002.213

সকল মানুষ একই জাতি সত্তার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকরী হিসাবে। আর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্য কিতাব, যাতে মানুষের মাঝে বিতর্কমূলক বিষয়ে মীমাংসা করতে পারেন। বস্তুতঃ কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি; কিন্তু পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর নিজেদের পারস্পরিক জেদবশতঃ তারাই করেছে, যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়েত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদ লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন।
Mankind were one community and Allâh sent Prophets with glad tidings and warnings, and with them He sent the Scripture in truth to judge between people in matters wherein they differed. And only those to whom (the Scripture) was given differed concerning it after clear proofs had come unto them through hatred, one to another. Then Allâh by His Leave guided those who believed to the truth of that wherein they differed. And Allâh guides whom He wills to a Straight Path.

كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَاحِدَةً فَبَعَثَ اللّهُ النَّبِيِّينَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ فِيمَا اخْتَلَفُواْ فِيهِ وَمَا اخْتَلَفَ فِيهِ إِلاَّ الَّذِينَ أُوتُوهُ مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ فَهَدَى اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ لِمَا اخْتَلَفُواْ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِهِ وَاللّهُ يَهْدِي مَن يَشَاء إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
Kana alnnasu ommatan wahidatan fabaAAatha Allahu alnnabiyyeena mubashshireena wamunthireena waanzala maAAahumu alkitaba bialhaqqi liyahkuma bayna alnnasi feema ikhtalafoo feehi wama ikhtalafa feehi illa allatheena ootoohu min baAAdi ma jaat-humu albayyinatu baghyan baynahum fahada Allahu allatheena amanoo lima ikhtalafoo feehi mina alhaqqi bi-ithnihi waAllahu yahdee man yashao ila siratin mustaqeemin

YUSUFALI: Mankind was one single nation, and Allah sent Messengers with glad tidings and warnings; and with them He sent the Book in truth, to judge between people in matters wherein they differed; but the People of the Book, after the clear Signs came to them, did not differ among themselves, except through selfish contumacy. Allah by His Grace Guided the believers to the Truth, concerning that wherein they differed. For Allah guided whom He will to a path that is straight.
PICKTHAL: Mankind were one community, and Allah sent (unto them) prophets as bearers of good tidings and as warners, and revealed therewith the Scripture with the truth that it might judge between mankind concerning that wherein they differed. And only those unto whom (the Scripture) was given differed concerning it, after clear proofs had come unto them, through hatred one of another. And Allah by His Will guided those who believe unto the truth of that concerning which they differed. Allah guideth whom He will unto a straight path.
SHAKIR: (All) people are a single nation; so Allah raised prophets as bearers of good news and as warners, and He revealed with them the Book with truth, that it might judge between people in that in which they differed; and none but the very people who were given it differed about it after clear arguments had come to them, revolting among themselves; so Allah has guided by His will those who believe to the truth about which they differed and Allah guides whom He pleases to the right path.
KHALIFA: The people used to be one community when GOD sent the prophets as bearers of good news, as well as warners. He sent down with them the scripture, bearing the truth, to judge among the people in their disputes. Ironically, those who received the scripture were the ones who rejected any new scripture, despite clear proofs given to them. This is due to jealousy on their part. GOD guides those who believe to the truth that is disputed by all others, in accordance with His will. GOD guides whoever wills in a straight path.

২১৩। মনুষ্য সম্প্রদায় ছিলো একই জাতি, অতঃপর আল্লাহ্‌ নবীদের সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করতো তাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব প্রেরণ করেন। কিন্তু কিতাব প্রাপ্তদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরেও, স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার দরুন সে বিষয়ে মতভেদ করতো। তারা [অবিশ্বাসীরা] যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতো আল্লাহ্‌ তাঁর নিজ অনুগ্রহে সে বিষয়ে বিশ্বাসীদের সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।

২১৪। তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা [পরীক্ষা ব্যতীত] জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেরূপ পরীক্ষা পূর্ববর্তীগণ, যারা গত হয়েছে, তাদের করা হয়েছিলো? দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্য তাদের স্পর্শ করেছিলো এবং তারা এতটাই ভীত ও কম্পিত হয়েছিলো যে, এমনকি রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিলো, তারা [সকলেই] কেঁদে বলেছিলো, ‘কখন আল্লাহ্‌র সাহায্য আসবে?’ আঃ! অবশ্যই আল্লাহ্‌র সাহায্য [সর্বদা] অতি নিকটে।

২১৫। তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, [দান হিসেবে] কি তারা ব্যয় করবে। বল, যা ভাল ২৩৫ তাই-ই ব্যয় কর, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং পর্যটকদের জন্য। এবং তোমরা যা ভাল কাজ কর আল্লাহ্‌ তা খুব ভালভাবে জানেন।

২৩৫। দান বা Charity সম্পর্কে এখানে তিনটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। (১) কি দান করবে? (২) কাকে দান করবে? এবং (৩) কীভাবে দান করবে? এর উত্তরে বলা হয়েছে, যা কিছু ভাল, মানুষের জন্য মঙ্গলজনক, তাই-ই দানের বস্তু। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদই দানের বস্তু। অর্থ দান করা পৃথিবী সর্বাপেক্ষা সহজ কাজ। আল্লাহ্‌ প্রতিটি মানুষকে কোন না কোন নেয়ামতে ধন্য করেছেন। কাউকে দিয়েছেন মেধা, কাউকে শিল্পীমন, কাউকে প্রভাব প্রতিপত্তি, কাউকে ক্ষমতা, কাউকে অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি। যাকে যে নেয়ামত দিন না কেন সে সেই নেয়ামত আল্লাহ্‌র রাস্তায় খরচ করবে। এখানে বলা হয়েছে, “যা ভাল তাই-ই ব্যয় কর।” অর্থাৎ ফেলে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় বা যা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় তা দানের যোগ্যতা রাখে না। এ ব্যাপারে দুঃখী ব্যক্তিকে সান্ত্বনার বাণীও দান হিসেবে গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য দান নয় কারণ এই অর্থ সাহায্য তার জন্য কোনও কল্যাণ বয়ে আনবে না।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কাকে দেওয়া হবে বা কার জন্য ব্যয় করবে? এ দানে পিতামাতাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ দান যে যাকাত নয় তা বোঝা যায় এ কারণে যে, পিতা-মাতাকে যাকাত দেওয়া যায় না এবং যাকাতে সব সময়ে পরিমাণ ধার্য করা থাকে। এখানে তা নাই। সুতরাং পিতা-মাতার পর যাদের কথা বলা হয়েছে তারা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং মুসাফির। এদের মধ্যে বিচার করতে হবে কার প্রয়োজন অধিক। যার অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য। এ ব্যাপারে কেউ যদি পৃথিবীতে প্রশংসিত হওয়ার জন্য [যা স্বভাবধর্ম] যে অগ্রগণ্য দাবীদার তার দাবীকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এবং এমন লোককে দান করে যাতে সে পৃথিবীতে সবার কাছে প্রশংসা পেতে পারে, তবে তার সে দান, দান বলে গণ্য হবে না। এটা আল্লাহ্‌র চোখে জালিয়াতির সমান। যে কোনও দানকে আল্লাহ্‌ বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। দানের উদ্দেশ্য হবে দুটি (১) দান হতে হবে নিঃস্বার্থ এবং (২) গ্রহীতার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থাৎ যার প্রয়োজন অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য এই ভিত্তিতে দান করা। যদি কেউ দান করার ব্যাপারে এই দু’টি মূলনীতি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই তার দানের পিছনে নিজস্ব কোনও স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।

তৃতীয় প্রশ্ন কীভাবে দান করা হবে। এর উত্তরে বলা হয়েছে এমনভাবে দান করতে হবে যেন আমাদের অবস্থান আল্লাহ্‌র দৃষ্টির সম্মুখে, কারণ “আল্লাহ্‌ তা খুব ভালোভাবে জানেন।” আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, তিনি আমাদের নিয়ত সম্বন্ধে আমাদের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। সুতরাং তার হুকুম মেনে, তাকে খুশী করাই হচ্ছে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। যদি কেউ মনে করে বাহিরের প্রদর্শনী, বা ভান বা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বস্ত না হয়ে দান খয়রাত করে পূণ্য বা সওয়াব হাসিল করবে, তবে তারা মূর্খ। কারণ মানুষের কোনও শঠতা বা ভান বা বাহিরের প্রদর্শনী কিছুই বিশ্ব স্রষ্টার কাছে গোপন থাকে না।