সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব। ’
And Sulaimân (Solomon) inherited (the knowledge of) Dawûd (David). He said: ”O mankind! We have been taught the language of birds, and on us have been bestowed all things. This, verily, is an evident grace (from Allâh).”
وَوَرِثَ سُلَيْمَانُ دَاوُودَ وَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ عُلِّمْنَا مَنطِقَ الطَّيْرِ وَأُوتِينَا مِن كُلِّ شَيْءٍ إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْفَضْلُ الْمُبِينُ
Wawaritha sulaymanu dawooda waqala ya ayyuha alnnasu AAullimna mantiqa alttayri waooteena min kulli shay-in inna hatha lahuwa alfadlu almubeenu
YUSUFALI: And Solomon was David’s heir. He said: “O ye people! We have been taught the speech of birds, and on us has been bestowed (a little) of all things: this is indeed Grace manifest (from Allah.)”
PICKTHAL: And Solomon was David’s heir. And he said: O mankind! Lo! we have been taught the language of birds, and have been given (abundance) of all things. This surely is evident favour.
SHAKIR: And Sulaiman was Dawood’s heir, and he said: O men! we have been taught the language of birds, and we have been given all things; most surely this is manifest grace.
KHALIFA: Solomon was David’s heir. He said, “O people, we have been endowed with understanding the language of the birds, and all kinds of things have been bestowed upon us. This is indeed a real blessing.”
১৬। এবং সুলায়মান ছিলো দাউদের উত্তরাধিকারী , ৩২৫৪। সে বলেছিলো, ” হে আমার সম্প্রদায় ! আমাকে পাখীর ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে ৩২৫৫, এবং আমাকে সকল জিনিষই দেয়া হয়েছে। ইহা অবশ্যই [আল্লাহ্র ] সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।” ৩২৫৬
৩২৫৪। হযরত সুলাইমান শুধু যে তাঁর পিতার সিংহাসনের উত্তরাধীকারী হন তাই -ই নয়, তিনি তাঁর পিতার নবী সুলভ জ্ঞান , প্রজ্ঞা , বিচক্ষণতা ও অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন। এটা ছিলো আল্লাহ্র এক বিশেষ অনুগ্রহ। কারণ এসব জিনিষ আল্লাহ্ বংশ পরম্পরায় দান করেন না। আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ দেখেই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে সুলাইমান ছিলেন দাউদের উত্তরাধীকারী।
৩২৫৫। পাখীরা কি কথা বলে ? হয়তো তারা মানুষের মত ভাষার মাধ্যমে কথা বলে না। কিন্তু পাখী এবং অন্যান্য প্রাণীকূল যারা যুথবদ্ধভাবে বাস করে তাদের আচরণ লক্ষ্য করলেই একথা সুস্পষ্ট হয় যে, তারা তাদের মাঝে ভাবের আদান প্রদান ঘটায়। বসন্তের সোনালী প্রভাতে পাখীরা গান গায় , জোড়া বাঁধে , বাসা তৈরী করে। অপরাহ্নে পাখীরা যখন দিনশেষে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে , দল বেঁধে একই শ্রেণীর পাখী একই গাছে থাকে। কিচির মিচির করে মনের ভাব প্রকাশ করে, পরস্পরের মাঝে। যুথবদ্ধ প্রাণীকূলেও দেখা যায় তারা পরস্পরের মাঝে ভাবের আদান প্রদান করে থাকে। দেশান্তরে ভ্রমণশীল পাখীদের [ Migratory bird ] শৃঙ্খলা , পিপীলিকা মৌমাছির সুশৃঙ্খল আচরণ ও যে সব প্রাণী যুথবদ্ধ ভাবে বাস করে তাদের জীবন পদ্ধতি থেকে বোঝা যায়, এ সব প্রাণীরাও পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে; ভাবের আদান -প্রদান করে। হযরত সুলাইমানকে আল্লাহ্ সেই জ্ঞান দান করেছিলেন যার মাধ্যমে তিনি স্বল্প বুদ্ধি সম্পন্ন এ সব বিহঙ্গকূল ও প্রাণীকূলের ভাবের আদান-প্রদানকে বুঝতে পারতেন।
৩২৫৬। হযরত সুলাইমান ছিলেন মহাপরাক্রান্ত , ক্ষমতাশালী নৃপতি। তাঁর নিজস্ব রাজত্বের বাইরেও তাঁর প্রতিবেশী নৃপতিদের উপরেও তার প্রভাব ছিলো। তিনি যে শুধুমাত্র শক্তিশালী নৃপতিই ছিলেন তাই-ই নয় আল্লাহ্ তাঁকে আরও বহুবিধ নেয়ামতে ধন্য করেছিলেন। তিনি বিহঙ্গকূলের এবং প্রাণী কূলের ভাষা বুঝতে পারতেন। তিনি ছিলেন জ্ঞানী , বিচক্ষণ , ন্যায়বান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর ছিলো আধ্যাত্মিক অন্তর্দৃষ্টি , যার ফলে তিনি আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করেন। এভাবেই আল্লাহ্ তাঁকে কাঙ্খিত ” সকল কিছু ” নেয়ামতে ধন্য করেন। হযরত সুলাইমান এই ” সকল কিছু ” নেয়ামতের জন্য আল্লাহ্কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ক্ষমতা , অর্থ , বিত্ত , জ্ঞান , প্রভাব প্রতিপত্তির সর্বোচ্চ শিখরে থেকেও সুলাইমান অনুধাবন করেছিলেন আল্লাহ্র বিশেষ ‘ অনুগ্রহকে ‘। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ আল্লাহ্র নেয়ামতের সামান্য কণা মাত্র আয়ত্ব করলে অন্ধ অহংকার ও দম্ভে আত্মবিস্মৃত হয়ে পড়ি যে, সব কিছুর মালিক সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। ভুলে যাই তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাতে। দম্ভ ও অহংকার আমাদের সত্ত্বাকে গ্রাস করে ফেলে। দাউদ নবী ও সুলাইমানের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই উপদেশ দিয়েছেন যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহ বিনয়ের সাথে অবনত মস্তকে কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়।