002.191

আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
And kill them wherever you find them, and turn them out from where they have turned you out. And Al-Fitnah is worse than killing. And fight not with them at Al-Masjid-al-Harâm (the sanctuary at Makkah), unless they (first) fight you there. But if they attack you, then kill them. Such is the recompense of the disbelievers.

وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ وَلاَ تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّى يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ كَذَلِكَ جَزَاء الْكَافِرِينَ
Waoqtuloohum haythu thaqiftumoohum waakhrijoohum min haythu akhrajookum waalfitnatu ashaddu mina alqatli wala tuqatiloohum AAinda almasjidi alharami hatta yuqatilookum feehi fa-in qatalookum faoqtuloohum kathalika jazao alkafireena

YUSUFALI: And slay them wherever ye catch them, and turn them out from where they have Turned you out; for tumult and oppression are worse than slaughter; but fight them not at the Sacred Mosque, unless they (first) fight you there; but if they fight you, slay them. Such is the reward of those who suppress faith.
PICKTHAL: And slay them wherever ye find them, and drive them out of the places whence they drove you out, for persecution is worse than slaughter. And fight not with them at the Inviolable Place of Worship until they first attack you there, but if they attack you (there) then slay them. Such is the reward of disbelievers.
SHAKIR: And kill them wherever you find them, and drive them out from whence they drove you out, and persecution is severer than slaughter, and do not fight with them at the Sacred Mosque until they fight with you in it, but if they do fight you, then slay them; such is the recompense of the unbelievers.
KHALIFA: You may kill those who wage war against you, and you may evict them whence they evicted you. Oppression is worse than murder. Do not fight them at the Sacred Masjid, unless they attack you therein. If they attack you, you may kill them. This is the just retribution for those disbelievers.

১৯১। তাদের যেখানেই পাবে হত্যা করবে, যে স্থান থেকে তারা তোমাদের বের করেছিলো, তোমরাও তাদের সে স্থান থেকে বের করে দাও। দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা উৎপীড়ন হত্যার চেয়েও বেশী খারাপ। কিন্তু মসজিদুল হারামের নিকট তাদের সাথে যুদ্ধ করবে না ২০৫ যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা [প্রথমে] সেখানে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে। যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে; তবে তাদের হত্যা কর। যারা ঈমানের [শিখাকে] দমন করতে চায় এটাই হচ্ছে তাদের পুরস্কার ২০৬।

২০৫। ৬ষ্ঠ হিজরীতে হুদায়বিয়াতে যে ঘটনা ঘটে তারই প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাজেল হয়। যদিও এটার সময়কাল সম্বন্ধে অনেকের সন্দেহ আছে। সেই সময়ে নও-মুসলিমরা একটি সুসংগঠিত প্রভাবশালী গোত্র বা জাতিতে পরিণত। সেই সময়ে মক্কায় মুসলিমদের প্রতি অবর্ণনীয় অত্যাচার চলছে ফলে বহু মুসলিম মদিনায় হিজরত করেছেন। মক্কার কোরাইশরা এসব নও-মুসলিমদের তাদের বাড়ী ঘরে যেতে বাঁধা প্রদান করতো এমনকি নও-মুসলিমরা যখন হজ্বব্রত পালন করতে গেলেন তখনও তাদের পবিত্র মক্কা নগরী যা বিশ্বমানবের সঙ্গম স্থল, সেখানে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করা হয়। আরব প্যাগানদের মুসলমানদের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন, ঔদ্ধত্য, সীমা ছাড়িয়ে যায়। নও-মুসলমান, যারা জন্মসূত্রে আরবের নাগরিক তাদের থেকে সে নাগরিক অধিকার হরণ করে নেয়া হয়। যখন হুদায়বিয়ার প্রান্তরে মুসলমানদের পবিত্র হজ্বব্রত পালনে বাঁধাদান এবং অনমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করা হয়, তখন মুসলমান ও কোরাইশদের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বন্ধ করার জন্য হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কাবাসীরা যে শর্ত আরোপ করতে চায় তাতেই তিনি সম্মত হতে রাজী হলেন। অনেক অসুবিধার পর একটি সন্ধি চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে। উভয় পক্ষের স্বাক্ষরিত এই চুক্তিই ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামে খ্যাত। হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি শর্ত মোতাবেক হযরত (সাঃ) তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) সহ ওমরাহ আদায়ের উদ্দেশ্যে যাত্রার নিয়ত করেন। আগের বছর মক্কার কাফিররা ওমরাহ্‌ উদ্‌যাপনে বাধা প্রদান করেছিল। কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয় যে, কাফিররা হয়তো তাদের সন্ধি ও চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করবে না। যদি তারা এ বছরও বাঁধা দেয় তবে তাঁরা কী করবেন? এ প্রসঙ্গেই উল্লেখিত আয়াতে অনুমতি প্রদান করা হলো যে, যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়, তবে তোমাদেরও তার সমুচিত জবাব দেওয়ার অনুমতি থাকলো, “তাদের যেখানেই পাবে হত্যা করবে, যে স্থান থেকে তারা তোমাদের বের করেছিলো, তোমরাও তাদের সে স্থান থেকে বের করে দাও।”

কিন্তু সাধারণভাবে ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম যা সর্বদা ক্ষমা ও উদারতা শিক্ষা দেয়। পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছা, সমঝোতা ও বিশ্বস্ততায় ইসলাম বিশ্বাসী। কিন্তু তাই বলে ইসলামে অন্যায়, অত্যাচার সহ্য করার বিধান নাই। যখন ধর্ম হয় বিপন্ন, অন্যায়, অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন মুসলমানেরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এসবের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে। মুসলমানদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হবে, ধর্মের জন্য, ন্যায়ের জন্য, সত্যের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করা, এমনকি জীবন ত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ না করা। আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ কাজ, দুঃস্থের প্রতি, নিপীড়িতের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন ইত্যাদি হচ্ছে মুসলমানদের আদর্শ। যেমন আমরা দেখেছি মহানবী (সাঃ) এর জীবনে। আমরা এসবের প্রতিফলন দেখি সাহাবাদের জীবনে। তারা ছিলেন সাহসী, কর্তব্যপরায়ণ, বিশ্বস্ত। কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও একাগ্রতা ছিল তাদের বৈশিষ্ট্য। তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল সর্বশক্তি দিয়ে সত্যের জন্য, ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ করা যা ‘জেহাদ’ নামে খ্যাত। এই আয়াতে এই উপদেশই দেওয়া হয়েছে সর্বকালের সর্বযুগের মুসলমানদের জন্য।

২০৬। ‘যারা ঈমানের শিখাকে দমন করতে চায় এটাই হচ্ছে তাদের পুরষ্কার’-এখানে উপদেশ হচ্ছে কেউ যদি জোরপূর্বক তোমাদের ধর্মীয় অধিকার হরণ করতে চায়, তবে সে তোমাদের ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এরকম অবস্থায় আল্লাহ্‌র হুকুম হচ্ছে ভীত না হয়ে প্রতিদ্বন্দীর আহবান গ্রহণ করা ও ধর্ম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা।