তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন জ্বালালো এবং তার চারদিককার সবকিছুকে যখন আগুন স্পষ্ট করে তুললো, ঠিক এমনি সময় আল্লাহ তার চারদিকের আলোকে উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন। ফলে, তারা কিছুই দেখতে পায় না।
Their likeness is as the likeness of one who kindled a fire; then, when it lighted all around him, Allâh took away their light and left them in darkness. (So) they could not see.
مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَاراً فَلَمَّا أَضَاءتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لاَّ يُبْصِرُونَ (17
Mathaluhum kamathali allathee istawqada naran falamma adaat ma hawlahu thahaba Allahu binoorihim watarakahum fee thulumatin la yubsiroona
YUSUFALI: Their similitude is that of a man who kindled a fire; when it lighted all around him, Allah took away their light and left them in utter darkness. So they could not see.
PICKTHAL: Their likeness is as the likeness of one who kindleth fire, and when it sheddeth its light around him Allah taketh away their light and leaveth them in darkness, where they cannot see,
SHAKIR: Their parable is like the parable of one who kindled a fire but when it had illumined all around him, Allah took away their light, and left them in utter darkness– they do not see.
KHALIFA: Their example is like those who start a fire, then, as it begins to shed light around them, GOD takes away their light, leaving them in darkness, unable to see.
১৬। এরাই তারা যারা হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তি কিনে নিয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাভজনক নয়, এবং তারা সত্য পথের নির্দেশ হারিয়ে ফেলেছে।
১৭। তাদের উপমা সেই ব্যক্তির ন্যায় ৩৮, যে আগুন জ্বালালো। যখন তা তার চতুর্দিক আলোকিত করলো, আল্লাহ্ তাদের আলো সরিয়ে নিলেন এবং তাদের ঘোর অন্ধকারে পরিত্যাগ করলেন, যেনো তারা দেখতে না পায়।
১৮। তারা বধির, মূক এবং অন্ধ, তারা [সঠিক পথে] ফিরবে না।
৩৮। মুনাফিকের আত্মা ভণ্ডামী, জুয়াচুরি, অসত্য, অন্যায়ে পরিপূর্ণ। এগুলির সাহায্যে সে খুব সহজেই কোনও কাজে জয়লাভ করে এবং প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়, সেই লোকটির মত যে ক্ষণস্থায়ী আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়ে চারিদিকের গাঢ় অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলো। কিন্তু তার জ্বালানো আগুন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এক সময় তা নিভে যায়। ফলে চারিদিক আবার গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানির পরে এ গাঢ়তা পূর্বের গাঢ়তার থেকে আরও বেশি প্রতীয়মান হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যেসব কাজের ভিত্তি অন্যায়, অসত্য, অবিশ্বাস, ভণ্ডামীর উপর প্রতিষ্ঠিত, তার ফল কখনও স্থায়ী হয় না। ঐ কাজের সাফল্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, আগুণের ক্ষণস্থায়ী আলোর মত। যে আলো অন্ধকারকে চিরতরে দূর করতে অপারগ। মুনাফিকেরা ভণ্ডামীর সাহায্যে জয়ী হতে চায়। ফলে তার কাজের নিয়তে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস, সত্যের প্রতি বিশ্বস্ততা, প্রতিপালকের রহমতের আশা সবই থাকে অনুপস্থিত। মুনাফিকের কাজের নিয়ত কখনই মহৎ হয় না। কখনই ভালো হয় না। ফলে সময়ের বৃহত্তর পরিসরে মুনাফিকের কাজের নিয়ত বা অন্তরের উদ্দেশ্য সকলের নিকট পরিস্ফুটিত হয়ে যায়। সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে কাজের সব পরিণতি হয় বিফল। সত্যের উদ্ভাসিত আলোতে মুনাফিকের অন্তর ভয়ে ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠে। অন্তরের ভয় ত্রাস, মুনাফিকদের সুস্থ চিন্তাধারাকে বাধাগ্রস্থ করে, ফলে তারা সত্যকে জানতে, সত্যকে অনুধাবন করতে, শুনতে বা দেখতে অক্ষম হয়। মুনাফিকের আত্মার চারিদিক প্রাচীর বেষ্টিত হয়ে যায়। প্রাচীর বেষ্টিত স্থান যেমন সূর্যের ঝলমলে আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ঠিক সেইরূপ মুনাফিকের অন্তরের মিথ্যার আবরণ সত্যের আলোর প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাদের আত্মা সত্যের আলো বা আল্লাহ্র হেদায়েতের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু মিথ্যার আবরণ তাদের আত্মায় সত্যের আলো প্রবেশে বাঁধা দেয়। ফলে তারা অন্ধকারে অন্ধের মত পথ হাতড়ে বেড়ায়। তাদের আত্মা চায় মুক্তির আলো, মুক্তির বাতাস। কিন্তু তারা তা পায় না। তারা মিথ্যার অন্ধকারে অন্ধ ও বধির। সত্যকে খুঁজে নেবার ক্ষমতাও তাদের নাই। সুতরাং তারা আর ফিরবে না। অর্থাৎ তাদের অনুভূতিতে সত্য ও ন্যায় বোঝার মত যোগ্যতা রইল না। কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈমানকে প্রতিহত করছে।