অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করেছি তাদেরকে যাদেরকে আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মনোনীত করেছি। তাদের কেউ কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর নির্দেশক্রমে কল্যাণের পথে এগিয়ে গেছে। এটাই মহা অনুগ্রহ।
Then We gave the Book the Qur’ân) for inheritance to such of Our slaves whom We chose (the followers of Muhammad SAW). Then of them are some who wrong their ownselves, and of them are some who follow a middle course, and of them are some who are, by Allâh’s Leave, foremost in good deeds. That (inheritance of the Qur’ân), that is indeed a great grace.
ثُمَّ أَوْرَثْنَا الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ وَمِنْهُم مُّقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الْكَبِيرُ
Thumma awrathna alkitaba allatheena istafayna min AAibadina faminhum thalimun linafsihi waminhum muqtasidun waminhum sabiqun bialkhayrati bi-ithni Allahi thalika huwa alfadlu alkabeeru
YUSUFALI: Then We have given the Book for inheritance to such of Our Servants as We have chosen: but there are among them some who wrong their own souls; some who follow a middle course; and some who are, by Allah’s leave, foremost in good deeds; that is the highest Grace.
PICKTHAL: Then We gave the Scripture as inheritance unto those whom We elected of Our bondmen. But of them are some who wrong themselves and of them are some who are lukewarm, and of them are some who outstrip (others) through good deeds, by Allah’s leave. That is the great favour!
SHAKIR: Then We gave the Book for an inheritance to those whom We chose from among Our servants; but of them is he who makes his soul to suffer a loss, and of them is he who takes a middle course, and of them is he who is foremost in deeds of goodness by Allah’s permission; this is the great excellence.
KHALIFA: We passed the scripture from generation to generation, and we allowed whomever we chose from among our servants to receive it. Subsequently, some of them wronged their souls, others upheld it only part of the time, while others were eager to work righteousness in accordance with GOD’s will; this is the greatest triumph.
৩২। অতঃপর, ৩৯১৯ আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে কিতাবের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছি। তবে তাদের মধ্যে কতক লোক নিজের আত্মার প্রতি অত্যাচার করে ,কতক মধ্যপথ অনুসরণ করে এবং কতক আল্লাহ্র অনুগ্রহে কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী হয়। এটাই হলো মহা অনুগ্রহ।৩৯২০
৩৯১৯। “অতঃপর ” শব্দটি দ্বারা এখানে চূড়ান্ত পর্যায়কে বোঝানো হয়েছে। কোরাণ হচ্ছে সর্বশেষ প্রত্যাদেশ ও ধর্মগ্রন্থ অতঃপর দ্বারা এই কথাই বোঝানো হয়েছে। অথবা পূর্বের আয়াতে “তোমার প্রতি ” শব্দটির বৈষম্য প্রদর্শন করা হয়েছে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী ঐশি কিতাবসমূহের সমর্থক কোরাণ প্রথমে আপনার [ রাসুলের ] কাছে প্রত্যাদেশ করেছি এরপর আমি আমার মনোনীত বান্দাদেরকেও এর অধিকারী করেছি। কোরাণ ওহীর মাধ্যমে রসুলুল্লাহ্র [সা ] এর কাছে প্রেরণ করা মর্যদা ও স্তরের দিক দিয়ে অগ্রে এবং উম্মতে মোহাম্মদীকে দান করা শেষে হয়েছে, এই বৈষম্যমূলক বৈশিষ্ট্যকে এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
৩৯২০। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদের [সা ] পরে কোরাণের তত্বাবধায়ক করা হয় ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের জিম্মাদার নিযুক্ত করা হয়। এই জিম্মাদারী বা তত্বাবধায়ক সঙ্কীর্ণ অর্থে নয়। যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন তারা এর নির্দ্দেশসমূহ মেনে চলবে , সংরক্ষণ করবে , এবং প্রচার করবে যেনো বিশ্বমানব সম্প্রদায় আল্লাহ্র বাণীর শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ লাভ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ইসলাম গ্রহণকারী সকলেই এ বিষয়ে সচেতন নয়। সকলেই তাদের দায়িত্ব সম্বন্ধে বিশ্বস্ত , সত্যবাদী এবং বিশ্বাসী নয়। বর্তমান পৃথিবীতে মুসলমান নামধারী বহু জাতি আছে কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন নয়। ঠিক এই একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটে আদম সন্তানদের বেলায়। আল্লাহ্ তাদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেন তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে , কিন্তু মানুষের এক অংশ শয়তানের প্ররোচনায় পাপের পঙ্কে নিমগ্ন হয়।
১) ঠিক সেরকমই ইসলামের অনুসারীদের একদল ইসলামের আলোকবর্তিকা অনুসরণে অক্ষমতা প্রকাশ করে এবং তাদের আত্মাকে কলুষিত করে “তাদের মাঝে কতক লোক নিজের আত্মার প্রতি অত্যাচার করে।”
২) ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে আর একদল আছে , যারা মধ্য পথ অবলম্বন করে থাকে। তারা ধর্মের প্রতিটি অনুশাসন একনিষ্ঠভাবে পালন করতে অক্ষম , কিন্তু ধর্মের প্রাণ বা মূল বা মর্মার্থ সম্বন্ধে তারা অত্যন্ত যত্নশীল। এদের সম্বন্ধে বলা চলে, “The spirit indeed is willing , but the flesh is weak”। তাদের উদ্দেশ্য মহৎ ; কিন্তু প্রকৃত মুসলমানের চরিত্র , জীবনব্যবস্থা ও গুণাবলী অর্জন করতে তারা সম্পূর্ণ কৃতাকার্য হয় না অসততার দরুণ।
৩) এরপরে বলা হয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর কথা : তারা হয়তো পূর্ণাঙ্গ ও নিখুঁত নয়। কিন্তু , তাঁদের জীবনের উদ্দেশ্য, জীবন পদ্ধতি , চরিত্রগত গুণাবলী প্রকৃত ইসলামিক অনুশাসনের দ্বারা পরিচালিত করেন। এরা হচ্ছেন সিদ্দিক শ্রেণীর যারা পৃথিবীর জন্য অনুকরণীয় এবং আদর্শ মানব। এরাই পৃথিবীতে সকল ভালো কাজের পুরোধায় থাকেন। তারা মহৎ ব্যক্তিত্ব ও অনুকরণীয় চরিত্র অর্জন করতে পেরেছেন সেটা তাদের নিজেদের কোনও কৃতিত্ব নয়। তাঁরা চেষ্টা করেছেন সত্য, তবে তাদের সে চেষ্টার পুরষ্কার স্বরূপ আল্লাহ্ এই সব গুণাবলী তাঁদের চরিত্রে দান করেছেন। তাঁরা তাদের জীবনে সফলকাম ,তাঁরা তাদের জীবনে সর্বোচ্চ সিদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছেন – তাদের আত্মায় মোক্ষলাভ বা মুক্তি ঘটেছে। আল্লাহ্র অনুগ্রহেই এ সব সম্ভব হয়েছে , কারণ জীবনের সকল উত্তম জিনিষই আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা দান। আর পাপের ফলশ্রুতি শয়তানের প্ররোচনা। তবে দুটোই ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছার দ্বারা অর্জন করতে হয়।