002.095

কস্মিনকালেও তারা মৃত্যু কামনা করবে না ঐসব গোনাহর কারণে, যা তাদের হাত পাঠিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ গোনাহগারদের সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন।
But they will never long for it because of what their hands have sent before them (i.e. what they have done). And Allâh is All-Aware of the Zâlimûn (polytheists and wrong-doers).

وَلَن يَتَمَنَّوْهُ أَبَدًا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ وَاللّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمينَ
Walan yatamannawhu abadan bima qaddamat aydeehim waAllahu AAaleemun bialththalimeena

YUSUFALI: But they will never seek for death, on account of the (sins) which their hands have sent on before them. and Allah is well-acquainted with the wrong-doers.
PICKTHAL: But they will never long for it, because of that which their own hands have sent before them. Allah is aware of evil-doers.
SHAKIR: And they will never invoke it on account of what their hands have sent before, and Allah knows the unjust.
KHALIFA: They never long for it, because of what their hands have sent forth. GOD is fully aware of the wicked.

৯৪। বল, “যদি আল্লাহ্‌র নিকট অবস্থিত আখিরাতের আবাসস্থল অন্য লোকের না হয়ে বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যই হয়ে থাকে; তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর-যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”

৯৫। কিন্তু তারা কখনও মৃত্যু কামনা করবে না, কারণ হচ্ছে তাদের [পাপ কর্ম] যা তাদের হাতসমূহ তাদের পূর্বেই [আল্লাহ্‌র নিকট] প্রেরণ করেছে ১০০। আল্লাহ্‌ পাপীদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।

১০০। ‘Which their hands have sent on before them’ মওলানা ইউসুফ আলী লাইনটি এভাবে উপস্থাপন করেছেন “[তাদের পাপ] যা তাদের হাত সমূহ তাদের পূর্বেই আল্লাহ্‌ নিকট প্রেরণ করেছে।” কথাটার অর্থ অনেক ব্যাপক, মহাকালের গর্ভে কিছুই হারায় না । আমরা মৃত্যুর পরে আল্লাহর দরবারে নীত হব। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে কৃতকর্মগুলি আমাদের মৃত্যুর বহুপূর্বে সাথে সাথেই আল্লাহ্‌র দরবারে নীত হয়। “তাদের হাত যা পূর্বে প্রেরণ করেছে”- এই কথাটি কুরআন শরীফে বহুবার বলা হয়েছে। আমাদের সু-কর্ম বা কু-কর্ম সবই আল্লাহ্‌র দরবারে তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছে যায়। এর কিছু উদাহরণ দেওয়া যায় বর্তমানে ইন্টারনেট, ফ্যাক্স ইত্যাদির সাহায্যে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ মূহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা কি করি, আমরা কি ভাবি, কি আমাদের কাজের নিয়ত সব আমাদের চিন্তাধারার সাথে সংম্পৃক্ত। আর এই চিন্তাধারা ঐ ইন্টানেটের মত মূহুর্তের মধ্যে আল্লাহ্‌র দরবারে নীত হয়, কারণ আল্লাহ্‌ বারে বারে বলেছেন যে আল্লাহ্‌ আমাদের কাজের বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা কাজ দ্বারা নয়। এখানে এবং কুরআনে বহু স্থানে বলা হয়েছে যে মানুষের সুপ্ত এবং গুপ্ত সব পাপ কার্যই আল্লাহ্‌র দরবারে তার মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়, সূরা [৭:৪০] অথবা [৮:১৪] বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে পৃথিবীতে আমাদের কৃত ভালো কাজ ও মন্দ কাজ আমাদের মৃত্যুর বহু পূর্বেই তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ্‌র দরবারে বিচারাধীন হওয়ার জন্য ফাইলবন্দী হয়ে নীত হয়। আমাদের এই কৃতকর্ম হবে আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আল্লাহ্‌র দরবারে আমাদের কৃতকর্ম সবই আমাদের মৃত্যুর পূর্বেই আমাদের এই পৃথিবীতে অবস্থান সময়েই মহান আল্লাহ্‌র দরবারে পৌঁছে যাবে। আমরা বুঝতে পারি বা নাই পারি এর ফলাফল এই পৃথিবীতেই আমাদের জীবনে পেতে শুরু করি। আমরা দেখি সৎ আল্লাহ ভীরু লোকের জীবন শান্তিতে ভরে যায়। অপরপক্ষে, জাগতিক উন্নতি সত্ত্বেও অসৎ অধার্মিক লোকের শান্তি (Bliss) আসে না কারণ আত্মার শান্তির পূর্বশর্ত হচ্ছে আত্মিক উন্নতি [Spiritual growth] আবার আত্মার [Spiritual faculty] সমৃদ্ধির পূর্বশর্তই হচ্ছে সততা ও সৎ কাজ। আল্লাহ্‌র নিয়তে যারা সততা অবলম্বন করে ও সৎ কাজ করে তাদের সেই নিয়ত ও কাজ তার মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহর দরবারে নীত হয় এবং আল্লাহ্‌ তাদের আত্মিক সমৃদ্ধি দান করেন। ফলশ্রুতিতে তারা আত্মার মাঝে শান্তি খুঁজে পায়। অপর পক্ষে যারা শুধু জাগতিক মোহে অসৎ ও অধার্মিকতার পথ অবলম্বন করে তাদের সেই নিয়ত বা চিন্তাধারাও আল্লাহ্‌র দরবারে তাদের মৃত্যুর পূর্বেই নীত হয়। ফলে তাদের আত্মিক উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে তারা ধন-সম্পদ থাকা সত্ত্বেও আত্মিক শান্তি থেকে বঞ্চিত হয় এবং এক ধরনের আত্মিক যন্ত্রণাতে ভোগে।