002.223

তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
Your wives are a tilth for you, so go to your tilth (have sexual relations with your wives in any manner as long as it is in the vagina and not in the anus), when or how you will, and send (good deeds, or ask Allâh to bestow upon you pious offspring) before you for your ownselves. And fear Allâh, and know that you are to meet Him (in the Hereafter), and give good tidings to the believers (O Muhammad SAW).

نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُواْ حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ وَقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّكُم مُّلاَقُوهُ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
Nisaokum harthun lakum fa/too harthakum anna shi/tum waqaddimoo li-anfusikum waittaqoo Allaha waiAAlamoo annakum mulaqoohu wabashshiri almu/mineena

YUSUFALI: Your wives are as a tilth unto you; so approach your tilth when or how ye will; but do some good act for your souls beforehand; and fear Allah. And know that ye are to meet Him (in the Hereafter), and give (these) good tidings to those who believe.
PICKTHAL: Your women are a tilth for you (to cultivate) so go to your tilth as ye will, and send (good deeds) before you for your souls, and fear Allah, and know that ye will (one day) meet Him. Give glad tidings to believers, (O Muhammad).
SHAKIR: Your wives are a tilth for you, so go into your tilth when you like, and do good beforehand for yourselves, and be careful (of your duty) to Allah, and know that you will meet Him, and give good news to the believers.
KHALIFA: Your women are the bearers of your seed. Thus, you may enjoy this privilege however you like, so long as you maintain righteousness. You shall observe GOD, and know that you will meet Him. Give good news to the believers.

২২৩। তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র স্বরূপ ২৪৯। অতএব তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যখন যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার। কিন্তু পূর্বাহ্নে তোমাদের আত্মার [কল্যাণের জন্য] কিছু সৎ কাজ করো; এবং আল্লাহ্‌কে ভয় করো এবং স্মরণ রেখো [পরকালে] তোমরা আল্লাহ্‌র সম্মুখীন হবে। যারা বিশ্বাসী তাদের [এই] সুসংবাদ দাও ২৫০।

২৪৯। ইসলামের দৃষ্টিতে যৌনজীবন অত্যন্ত পবিত্র। এই জীবন সম্বন্ধে লজ্জিত হওয়ারও কিছু নাই বা একে হালকাভাবে গ্রহণ করা উচিত নয় বা এ নিয়ে অত্যাধিক বাড়াবাড়ি করারও প্রয়োজন নাই। মানব জীবন চক্রের এ এক অপরিহার্য অংশ। এই জীবনকে আল্লাহ্‌ এভাবে বর্ণনা করেছেন স্ত্রীরা হচ্ছে শস্য ক্ষেত্র স্বরূপ। স্বামীরা সেই শস্য ক্ষেত্রে বীজ বপন (শুক্র) করবে এবং ফসল ঘরে তুলবে, এখানে সন্তান তার ফসলস্বরূপ। সুতরাং স্বীয় জমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ কৃষিকাজে যেমন জমি চাষ করা এবং ফসল বোনার নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম আছে; সেইরূপ আল্লাহ্‌ মানুষকে বলেছেন তার সময়, সুযোগ ও ইচ্ছা অনুযায়ী তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে। সে এমনভাবে তার ফসল বুনবে না যাতে তার জমির ক্ষতি হয় বা তার ফসল পরিপক্কতা লাভ করতে না পারে। এই উক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অল্প বয়সে ঘন ঘন সন্তান ধারণের ফলে বহু নারীই অকালে বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং ফলে স্বামী দ্বারা পরিত্যক্ত হয়। স্ত্রীকে বলা হচ্ছে ‘ফসলের জমি’ যা আল্লাহ্‌ তাকে ইচ্ছা বা বিবেক অনুযায়ী কর্ষণ করার অনুমতি দিয়েছেন, তার অপব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। যেনো ‘ভূমি’ অর্থাৎ স্ত্রীর কোনও ক্ষতি না হয়। শুধু যে স্ত্রীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তাই নয় ঘন ঘন সন্তান জন্মের ফলে তারা উপযুক্ত যত্ন পায় না, ফলে ভগ্ন স্বাস্থ্য এবং যত্নের অভাবে দেশের উপযুক্ত নাগরিকরূপে গড়ে উঠতে পারে না। সুতরাং ভুল কর্ষণ ও ভুল বপনের ফলে শুধু যে জমিরই ক্ষতি হয় তাই নয় উপযুক্ত পরিপুষ্ঠ ফসল লাভ থেকেও জমির মালিক বঞ্চিত হয়। এখানে ইচ্ছামত কর্ষণ করার অর্থ এই যে, স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে সহানুভূতি সম্পন্ন হবে এবং নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহার করবে। নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহারকেই আল্লাহ্‌ বলেছেন ‘তোমাদের শস্য ক্ষেত্রে যখন যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার’। অর্থাৎ বিবেকের স্বাধীনতা দেওয়া হলো। বৈবাহিক সম্পর্ক শুধুমাত্র ভোগ-উপভোগের জন্য নয়। সুন্দর শান্তিপূর্ণ জীবন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, সৎ সন্তানের জন্ম দেওয়া ও তাদের সুষ্ঠু লালন পালন এর অত্যতম উদ্দেশ্য।
[অনুবাদকের মন্তব্যঃ এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে, সঙ্গতি না থাকলে অধিক সন্তানের জন্ম না দেওয়াই উচিত। সে হিসেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বৈধ হওয়া উচিত।]
খৃষ্টান ধর্মে যেমন সংসার ধর্ম পালনকে পাপ বলে মনে করে এবং চিরকুমার থাকাকে ধার্মিকতার মাপকাঠি গণনা করে, ইসলাম ধর্ম এই মতবাদে বিশ্বাস করে না।(অস্বাভাবিক জীবনযাপন মানসিক ভারসাম্যতা নষ্ট করে) ইসলাম ধর্মে পিতা-মাতার আসন সর্বোচ্চ এবং বিবাহের ফসল প্রতিটি সন্তানই হচ্ছে পবিত্র।

২৫০। আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য পরকালে মহান আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভ। যারা বিশ্বাসী, ঈমানদার, তাদের জন্য আল্লাহ্‌ তার সান্নিধ্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এর থেকে বড় সুসংবাদ পরহেজগারদের জন্য আর কিছুই নাই। পৃথিবীর সব চাওয়া পাওয়া, লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ থেকে মুক্তি লাভ করার ফলে আত্মা সেই ক্ষমতা লাভ করে, যে ক্ষমতার ফলে সে মহান আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করবে। পরহেজগার ব্যক্তিরা সেই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন যখন তাদের আত্মা পরম আত্মার সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাবে। যারা পাপী তারা এই দিনটিকে ভয় পাবে। এই আয়াতটির সৌন্দর্য্য হচ্ছে মানব জীবনের ইন্দ্রিয়গত দিগটিকেও মহিমান্বিত করা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে আত্মিক উন্নতির সোপান স্বরূপ।