1 of 3

030.030

তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
So set you (O Muhammad SAW) your face towards the religion of pure Islâmic Monotheism Hanifa (worship none but Allâh Alone) Allâh’s Fitrah (i.e. Allâh’s Islâmic Monotheism), with which He has created mankind. No change let there be in Khalq­illâh (i.e. the Religion of Allâh Islâmic Monotheism), that is the straight religion, but most of men know not. [Tafsir At­Tabarî, Vol 21, Page 41]

فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
Faaqim wajhaka lilddeeni haneefan fitrata Allahi allatee fatara alnnasa AAalayha la tabdeela likhalqi Allahi thalika alddeenu alqayyimu walakinna akthara alnnasi la yaAAlamoona

YUSUFALI: So set thou thy face steadily and truly to the Faith: (establish) Allah’s handiwork according to the pattern on which He has made mankind: no change (let there be) in the work (wrought) by Allah: that is the standard Religion: but most among mankind understand not.
PICKTHAL: So set thy purpose (O Muhammad) for religion as a man by nature upright – the nature (framed) of Allah, in which He hath created man. There is no altering (the laws of) Allah’s creation. That is the right religion, but most men know not –
SHAKIR: Then set your face upright for religion in the right state– the nature made by Allah in which He has made men; there is no altering of Allah’s creation; that is the right religion, but most people do not know–
KHALIFA: Therefore, you shall devote yourself to the religion of strict monotheism. Such is the natural instinct placed into the people by GOD. Such creation of GOD will never change. This is the perfect religion, but most people do not know.

৩০। সুতারাং তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজের মুখকে ধর্মের দিকে প্রতিষ্ঠিত কর ৩৫৪০। তোমরা আল্লাহ্‌র প্রকৃতিকে [ প্রতিষ্ঠিত ] কর, যে নক্‌শা অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্‌র সৃষ্টিতে কোন পরিবর্তন নাই ৩৫৪১। এটাই আদর্শ ধর্ম ৩৫৪২। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশই তা বুঝতে পারে না।

৩৫৪০। “Hanif” অর্থ ঋজু বা সরল। এই শব্দটি আয়াতে [ ২ : ১৩৫ ] ব্যবহৃত হয়েছে।। চুম্বক শলাকা যেরূপ উত্তর দক্ষিণে দিকে ‘ঋজু’ – ‘সরল ‘ বা ‘ঋজু’ বা ‘সত্য’ বলতে ব্যক্তির সেরূপ মানসিকতাকেই বোঝানো হয়েছে যা সর্বদা এক আল্লাহ্‌র প্রতি ঐকান্তিক ভাবে নিবেদিত থাকবে। যারা আল্লাহ্‌র সত্যকে লাভ করে ঐশিজ্ঞানের অধিকারী তারা কখনও জীবনের কোনও অবস্থাতেই তা থেকে সরে যেতে পারে না। চুম্বক শলাকা যেরূপ সর্বাবস্থায় উত্তর দক্ষিণ মুখ করে থাকে, এরাও সেরূপ জীবনের সর্বাবস্থায় ঋজু ভাবে আল্লাহ্‌র সত্যের প্রতি নিবেদিত থাকে।

৩৫৪১। প্রতিটি মানব শিশু জন্ম গ্রহণ করে নিষ্পাপ, পবিত্র , ন্যায় ও সত্যের প্রতি অনুগত, গুণের প্রতি আসক্ত, এবং বিশ্বভূবনে তার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নিয়ে। নিষ্পাপ আত্মায় সে ধারণ করার ক্ষমতা রাখে আল্লাহ্‌র মহানুভবতা, বিচক্ষণতা,জ্ঞান ও ক্ষমতাকে। এটাই হচ্ছে আত্মার প্রকৃতিগত ধর্ম বা যোগ্যতা। আল্লাহ্‌ প্রত্যেক জীবের জন্য তার নির্দ্দিষ্ট ধর্মকে এবং যোগ্যতাকে স্থির করে দিয়েছেন। অর্থাৎ যে জীবনকে স্রষ্টা যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন তাকে সে উদ্দেশ্যের প্রতি পথও প্রদর্শন করেছেন, যেমনঃ মৌমাছির মধ্যে ফুল ও মধু চেনার যোগ্যতা এবং মৌচাক ও মধু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। ঠিক সে রকমই মানুষের আত্মাকে এক বিশেষ প্রকৃতি বা ধর্ম দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে , যাতে সে খুব সহজেই নিজ স্রষ্টাকে চিনতে পারে , তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে। এটাই হচ্ছে আত্মার স্বভাবগত প্রকৃতি বা ধর্ম যে ভাবে স্রষ্টা তাকে সৃষ্টি করেছেন , যেমন ভেড়ার প্রকৃতি শান্ত , অশ্বের প্রকৃতি দ্রুত ধাবমান ইত্যাদি। কিন্তু মানুষ প্রকৃতিগত ভাবে পাওয়া আত্মার এই সহজ, সরল, নিষ্পাপ পবিত্র, সত্যের ও ন্যায়ের প্রতি নিবেদিত রূপকে নষ্ট করে ফেলে। কারণ সমাজ জীবনে সে রীতি-নীতি, কুসংস্কার, স্বার্থপরতা, ভুল শিক্ষার শিকার হয়ে , এ সবের নাগপাশে নিজেকে আবদ্ধ করার ফলে আত্মার স্বাধীনতা ও পবিত্রতা হারায়। এ সবের ফলে তার মাঝে শান্ত সমাহিত ভাবের পরিবর্তে সে হয় লড়াই প্রিয়, অপবিত্র, মিথ্যুক, দাসসুলভ মনোভাব , যা কিছু নিষিদ্ধ এবং মিথ্যা তার দ্বারা আকর্ষিত হওয়া ইত্যাদি মনোভাব সম্পন্ন। এই মনোভাব সম্পন্ন হওয়ার ফলে সে মানুষকে ভালোবাসার ক্ষমতা হারায় – কারণ তার অন্ধ স্বার্থপরতা এবং পাপের প্রতি আসক্তির ফলে তার আত্মার এই পরিণতি ঘটে যার শেষ পরিণাম হচ্ছে এক স্রষ্টার এবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। মানুষকে আল্লাহ্‌ সৃষ্টিই করেছেন আল্লাহ্‌র এবাদতের জন্য- এটাই তার স্বভাব ধর্ম (৫১:৫৬), চুম্বকের যেরূপ উত্তর দক্ষিণে মুখ করে রাখা স্বভাবধর্ম। রসুলের [ সা ] সম্মুখে যে সমস্যা ছিলো, তা হচ্ছে এ সব অসাধু ও বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন সম্প্রদায়কে সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন করা , যা আত্মার আদি ধর্ম তাতে প্রতিষ্ঠিত করা – কারণ মানুষ সৃষ্টির সেটাই হচ্ছে স্রষ্টার একমাত্র উদ্দেশ্য।

৩৫৪২। “Qaiyim” দ্বীন বা ধর্ম। এই শব্দটি অত্যন্ত ব্যপক অর্থে ব্যবহৃত। মানুষের সমগ্র জীবনই হচ্ছে ‘দ্বীন’। জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমে আত্মাকে তার স্বধর্মে প্রতিষ্ঠিত করার নামই হচ্ছে দ্বীন বা ধর্ম পালন করা। যা আত্মার স্বভাব ধর্মের পরিপন্থি নয়, তাই-ই হচ্ছে প্রকৃত ধর্ম বা “Standard Religion” বা সরল পথ যা যুগে যুগে মানুষের বিভিন্ন বিকৃত মতভেদ দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হয় এবং ধর্মের মাঝে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার সৃষ্টি করে [ দেখুন নীচের ৩২ নং আয়াত ]। আল্লাহ্‌র ধর্ম সর্বযুগে একটাই , যা হচ্ছে- আল্লাহ্‌ এক এবং অদ্বিতীয়, যা “অধিকাংশ মানুষ তা বুঝতে পারে না।”