002.006

নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না।
Verily, those who disbelieve, it is the same to them whether you (O Muhammad Peace be upon him ) warn them or do not warn them, they will not believe.

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لاَ يُؤْمِنُونَ
Inna allatheena kafaroo sawaon AAalayhim aanthartahum am lam tunthirhum la yu/minoona

YUSUFALI: As to those who reject Faith, it is the same to them whether thou warn them or do not warn them; they will not believe.
PICKTHAL: As for the Disbelievers, Whether thou warn them or thou warn them not it is all one for them; they believe not.
SHAKIR: Surely those who disbelieve, it being alike to them whether you warn them, or do not warn them, will not believe.
KHALIFA: As for those who disbelieve, it is the same for them; whether you warn them, or not warn them, they cannot believe.

০৬। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে ৩০, তুমি তাদের সতর্ক কর বা না কর, তাদের জন্য উভয়ই সমান, তারা কখনও ঈমান আনবে না।

৩০। এই আয়াতে দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। কাফের শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ্‌র আইন অমান্য করে তাদের। আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য বা হেদায়েত পেতে হলে প্রয়োজন ঐকান্তিক বিশ্বাস ও আন্তরিকতা। আন্তরিকভাবে আল্লাহ্‌র কাছে হেদায়েতের জন্য আকুতি জানাতে হবে। যে আল্লাহ্‌র কাছে আন্তরিকভাবে হেদায়েত বা সত্যপথে চলার নিশানা অনুসন্ধান করে, আল্লাহ্‌র অসীম রহমত তাকে বিধৌত করে। সত্য পথে চলার নিশানা তাদের নিকট হয় স্পষ্ট প্রতীয়মান। কিন্তু যদি কেউ অহংকারে স্ফীত হয়ে আল্লাহ্‌র আইন (God’s Law) লঙ্ঘন করে, তাকে আল্লাহ্‌ হেদায়েত করেন না। কারণ মানুষই একমাত্র প্রাণী যাকে আল্লাহ্‌ সীমিত আকারে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি (Limited free will) দান করেছেন। সত্য পথ ও ভুল পথ এর যে কোন একটা পথকে বেছে নেবার স্বাধীনতা একমাত্র মানুষেরই আছে। কারণ মানুষ হচ্ছে ‘সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব’। মানুষের শারীরিক যে চাহিদা তার সাথে প্রাণীকূলের শারীরিক চাহিদারও কোনও পার্থক্য নাই। আরাম-আয়েশ, ভাল খাদ্য, প্রজনন ইত্যাদি জৈবিক ব্যাপারে মানুষ ও প্রাণীকূলের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নাই। পার্থক্য হচ্ছে মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। নিজের সুখ ও সাচ্ছন্দ্য নিজে সৃষ্টি করে নিতে পারে। নিজের ভাল নিজে বুঝতে পারে। ইচ্ছা করলে সে চরিত্রের মাধুর্যে ফেরেশতার সমকক্ষ হতে পারে আবার ইন্দ্রিয়ের দাসে পরিণত হয়ে পশুর থেকে নিম্নস্তরে শয়তানে পরিণত হতে পারে। মানুষকে আল্লাহ্‌ খুব ‘সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি’ ( Limited free will ) দান করেছেন। যা সৃষ্টির অন্য কোন প্রাণীকে দান করা হয় নাই।

এই ‘সীমিত স্বাধীনতা’ সর্বপ্রথম হযরত আদম (আঃ) কে দেয়া হয় এবং এই সীমিত স্বাধীনতা প্রয়োগের ক্ষমতাও তাকে দেয়া হয়। নির্দেশ দান করা হয় যে নির্দিষ্ট গাছের নিকটবর্তী যেন তিনি না হন। কিন্তু আমাদের পূর্ব পুরুষ হযরত আদম (আঃ) আল্লাহ্‌ কর্তৃক দেয়া সীমিত স্বাধীনতার অপব্যবহার করেন ও প্রলোভনের কাছে আত্মসমর্পনণ করেছিলেন ফলে আল্লাহ্‌র হুকুম অমান্য করেছিলেন। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থাৎ আল্লাহ্‌ প্রদত্ত সীমিত স্বাধীনতার অপব্যবহার করে, আল্লাহ্‌র দেখানো পথকে অস্বীকার করে, আল্লাহ্‌র আইন লঙ্ঘন করে, আল্লাহ্‌ তাদের হেদায়েত করেন না। ফলস্বরূপ তাদের আধ্যাত্মিক জগত ধীরে ধীরে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। শারীরিকভাবে তাদের আল্লাহ্‌ প্রদত্ত অন্যসব দক্ষতা ও মানসিক শক্তি (Faculty of mind) অটুট থাকে। কর্মময় পৃথিবীতে হয়তো বা তারা হয় অত্যন্ত সফল কিন্তু তাদের আধ্যাত্মিক জগৎ বা বিবেক (Spiritual Faculty) হয় অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং মৃত। ফলে তাদের সত্যকে দেখার ক্ষমতা, অনুধাবন করার ক্ষমতা, বুঝতে পারার ক্ষমতা হয় বিলুপ্ত। ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য করার ক্ষমতা হয় দূরীভূত। আরও দেখুন টীকা ৯৩ [২:৮৮]