002.252

এগুলো হলো আল্লাহর নিদর্শন, যা আমরা তোমাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে থাকি। আর আপনি নিশ্চিতই আমার রসূলগণের অন্তর্ভুক্ত।
These are the Verses of Allâh, We recite them to you (O Muhammad SAW) in truth, and surely, you are one of the Messengers (of Allâh).

تِلْكَ آيَاتُ اللّهِ نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِالْحَقِّ وَإِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ
Tilka ayatu Allahi natlooha AAalayka bialhaqqi wa-innaka lamina almursaleena

YUSUFALI: These are the Signs of Allah: we rehearse them to thee in truth: verily Thou art one of the messengers.
PICKTHAL: These are the portents of Allah which We recite unto thee (Muhammad) with truth, and lo! thou art of the number of (Our) messengers;
SHAKIR: These are the communications of Allah: We recite them to you with truth; and most surely you are (one) of the messengers.
KHALIFA: These are GOD’s revelations. We recite them through you, truthfully, for you are one of the messengers.

২৫২। এ সকল আল্লাহ্‌র আয়াত; আমি তোমার নিকট তা যথাযথভাবে আবৃত্তি করছি। অবশ্যই তুমি রাসূলদের একজন।

তৃতীয় পারা

২৫৩। এই রাসূলদের মধ্যে, কতককে অপর সকলের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি ২৮৯। তাদের একজনের সাথে আল্লাহ্‌ কথা বলেছেন, ২৯০; অন্যদের [মর্যাদায়] উন্নীত করেছেন ২৯১।  মরিয়ম পুত্র ঈসাকে আমি সুস্পষ্ট [নিদর্শন] দিয়েছিলাম এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা তাঁকে শক্তিশালী করেছিলাম ২৯২। আল্লাহ্‌ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের নিকট স্পষ্ট [প্রমাণ] আসার পরও পারস্পরিক যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা বিবাদ বিতন্ডায় লিপ্ত হলো। ফলে তাদের কতক ঈমান আনলো, কতক প্রত্যাখ্যান করলো। আল্লাহ্‌ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তারা পরস্পরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতো না। কিন্তু আল্লাহ্‌ তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন ২৯৩।

২৮৯। যুগে যুগে আল্লাহ্‌ নবী-রাসূলদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাদের বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। সম্ভবতঃ আল্লাহ্‌র কাছে তাদের মর্যাদাও ছিল বিভিন্ন। কিন্তু আমরা ক্ষুদ্র মানুষ সীমিত জ্ঞান দ্বারা আল্লাহ্‌র নবী রাসূলদের [২ : ১৩৬] মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখি না। এই নবী রাসূলরা যদিও আল্লাহ্‌র মনোনীত তবুও যুদ্ধের বিভিষিকা থেকে মুক্তি পান নাই। এখানে তিনটি উপমার সাহায্যে তা তুলে ধরা হয়েছে। হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্‌ সরাসরি কথা বলেছেন। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে চল্লিশ বছর উষর ও নির্জন প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারণ ছিল তার নিজের লোকদের ধর্মে অবিশ্বাস। তিনি প্যালেষ্টাইনদের বিরুদ্ধে অস্ত্রের সাহায্যে যুদ্ধ পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার পূর্বেই আল্লাহ্‌ তাকে তুলে নেন এবং এর দায়িত্ব বর্তায় যেয়ে জোসুয়ার উপরে। দাউদ নবী ছিলেন আল্লাহ্‌র মনোনীত। তিনি তার সময়কালের সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধাকে পরাজিত করেন। তিনি রাজা হিসেবে, পয়গম্বর হিসেবে সফল যুদ্ধ পরিচালনা করেন। যীশুখৃষ্টকে আল্লাহ্‌ পবিত্র আত্মা দ্বারা শক্তিশালী করেন। তাকে আল্লাহ্‌ যুদ্ধের জন্য কোনও অস্ত্র দেন নাই। তার নবুওয়াতকাল ছিল খুবই সীমিত। আমাদের নবী মুহম্মদ (সাঃ) জীবনে দেখি, আল্লাহ্‌ সব নবী রাসূলদের উপরে নির্ধারিত দায়িত্ব সমন্বিত করে তাকে সে দায়িত্ব দেন। তিনি ছিলেন হযরত ঈসা (আঃ) ন্যায় কোমল হৃদয়, আবার হযরত মুসা (আঃ) অপেক্ষা তিনি বড় সংগঠক ছিলেন। হযরত মুসা ইহুদীদের সংগঠিত করেছিলেন, কিন্তু মুহম্মদ (সাঃ) মদিনা থেকে বিশাল আরব গোষ্ঠীকে সংগঠিত করেছিলেন কোরানের আইনের আলোকে। তার সাফল্য হচ্ছে তার উপরে আল্লাহ্‌র অর্পিত দায়িত্ব তিনি তার জীবদ্দশায় সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।

২৯০। হযরত মুসার জন্য উপরের টিকা দেখুন।

২৯১। এর অর্থ দ্বিবিধ। প্রথমতঃ তাদের উচ্চ পদে সম্মানিত করা হয় এবং দ্বিতীয়তঃ এ মর্যাদার ক্রমধাপ বিদ্যমান।

২৯২। দেখুন [২ : ৮৭] আয়াত এবং [৩ : ৬২] এর টিকা নং ৪০১।
২৯৩। আদম সন্তানকে আল্লাহ্‌ গুণাবলীতে ফেরেশতাদের উপরে স্থাপন করেছেন; আবার শয়তানের প্ররোচণাতে সে পশুরও অধম। সাধারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত স্বার্থপর। ব্যক্তিস্বার্থ তার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রাধাণ্য পায়। সারাটা জীবন সে শুধুমাত্র “জান এবং মাল” এরই রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করে। আল্লাহ্‌ মানুষকে “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি” দিয়েছেন। এই সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার মানুষ করে। কারণ মানুষ অত্যন্ত স্বার্থপর জীব। কিন্তু মানুষের এই স্বার্থপরতা আল্লাহ্‌র সুদূর প্রসারিত পরিকল্পনা ব্যহত করতে পারে না। আল্লাহ্‌ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ যদি মানুষকে এই সীমিত ইচ্ছাশক্তি না দিতেন হয়তো সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যসব প্রাণীর মতই কোন জটিল দ্বন্দ্বে মানুষ জড়িয়ে পড়তো না এবং পাপ-পূণ্যের জন্য দুঃখ-সুখ ভোগের আশংকা থাকতো না।