002.036

অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শক্র হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।
Then the Shaitân (Satan) made them slip therefrom (the Paradise), and got them out from that in which they were. We said: ”Get you down, all, with enmity between yourselves. On earth will be a dwelling place for you and an enjoyment for a time.”

فَأَزَلَّهُمَا الشَّيْطَانُ عَنْهَا فَأَخْرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِيهِ وَقُلْنَا اهْبِطُواْ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ وَلَكُمْ فِي الأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَاعٌ إِلَى حِينٍ
Faazallahuma alshshaytanu AAanha faakhrajahuma mimma kana feehi waqulna ihbitoo baAAdukum libaAAdin AAaduwwun walakum fee al-ardi mustaqarrun wamataAAun ila heenin

YUSUFALI: Then did Satan make them slip from the (garden), and get them out of the state (of felicity) in which they had been. We said: “Get ye down, all (ye people), with enmity between yourselves. On earth will be your dwelling-place and your means of livelihood – for a time.”
PICKTHAL: But Satan caused them to deflect therefrom and expelled them from the (happy) state in which they were; and We said: Fall down, one of you a foe unto the other! There shall be for you on earth a habitation and provision for a time.
SHAKIR: But the Shaitan made them both fall from it, and caused them to depart from that (state) in which they were; and We said: Get forth, some of you being the enemies of others, and there is for you in the earth an abode and a provision for a time.
KHALIFA: But the devil duped them, and caused their eviction therefrom. We said, “Go down as enemies of one another. On Earth shall be your habitation and provision for awhile.”

৩৬। অতঃপর শয়তান ৫২ তাদের [বেহেশত থেকে] পদস্খলন ঘটালো এবং তাদের [সুখ-শান্তির] অবস্থান থেকে বের করে দিল। আমি বললাম, ‘তোমরা সকলে পরস্পরের শত্রু হিসেবে নেমে যাও ৫৩। পৃথিবীতে কিছু কালের জন্য তোমাদের বসবাস ও জীবিকা রইল’ ৫৪।

৫২। [২ : ৩৪]-এ ‘ইব্‌লিশ’ এই কথাটির দ্বারা দুষ্টের বা শয়তানের ক্ষমতাকে (Power of Evil) বুঝানো হয়েছে। শয়তানের ক্ষমতা হচ্ছে ভালকে অবদমিত করার চেষ্টা ও শত্রুতা। ভালোর বিরুদ্ধে মন্দের বিদ্রোহ করা ও ভালোকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা, এই-ই হচ্ছে শয়তানের ক্ষমতা ও কার্যপ্রণালী। এখানে বেহেশ্‌তের বাগান থেকে পতনকে রূপক অর্থে প্রকাশ করলে আমরা আমাদের চারিপাশের পৃথিবীতে এর অসংখ্য উদাহরণই দেখতে পাই। পৃথিবীর মানুষ প্রতিনিয়ত লোভ-প্রলোভন বা শয়তানের কুমন্ত্রণার কাছে পরাজিত হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে সে আত্মার নিষ্পাপ অবস্থা যা সৃষ্টির আদিতে সে স্রষ্টার কাছে থেকে লাভ করেছিল, যার ফলে তার নির্মল আত্মায় অপার বেহেশতি শান্তি বিরাজ করতো সেই মানসিক অবস্থা থেকে বিচ্যুত হয়। লোভ-প্রলোভন, অন্যায় অত্যাচারের ফলে আত্মার শান্তি হয় বিঘ্নিত। আত্মা হয় মানসিক যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত ও জর্জরিত। রূপক অর্থে আমাদের মানসিক শান্তিময় অবস্থা [State of Felicity] থেকে শয়তানের ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করাই হচ্ছে বেহেশ্‌ত থেকে পৃথিবীতে পতন যা অহরহ-ই আমাদের চারিপাশে ঘটে।

৫৩। মানুষ সৎ কাজের ফলে আত্মায় বেহেশ্‌তের শান্তি অনুভব করে, অসৎ কাজের ফল হচ্ছে দোযখের যন্ত্রণা। এই যন্ত্রনা হয় আত্মায়। এখানে আদম অর্থ মানব সম্প্রদায়কে বুঝানো হচ্ছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই আদম সন্তান। এখানে আদম, ইভ, শয়তান সবাইকে পরস্পরের শত্রু হিসেবে বলা হয়েছে। অর্থাৎ শয়তানের প্রলোভনই হচ্ছে মানুষের শত্রু, আত্মার যন্ত্রণা।

৫৪। পৃথিবীর আবাসস্থল মানব সন্তানের জন্য অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে অবস্থানকালে আদম সন্তানকে তার জীবিকার জন্য তার বাঁচার জন্য অহরহ সংগ্রাম করতে হবে-এইই আল্লাহ্‌র হুকুম। সংগ্রামী জীবনের মাধ্যমেই তাকে বেঁচে থাকতে হবে এবং এর মাধ্যমেই ভালোকে গ্রহণ করে, মন্দকে প্রতিহত করে আত্মাকে বেহেশ্‌তের উপযোগী করতে হবে। পৃথিবীতে তাঁর বেঁচে থাকার সংগ্রাম হচ্ছে আত্মিক এবাদতের এবং আত্মিক উন্নতির এক অপরিহার্য অংশ।