আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।
And We never sent before you (O Muhammad SAW) any of the Messengers but verily, they ate food and walked in the markets. And We have made some of you as a trial for others: will you have patience? And your Lord is Ever All-Seer (of everything).
وَما أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً أَتَصْبِرُونَ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرًا
Wama arsalna qablaka mina almursaleena illa innahum laya/kuloona alttaAAama wayamshoona fee al-aswaqi wajaAAalna baAAdakum libaAAdin fitnatan atasbiroona wakana rabbuka baseeran
YUSUFALI: And the messengers whom We sent before thee were all (men) who ate food and walked through the streets: We have made some of you as a trial for others: will ye have patience? for Allah is One Who sees (all things).
PICKTHAL: We never sent before thee any messengers but lo! they verily ate food and walked in the markets. And We have appointed some of you a test for others: Will ye be steadfast? And thy Lord is ever Seer.
SHAKIR: And We have not sent before you any messengers but they most surely ate food and went about in the markets; and We have made some of you a trial for others; will you bear patiently? And your Lord is ever Seeing.
KHALIFA: We did not send any messengers before you who did not eat food and walk in the markets. We thus test you by each other; will you steadfastly persevere? Your Lord is Seer.
২০। তোমাদের পূর্বে আমি যত রাসুল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই ছিলো [ সাধারণ ] মানুষ যারা খাদ্য গ্রহণ করতো, এবং রাস্তায় চলাফেরা করতো ৩০৭৫। বস্তুতঃ আমি তোমাদের একজনকে অন্যজনের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ করেছি ৩০৭৬। [ হে মোমেনগণ ] তোমরা কি ধৈর্য্য ধারণ করবে ? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ [ সব কিছু ] দেখেন।
৩০৭৫। দেখুন উপরের আয়াত [ ২৫ : ৭ ]।
৩০৭৬। এই বিশাল বিশ্ব ভূবনের সকল কিছুই সৃষ্টি করা হয়েছে এক মহা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। কোনও কিছুই বৃথা সৃষ্টি করা হয় নাই। সমাজে ধনী, গরীব, প্রতিভাবান, সাধারণ, বুদ্ধিমান-বোকা, স্বাস্থ্যবান-রুগ্ন, উচ্চ ও নীচ শ্রেণী , ইত্যাদি বিভিন্ন বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। এই বৈষম্য অনেককে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা এর কারণ খুঁজে পায় না। এই বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়, মানুষে-মানুষে, শ্রেণীতে, জাতিতে ও পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশেও। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ এই বৈষম্যের ব্যাখা দান করেছেন। পৃথিবীতে মানব সন্তানের আগমন উদ্দেশ্যমূলক। পৃথিবীর জীবনযাপন প্রণালীর মাধ্যমে আত্মিক উন্নতি লাভ করাই হচ্ছে এই পৃথিবীতে আমাদের আগমনের উদ্দেশ্য। পরকালের বাণিজ্যে [ ২১ : ১৬ ] যে লাভ করতে পারবে সেই তো বিজয়ী। ধনীকে দেখে দরিদ্র হিংসা করবে না, কারণ ধনীর উপরে আছে সম্পদের দায়িত্ব। সম্পদ শুধু নিজের ভোগ-বিলাসের জন্য খরচ করা পরকালের বাণিজ্যে লোকসান দেয়া। তাকে আল্লাহ্ যে সম্পদ দান করেছেন তা আল্লাহ্র রাস্তায় সুষ্ঠু ব্যবহারের নিমিত্তে। এখানেই তাঁর দায় দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে তাঁর জন্য পরলোকে আছে কঠোর শাস্তি। আবার গরীবের জন্য সম্পদের দায়িত্ব না থাকলেও আছে অন্যান্য দায়িত্ব। দুঃখে বিপর্যয়ে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে সবর ধারণ করা, তার কর্তব্য। অন্যকে হিংসা করার প্রয়োজন নাই। কারণ আল্লাহ্র আদেশ পালনের মাধ্যমে যে ইহজীবনকে অতিবাহিত করতে পারে সেই তো প্রকৃত মোমেন বান্দা। এ ভাবেই মেধা, মননশক্তি , সম্পদ , ক্ষমতা, প্রতিভা যে নেয়ামতেই বান্দা ধন্য হোক না কেন তা জনহিতকর কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে প্রতিটি বান্দার অবশ্য কর্তব্য। আবার কোনও কিছু না পেলে হিংসায় বিপর্যয় ঘটানোও উচিত নয়। মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে আমরা একে অপরের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। এ কারণেই রসুলুল্লাহ্র [ সা ] শিক্ষা এই যে, যখন তোমার দৃষ্টি এমন ব্যক্তির উপরে পতিত হয় যে, ধন-সম্পদ কিংবা স্বাস্থ্য , শক্তি অথবা প্রতিপত্তিতে তোমা অপেক্ষা বেশী তখন তুমি কাল বিলম্ব না করে এমন লোকদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর , যারা এ সব বিষয়ে নিম্নস্তরের – যাতে হিংসার গুণাহ্ থেকে বেঁচে যাও। এই হাদীসকেই কবি সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত এ ভাবে প্রকাশ করেছেন,
” একদা ছিলো না যুতা চরণ যুগলে
দহিল হৃদয় মন সেই ক্ষোভানলে –
………………………………..
………………………………..
দেখি সেথা একজন পদ নাই তার
অমনি যুতার ক্ষোভ ঘুচিল আমার। ”
প্রকৃত সত্য হচ্ছে মানুষের সমাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর লোকবলের প্রয়োজন হয়। আল্লাহ্র দুনিয়ায় গরীব বা নিম্ন বলে কিছু নাই। সমাজ গড়ার জন্য সকলের প্রয়োজন আছে। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের কর্মক্ষেত্রকে স্ব-স্ব আধ্যাত্মিক উন্নতির ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করবে।