০২১.০৮৫

এবং ইসমাঈল, ই’দ্রীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন, তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী।
And (remember) Isma’îl (Ishmael), and Idris (Enoch) and Dhul-Kifl (Isaiah), all were from among As-Sâbirin (the patient ones, etc.).

وَإِسْمَاعِيلَ وَإِدْرِيسَ وَذَا الْكِفْلِ كُلٌّ مِّنَ الصَّابِرِينَ
Wa-ismaAAeela wa-idreesa watha alkifli kullun mina alssabireena

YUSUFALI: And (remember) Isma’il, Idris, and Zul-kifl, all (men) of constancy and patience;
PICKTHAL: And (mention) Ishmael, and Idris, and Dhu’l-Kifl. All were of the steadfast.
SHAKIR: And Ismail and Idris and Zulkifl; all were of the patient ones;
KHALIFA: Also, Ismail, Idris, Zal-Kifl; all were steadfast, patient.

৮৫। এবং [স্মরণ কর ] ইসমাঈল ২৭৪১, ইদ্রিস ২৭৪২, এবং যুল – কিফল এর কথা ২৭৪৩, এরা প্রত্যেকেই ছিলো দৃঢ় চরিত্রের এবং ধৈর্য্যশীল।

২৭৪১। হযরত ইব্রাহীমের বংশের সম্মানীয় দুইটি ধারা হযরত ইসহাক ও হযরত ইসমাঈল দ্বারা সূচিত হয়। হযরত ইস্‌হাকের বংশধারা যা [ ২১ : ৭২ ] আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে তা ব্যতীত এই আয়াতে হযরত ইসমাঈলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি হচ্ছেন বিশাল মুসলিম উম্মার প্রতিষ্ঠাতা। ধৈর্য্য, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তার তিনিও ছিলেন অগ্রপথিক। যুগে যুগে যারা আল্লাহ্‌র প্রিয় বান্দা তাদের আল্লাহ্‌র বিপদ বিপর্যয়ের পরীক্ষার মাধ্যমে কাছে টেনে নেন। যারা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে তারাই আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করে। হযরত ইসমাঈলের দুঃখ কষ্ট শিশু অবস্থায় শৈশবেই শুরু হয় , [ দেখুন টিকা ১৬০ এবং আয়াত ২ : ১৫৮ ] যখন তিনি নির্বাসিত হন। তিনি ধৈর্য্য , দৃঢ়তা ও সহিষ্ণুতার পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হন যখন তিনি দৃঢ় ও নির্ভিকভাবে আল্লাহ্‌র কাছে কোরবানীর জন্য প্রস্তত হন। তিনি যথার্থই ” আল্লাহ্‌র জন্য উৎসর্গীত ” বা “Sacrifice to Allah” এই উপাধির যোগ্য [দেখুন টিকা ২৫০৬ এবং আয়াত ১৯ : ৫৪ ] তাঁর ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার প্রধান বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে নিবেদিত।

২৭৪২। হযরত ইদরীসের জন্য দেখুন টিকা ২৫০৮ এবং আয়াত [ ১৯ : ৫৬ ] জীবনে তিনি উচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত ছিলেন, কিন্তু তা তাকে বিপথে চালিত করতে পারে নাই। তিনি ছিলেন সত্যের প্রতি একনিষ্ঠ। তাঁর চরিত্রের দৃঢ়তা ছিলো ধৈর্য্য ও সংকল্পের দৃঢ়তার বৈশিষ্ট্য।

২৭৪৩। “Zul-Kifl” শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ‘মালিক’ বা “দ্বিগুণ প্রতিদান” বা “অংশ” অথবা “যে দু-পরল বা দু-স্তরে কাপড় পরিধান করে।”তফসীর কার গণ মতদ্বৈত প্রকাশ করেন যে এই উপাধিটি কাকে এবং কখন দান করা হয় এবং কেন তাঁকে হযরত ইসমাঈল এবং ইদরীসদের মত নবীদের সাথে এক সাথে উল্লেখ করা হয়। মনে হয় এ ব্যাপারে “Karsten Niebuhr” এর গ্রন্থ Reisebeschreibung nach Arabien [ ii 264- 266] , যা ১৭৭৮ খৃষ্টাব্দে কোপেনহেগেন থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য। যেখানে তিনি Encyclopaedia of Islam under ‘Dhul – Kifl’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি ইরাকের Meshed Ali এবং Najaf এবং Hilla [ Babylon ] মধ্যবর্তী ছোট শহর Kefil পরিদর্শন করেন। তাঁর মতে EzeKielএর মন্দির এই শহরে অবস্থিত। ইহুদীরা তীর্থযাত্রার জন্য এই শহরে আগমন করে।

যদি আমরা “Zul – Kifl” কে গুণবাচক উপাধি হিসেবে গ্রহণ না করে “EzeKiel” এর আরবী সংস্করণ হিসেবে গ্রহণ করি তবে তা আমাদের বর্তমান প্রসঙ্গের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। “EzeKiel ” ছিলেন ইহুদীদের একজন নবী যিনি বেবীলনের রাজা নেবুচাঁদনেজার দ্বারা দ্বিতীয় বার জেরুজালেম আক্রমণের পরে [ খৃষ্ট পূর্ব ৫৯৯ শতাব্দী ] বন্দী হন। তাঁর বাণী ইংরেজী বাইবেলে [ Old Testament ] স্থান পেয়েছে। নেবুচাঁদনেজার তাকে শৃঙ্খলিত করে কারাগারে পাঠান এবং সেখানেই তাঁকে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। তিনি তাঁর এই দুঃসহ নির্যাতন ধৈর্য্য ; দৃঢ়তা ও সহিষ্ণুতার সাথে মোকাবিলা করেন এবং শত নির্যাতনেও ইহুদীদের পাপ কার্যের তীব্র নিন্দা অব্যাহত রাখেন। জ্বালাময়ী ভাষায় তিনি তাদের বিপথগামী নেতাদের সমালোচনা ও অস্বীকার করেন।

“Zul – Kifl” এর উল্লেখ আবারও কোরাণে করা হয়েছে [ ৩৮ : ৪৮ ] আয়াতে ইসমাঈল এবং আল- আইসার সাথে।