1 of 3

002.076

যখন তারা মুসলমানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলেঃ আমরা মুসলমান হয়েছি। আর যখন পরস্পরের সাথে নিভৃতে অবস্থান করে, তখন বলে, পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যা প্রকাশ করেছেন, তা কি তাদের কাছে বলে দিচ্ছ? তাহলে যে তারা এ নিয়ে পালকর্তার সামনে তোমাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। তোমরা কি তা উপলব্ধি কর না?
And when they (Jews) meet those who believe (Muslims), they say, ”We believe”, but when they meet one another in private, they say, ”Shall you (Jews) tell them (Muslims) what Allâh has revealed to you [Jews, about the description and the qualities of Prophet Muhammad Peace be upon him , that which are written in the Taurât (Torah)] , that they (Muslims) may argue with you (Jews) about it before your Lord?” Have you (Jews) then no understanding?

وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلاَ بَعْضُهُمْ إِلَىَ بَعْضٍ قَالُواْ أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ اللّهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَآجُّوكُم بِهِ عِندَ رَبِّكُمْ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
Wa-itha laqoo allatheena amanoo qaloo amanna wa-itha khala baAAduhum ila baAAdin qaloo atuhaddithoonahum bima fataha Allahu AAalaykum liyuhajjookum bihi AAinda rabbikum afala taAAqiloona

YUSUFALI: Behold! when they meet the men of Faith, they say: “We believe”: But when they meet each other in private, they say: “Shall you tell them what Allah hath revealed to you, that they may engage you in argument about it before your Lord?”- Do ye not understand (their aim)?
PICKTHAL: And when they fall in with those who believe, they say: We believe. But when they go apart one with another they say: Prate ye to them of that which Allah hath disclosed to you that they may contend with you before your Lord concerning it? Have ye then no sense?
SHAKIR: And when they meet those who believe they say: We believe, and when they are alone one with another they say: Do you talk to them of what Allah has disclosed to you that they may contend with you by this before your Lord? Do you not then understand?
KHALIFA: And when they meet the believers, they say, “We believe,” but when they get together with each other, they say, “Do not inform (the believers) of the information given to you by GOD, lest you provide them with support for their argument concerning your Lord. Do you not understand?”

৭৫। [হে বিশ্বাসী সম্প্রদায়] তোমরা কি এই আশা পোষণ কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? – যখন তাদের একদল আল্লাহ্‌র বাণী শোনে এবং তা হৃদয়ঙ্গম করার পরে; জেনে-বুঝে বিকৃত করে থাকে।

৭৬। দেখো! যখন তারা মুমিনদের সংস্পর্শে আসে, তারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ ৮৩, কিন্তু যখন তারা একান্তে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, তখন তারা বলে, ‘আল্লাহ্‌ তোমাদের যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন তোমরা কি তাদের তা বলে দেবে; যেনো ইহার দ্বারা তোমাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্‌র সামনে যুক্তি পেশ করতে পারে?’ তোমরা কি [তাদের উদ্দেশ্য] বুঝতে পার না ?

৮৩। তাৎক্ষণিকভাবে এই আয়াতে মদিনার সমসাময়িক ইহুদী সম্প্রদায়ের সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু এর আবেদন সার্বজনীন-সর্বকালের, সর্ব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য-
মদিনার মুসলিমদের ধারণা ছিল ইহুদীরা হযরত মুহম্মদ-কে (সাঃ) নবী হিসেবে সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থে মুহম্মদ (দঃ) সম্বন্ধে বলা আছে। কিন্তু মুসলমানদের এ ধারণা ছিল ভুল। তাদের ধর্মগ্রন্থে [Deut xviii-১৮] এ বর্ণিত আছে যে, ‘I will raise them up a prophet from among their brethen, like unto thee’ অর্থাৎ হযরত মুসার মত।

এই লাইনটি ইহুদীদের মধ্যে কিছু গুণী এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) হচ্ছেন আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার করা সেই নবী। ফলে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আরবেরা সেমেটিকদের স্বগোত্রভূক্ত। ইহুদীরা সেমোটিক গোত্রভূক্ত। সুতরাং ইহুদী ধর্মগ্রন্থে সঠিকভাবেই বর্ণিত হয়েছে যে, ‘তোমাদের ভ্রাতৃদের মধ্যে থেকেই হযরত মুসার মত নবী প্রেরণ করা হবে’। আর এ কথাও ঠিক যে হযরত মুহম্মদ (দঃ) ব্যতীত আর কোনও নবীই হযরত মুসার মত ছিলেন না। ওল্ড টেস্টামেন্টের পঞ্চম গ্রন্থ ‘Deuteronomy’ যা হযরত মুসার বহু পরে লেখা হয়েছিলো, তাতে বলা হয়েছে, ‘There arose not a prophet since in Israel like unto Moses, whom the lord knew face to face.’

তাই হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমনে ইহুদীরা অত্যন্ত হিংসা অনুভব করতে থাকলো। কারণ হযরত মুহম্মদকে (দঃ) হযরত মুসার প্রতিদ্বন্দী ভাবতে শুরু করলো। মুসলমানদের সাথে তারা দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে থাকলো। মদিনায় যখন ধীরে ধীরে মুসলিম কমিউনিটি বড় হতে থাকলো এবং শক্তি সংগ্রহ করতে থাকলো, তখন ইহুদীরা এমন ভান করতে থাকলো যে তারা মুসলিমদের উন্নতিতে খুশী এবং তারা তাদেরই একজন। কিন্তু সত্যিকারভাবে তাদের মনোভাব ছিল অন্য। তারা সযত্নে তাদের ধর্মগ্রন্থ বর্ণিত হযরত মুহম্মদের (দঃ) আগমন বার্তা গোপন রাখে যেনো তারা এ ব্যাপারে কখনও প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়।

ইহুদীদের এই দ্বৈত ভূমিকা সমন্বিত এই আয়াতটির সার্বজনীন ব্যাখ্যা হচ্ছে সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বসাধারণের জন্য। আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস হচ্ছে এক ধরণের নৈতিক মূল্যবোধ, এক ধরনের নীতিজ্ঞান, এক ধরণের আদর্শ। যুগে-যুগে, কালে-কালে, বিশ্বাস বা আদর্শকে টিকে থাকার জন্য জিহাদ করা হয়েছে, ক্ষমতা, শক্তি, সামাজিক মর্যাদা, প্রতিষ্ঠা, সংঘটিত সংঘ ও প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ সুযোগ সুবিধার বিরুদ্ধে। এই জিহাদে বিশ্বাস বা সদ্যনীতি বা আদর্শ যখন জয়লাভ করে তখন দেখা যায় যে, সব প্রতিকূল শক্তি বা অবিশ্বাসীরা যারা এতদিন বাধা দান করেছে তারা বন্ধুর ছদ্মবেশে, মিত্রের ছদ্মবেশে তাদের দিকে সখ্যতার হাত বাড়ায়। কিন্তু অবিশ্বাসীরা কোনও নীতিতেই বিশ্বাসী নয়, তারা সব সময়েই বিশ্বাসীদের অর্থাৎ নীতিজ্ঞান সম্পন্নদের কাফেলার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত। বন্ধুত্ব তাদের একটি ভান মাত্র।
বিশ্বাসীরা তাদের জ্ঞান ও মেধাকে আল্লাহ্‌র রাস্তায় ব্যয় করে ফলে আল্লাহ্‌ তাদের জ্ঞান ও মেধাকে [এই জ্ঞান শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান বা ধর্মের ইত্যাদির] আরও বিকশিত করেন। তাদের এই সাফল্য অবিশ্বাসীদের আরও হিংসার কারণ হয়। আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, তিনি সবই জানেন। বিশ্বাসীদের সত্যিকারভাবে জ্ঞানার্জন করতে বলা হচ্ছে এবং এর জন্য সর্বপ্রকার দুঃখ কষ্ট স্বীকার করতেও দ্বিধাবোধ না করে, এমনকি প্রয়োজনে বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যেতেও তাদের অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে। এরপর আল্লাহ্‌র হুকুম হচ্ছে বিশ্বাসীদের এই জ্ঞানকে যদি জনহিতকর কার্যে নিয়োজিত করা হয় তবে অবশ্য ছদ্মবেশধারী অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হবে। অবিশ্বাসীরা হয় নীতিজ্ঞান শূন্য, কপট ও ভণ্ড। তারা সু-সময়েই বন্ধুর ছদ্মবেশে বিশ্বাসীদের আস্থাভাজন হয়ে তাদের বিপথে চালিত করতে চায়।