু তিনি, যিনি জীবন ও মৃত্যু দেন।” সে বলেছিলো, “আমিও জীবন ও মৃত্যু দান করি।” ইব্রাহীম বলেছিলো, “কিন্তু আল্লাহ্‌ সূর্যকে পূর্বদিকে উদয় করেন, তুমি উহাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করাও তো।” এভাবেই যে [একগুঁয়ে ভাবে] ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো, সে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। যারা অন্যায়কারী আল্লাহ্‌ তাদের সৎপথ দেখান না ৩০৩।

৩০২। আয়াত [২ : ২৫৮ – ২৬০] এই আয়াত তিনটি সম্পর্কে নানা রকম মতবাদ আছে। বিশেষ করে কে সেই ব্যক্তি যে হযরত ইব্রাহীমের সাথে তর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিলো ? কুরআন শরীফে যেহেতু তার নাম উল্লেখ করা হয় নাই, এবং আমাদের প্রিয় নবীও এ সম্বন্ধে কোনও বক্তব্য রাখেন নাই, সুতরাং এই ব্যক্তির নামের অনুসন্ধান করা বৃথা এবং এ সম্বন্ধে নিজস্ব কোনও অনুমান করাও উচিত নয়। গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক সময়ে অনুমান অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়। কিন্তু কুরআন শরীফ এমন এক গ্রন্থ যার বক্তব্য, যার শিক্ষা, সার্বজনীন এবং যুগ কাল অতিক্রান্ত। সুতরাং এখানে সামান্য একটা নামের ব্যাপারে অনুমান করে কূটতর্কে জড়িয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ফলে কুরআনের যে মূল শিক্ষা বা যে উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তার থেকে আমরা বহু দূরে চলে যেতে পারি। কুরআনের সার্বজনীন ও বৃহত্তর রূপ হৃদয়ঙ্গম করার পরিবর্তে আমরা ক্ষুদ্র পরিবেশে কুটতর্কের ফলে আল্লাহ্‌র বাণীর মহিমা থেকে বঞ্চিত হব। এ যেনো সমুদ্র দর্শনের পরিবর্তে ক্ষুদ্র ‘ডোবা’ দর্শন এবং এর মহিমা কীর্তন। উপরের আয়াত তিনটি [২ : ২৫৮, ২৫৯, ২৬০] যে কোনও পয়গম্বরের জীবনেই ঘটতে পারে, তবে আয়াত [২ : ২৫৮]-এ আল্লাহ্‌, নবী মুহম্মদ মুস্তফাকে (সাঃ) সম্বোধন করেছেন।

৩০৩। আয়াতের [২ : ২৫৮] লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মানুষের ক্ষমতার দম্ভ ও অহংকার আল্লাহ্‌র ক্ষমতার কাছে তুচ্ছ। যে ব্যক্তির সাথে হযরত ইব্রাহীমের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল, সম্ভবতঃ তিনি ছিলেন বেবীলনের রাজা নমরুদ। মাওলানা ইউসুফ আলী এখানে নমরুদের উল্লেখ করেছেন এ জন্য যে হযরত ইব্রাহীমের আদি বাসস্থান ছিল বেবীলনে। সে সময়ে বেবীলন শিল্প, সাহিত্য ও বিজ্ঞানে পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় ছিল। বিজ্ঞান পৃথিবীতে বহু আশ্চর্য্য ঘটনার জন্ম দিতে সক্ষম। একথা সে সময়ের বেবীলনের জন্যও প্রযোজ্য ছিল, বর্তমান সময়ের জন্যও প্রযোজ্য আছে। বিজ্ঞান যত কিছুই আবিষ্কার করুক না কেন জীবনের বা প্রাণের রহস্য আজও তার কাছে অজানা। এই রহস্য সে সময়েও বিজ্ঞানীদের হতবুদ্ধি করতো, আজ এত বছর পরেও বিজ্ঞানীদের প্রাণের রহস্য সেই একইভাবে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করে। আজকের যুগে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে মানুষ সৃষ্টির কলা-কৌশল উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইব্রাহীমের (আঃ) পরে কত যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। বিজ্ঞানের জ্ঞান কত সমৃদ্ধ হয়েছে, তবুও নিউটনের মত বলতে হয়, “আমরা জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়াচ্ছি।” অসীম জ্ঞানের আঁধার একমাত্র সর্বশক্তিমান। যখন লোকে অহংকারে স্ফীত হয়ে দম্ভ প্রকাশ করে তখন সে এই সত্যকে ভুলে যায় বা দেখতে অপারগ হয়। নিজেকে সে স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করে। আজকের যুগেও আমরা এসব লোকের সন্ধান পাই যারা বিজ্ঞান পড়ে আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব অস্বীকার করে। তাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানের দম্ভে ভুলে যায় যে, পৃথিবীর যাবতীয় প্রাকৃতিক বিধান বা বিজ্ঞান সবই আল্লাহ্‌র অসীম জ্ঞানের সামান্য অংশ মাত্র। নৃপতি বা রাজা এবং বিজ্ঞানী এরা উভয়েই সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্ষমতাধর সন্দেহ নাই। কিন্তু আল্লাহ্‌র তুলনায় তা অত্যন্ত সীমিত। হযরত ইব্রাহীম নমরুদকে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যদি সে আল্লাহ্‌র মতই ক্ষমতাধর হয়, তবে সূর্যকে বলুক পশ্চিম দিক থেকে উঠতে।