অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।
Then He completed and finished from their creation (as) seven heavens in two Days and He made in each heaven its affair. And We adorned the nearest (lowest) heaven with lamps (stars) to be an adornment as well as to guard (from the devils by using them as missiles against the devils). Such is the Decree of Him the All-Mighty, the All-Knower.
فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاء أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
Faqadahunna sabAAa samawatin fee yawmayni waawha fee kulli sama-in amraha wazayyanna alssamaa alddunya bimasabeeha wahifthan thalika taqdeeru alAAazeezi alAAaleemi
YUSUFALI: So He completed them as seven firmaments in two Days, and He assigned to each heaven its duty and command. And We adorned the lower heaven with lights, and (provided it) with guard. Such is the Decree of (Him) the Exalted in Might, Full of Knowledge.
PICKTHAL: Then He ordained them seven heavens in two Days and inspired in each heaven its mandate; and We decked the nether heaven with lamps, and rendered it inviolable. That is the measuring of the Mighty, the Knower.
SHAKIR: So He ordained them seven heavens in two periods, and revealed in every heaven its affair; and We adorned the lower heaven with brilliant stars and (made it) to guard; that is the decree of the Mighty, the Knowing.
KHALIFA: Thus, He completed the seven universes in two days, and set up the laws for every universe. And we adorned the lowest universe with lamps, and placed guards around it. Such is the design of the Almighty, the Omniscient.
১২। সুতারাং তিনি দুই দিনে তাদেরকে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন ৪৪৭৭। এবং তিনি প্রত্যেক আসমানকে তার কর্তব্য ও বিধান নির্দ্দিষ্ট করে দিলেন। এবং নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালার দ্বারা এবং [ শয়তানের থেকে ] করলাম সুরক্ষিত ৪৪৭৮। এরূপই ছিলো [তাঁর ] বিধান, [ যিনি ] ক্ষমতায় মহাপরাক্রমশালী , জ্ঞানে পরিপূর্ণ।
৪৪৭৭। ‘দিনের বা সময়ের ধারণা হচ্ছে আপেক্ষিক। কোরাণের বর্ণিত “দিন” আমাদের দিন-রাত্রির ধারণাতে সহস্র সহস্র বৎসরের সমান। [ ৭০ : ৪ ] আয়াতে বলা হয়েছে আমাদের পঞ্চাশ হাজার [ ৫০,০০০ ] বৎসরের সমান একদিন। বাইবেলের সৃষ্টিতত্বের সাথে [ Gen :i and ii, 1-7 ] প্রাচীন ব্যবিলন সভ্যতার সৃষ্টিতত্বের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে দিনকে আক্ষরিক ভাবেই দিন গণনা করা হয়েছে। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম দিন ঈশ্বর আলোর সৃষ্টি করেন, দ্বিতীয় দিনে আকাশের স্তর, তৃতীয় দিনে পৃথিবী ও পৃথিবীর উদ্ভিদ, চর্তুথ দিনে তারা ও গ্রহ , নক্ষত্র ; পঞ্চম দিনে সমুদ্র থেকে মাছ ও পক্ষীকূল ;ষষ্ঠদিনে পশু ; প্রাণী ইত্যাদি এবং মানুষ ; সপ্তম দিনে ঈশ্বর তাঁর কর্ম শেষে বিশ্রামে যান। মুসলিম দর্শনে কোরাণের বর্ণনা সম্পূর্ণ আলাদা। ১) আল্লাহ্ এই বিশাল নভোমন্ডল , বিশ্ব-ভূবন ,বিশ্ব চরাচরের সকল সৃষ্টিকে সর্বদা পরিবেষ্টন করে আছেন। এবং সর্বদা সেখানে সৃষ্টি প্রক্রিয়া অব্যাহত গতিতে চলে আসছে। এক মূহুর্তের জন্যও তা থেমে থাকে না। এই অবিরাম সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় তিনি কখনও ক্লান্ত বোধ করেন না বা তাঁর কোনও বিশ্রামের প্রয়োজন হয় নাই। আল্লাহ্ অতন্দ্র ভাবে তার সৃষ্টিকে রক্ষা করে চলেছেন। [ আয়াতল কুরশীতে আল্লাহ্র এই গুণবাচক বর্ণনাটি তুলে ধরা হয়েছে ]। ২) আল্লাহ্র সৃষ্টি শেষ হয়ে যায় নাই। প্রতিনিয়ত তা অব্যাহত গতিতে চলছে। নভোমন্ডল থেকে মাটির পৃথিবী সর্বত্রই একই গতিতে নূতন সৃষ্টি প্রক্রিয়া অব্যাহত গতিতে চলে আসছে সেই অনাদি কাল থেকে, ভবিষ্যতেও চলবে। [৩২ : ৫ ; ৭: ৫৪ ] আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এই সমুদয় বিষয় আল্লাহ্র আয়ত্বাধীন। ৩) মানুষ অন্যান্য প্রাণীদের সাথে একই সময়ে পৃথিবীতে আগমন করে নাই। তার আগমন প্রাণীদের আগমনের বহু পরে। ৪) বাইবেলের বর্ণনার মাঝে বহু অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায় যেমন : চর্তুথদিনের গ্রহ নক্ষত্রের সৃষ্টি হলে প্রথম তিন দিনের হিসাব মেলানো কঠিন। কঠিন হয়ে পড়ে উদ্ভিদের সৃষ্টিতত্ব। এ ব্যাপারে মরিস বুকাইলির বিখ্যাত গ্রন্থে আলোকপাত করা হয়েছে। কোরাণের সৃষ্টিতত্বের যে ছয়টি ধাপ বর্ণনা করা হয়েছে তা অবাধ ও উন্মুক্ত সেগুলি হলো : ১) আমাদের ও অন্যান্য গ্রহের সৃষ্টি ‘Cosmic Matter’ বা পদার্থের আদিরূপের বিষ্ফোরণ থেকে ; ২) ধীরে ধীরে ঠান্ডা হওয়া থেকে ৩) ও ৪) উদ্ভিদের উৎপত্তি ও প্রাণীর সৃষ্টি ; ৫) এবং ৬) সমান্তরাল ভাবে সপ্ত আকাশের সৃষ্টি। কোরাণের সৃষ্টিতত্বের এই বর্ণনা বিজ্ঞানের তত্বের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ।
৪৪৭৮। দেখুন আয়াত [ ১৫ : ১৭ ] ও টিকা ১৯৫১ এবং আয়াত [ ৩৭ : ৬-৯ ]। লক্ষ্য করুন আয়াত সমূহে যতক্ষণ সৃষ্টিতত্বের বর্ণনা করা হয়েছে, ততক্ষণ ‘তিনি ‘ বা তৃতীয় পুরুষ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এই বাক্যে তৃতীয় পুরুষ ‘তিনি’ র স্থলে প্রথম পুরুষ ‘আমি ‘ ব্যবহার করা হয়েছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া নৈবর্ত্তিক বা অব্যক্তিগত। কিন্তু সুশোভিত ও সুরক্ষিত করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কাজ। সৃষ্টিকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র করুণার সাক্ষর হিসেবে সৃষ্ট পদার্থ ও প্রাণের জন্য আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ বর্ণনা করা হয়েছে। সেই কারণে ভাষাকে সৌন্দর্যমন্ডিত ও গুরুত্ব আরোপ করার জন্য তৃতীয় পুরুষ থেকে প্রথম পুরুষে রূপান্তরিত করা হয়েছে।