2 of 3

065.001

হে নবী, তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না, হয়তো আল্লাহ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন।
O Prophet (SAW)! When you divorce women, divorce them at their ’Iddah (prescribed periods), and count (accurately) their ’Iddah (periods ). And fear Allâh your Lord (O Muslims), and turn them not out of their (husband’s) homes, nor shall they (themselves) leave, except in case they are guilty of some open illegal sexual intercourse. And those are the set limits of Allâh. And whosoever transgresses the set limits of Allâh, then indeed he has wronged himself. You (the one who divorces his wife) know not, it may be that Allâh will afterward bring some new thing to pass (i.e. to return her back to you if that was the first or second divorce).

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاء فَطَلِّقُوهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُوا الْعِدَّةَ وَاتَّقُوا اللَّهَ رَبَّكُمْ لَا تُخْرِجُوهُنَّ مِن بُيُوتِهِنَّ وَلَا يَخْرُجْنَ إِلَّا أَن يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ لَا تَدْرِي لَعَلَّ اللَّهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذَلِكَ أَمْرًا
Ya ayyuha alnnabiyyu itha tallaqtumu alnnisaa fatalliqoohunna liAAiddatihinna waahsoo alAAiddata waittaqoo Allaha rabbakum la tukhrijoohunna min buyootihinna wala yakhrujna illa an ya/teena bifahishatin mubayyinatin watilka hudoodu Allahi waman yataAAadda hudooda Allahi faqad thalama nafsahu la tadree laAAalla Allaha yuhdithu baAAda thalika amran

YUSUFALI: O Prophet! When ye do divorce women, divorce them at their prescribed periods, and count (accurately), their prescribed periods: And fear Allah your Lord: and turn them not out of their houses, nor shall they (themselves) leave, except in case they are guilty of some open lewdness, those are limits set by Allah: and any who transgresses the limits of Allah, does verily wrong his (own) soul: thou knowest not if perchance Allah will bring about thereafter some new situation.
PICKTHAL: O Prophet! When ye (men) put away women, put them away for their (legal) period and reckon the period, and keep your duty to Allah, your Lord. Expel them not from their houses nor let them go forth unless they commit open immorality. Such are the limits (imposed by) Allah; and whoso transgresseth Allah’s limits, he verily wrongeth his soul. Thou knowest not: it may be that Allah will afterward bring some new thing to pass.
SHAKIR: O Prophet! when you divorce women, divorce them for~ their prescribed time, and calculate the number of the days prescribed, and be careful of (your duty to) Allah, your Lord. Do not drive them out of their houses, nor should they themselves go forth, unless they commit an open indecency; and these are the limits of Allah, and whoever goes beyond the limits of Allah, he indeed does injustice to his own soul. You do not know that Allah may after that bring about reunion.
KHALIFA: O you prophet, when you people divorce the women, you shall ensure that a divorce interim is fulfilled. You shall measure such an interim precisely. You shall reverence GOD your Lord. Do not evict them from their homes, nor shall you make life miserable for them, to force them to leave on their own, unless they commit a proven adultery. These are GOD’s laws. Anyone who transgresses GOD’s laws commits an injustice against himself. You never know; maybe GOD wills something good to come out of this.

==============
সূরা তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ – ৬৫
১২ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দমাময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা : এই সূরাটি মাদানী সূরার শ্রেণীর নবম সূরা। এই সূরাতে উম্মার সামাজিক ব্যবস্থার আলোচনা করা হয়েছে। সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং এ ব্যাপারে মহিলারা যেনো নির্যাতিত না হয় সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করার প্রতি নির্দ্দেশ সম্বলিত। সমাজ জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নারী পুরুষের পারস্পরিক যৌন জীবন। এই সূরা ও পরবর্তী সূরাতে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কোন কোন অংশ আলোচনা করা হয়েছে। রাসুল (সা) বলেছেন; ” আল্লাহ্‌র চক্ষে তার বিধানের সর্বাপেক্ষা অপছন্দনীয় অংশ হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ।” পারিবারিক জীবনের ভিত্তি হচ্ছে বৈবাহিক জীবনের পবিত্রতা। কিন্তু মানুষের দুর্বলতা ও অক্ষমতা অনেক সময়েই এই জীবনের পবিত্রতাকে নষ্ট করে থাকে। কিন্তু মানুষের জীবনের উর্দ্ধে বৈবাহিক সম্পর্ক নয়। সে কারণেই এই সূরাতে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রশ্নটিকে উদ্ধত ধর্মহীনতার প্রশ্নের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে যা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।

সার সংক্ষেপ : বিবাহ বিচ্ছেদের প্রাক্কালে মহিলাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হবে, উদ্ধত ধর্মহীনতাকে আল্লাহর নিকট শাস্তির যোগ্য [ ৬৫ : ১ – ১২ ] অপরাধ।

সূরা তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ – ৬৫
১২ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দমাময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। হে নবী ৫৫০৩ ! যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দিতে চাইবে ৫৫০৪, তখন ইদ্দতকালের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক দিও ৫৫০৫, এবং [ নির্ভুল ভাবে ] ইদ্দতকাল গণনা করবে এবং তোমার প্রভু আল্লাহকে ভয় করবে ৫৫০৬। তাদেরকে তাদের বাসগৃহ থেকে বের করে দিও না। স্পষ্ট অশ্লীলতার অভিযোগ ব্যতীত তারাও যেনো বের না হয় ৫৫০৭। এগুলিই হচ্ছে আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা এবং যে আল্লাহ্‌র এই সীমারেখা লংঘন করে সে [ নিজের ]আত্মার প্রতি অত্যাচার করে। তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ্‌ এর পরে কোন উপায় করে দেবেন ৫৫০৮।

৫৫০৩। লক্ষ্য করুন এই আয়াতে নবীকে প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতের শিক্ষক ও প্রতিনিধি হিসেবে। এর পরে উম্মতের জন্য নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। অর্থাৎ, ” হে নবী ! উম্মতকে বলিয়া দাও ” বাক্যটি যার দ্বারা আল্লাহ্‌ সমগ্র মুসলিম সমাজকে সম্বোধন করেছেন।

৫৫০৪। হাদীসে আছে আল্লাহ্‌র বিধান সমূহের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ আল্লাহ্‌র চক্ষে সর্বাপেক্ষা ঘৃণ্য। বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক সম্বন্ধে সাধারণ নির্দ্দেশ দেয়া হয়েছে [ ২ : ২২৮ – ২৩২, ২৩৬ -২৩৭ ; ২৪১ ] আয়াতে এবং [ ৪ : ৩৫ ] আয়াতে। দেখুন এসব আয়াত এবং তাদের টিকা সমূহ।

৫৫০৫। ‘ইদ্দত ‘ মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদের সাথে শব্দটি জড়িত। দেখুন যা ব্যাখ্যা করা হয়েছে [ ২ : ২২৮ ] আয়াতে ও টিকা ২৫৪। সাধারণভাবে এর অর্থ হচেছ এক “নির্দ্দিষ্ট সময়কাল”।

৫৫০৬। ‘ইদ্দত ‘ বা ‘নির্দ্দিষ্ট সময়কাল ” -কে নির্ধারণ করা হয়েছে, স্ত্রীর বা অজাত সন্তানের [ যদি থাকে] এবং প্রকৃতির যৌন বিধানের স্বার্থরক্ষার জন্য। আর এভাবেই সুশীল সমাজের প্রাথমিক বুনিয়াদ সৃষ্টি করা হয়েছে। অনেক তফসীরকারগণের মতে রজঃস্রাবকালে তালাক দেয়া বৈধ নয়। দেখুন [ ২ : ২২ ] আয়াত, অনুযায়ী বলা চলে যেহেতু সময়টি নারীর এক অপবিত্র অবস্থা এবং পুরুষের জন্য কাম্য নয়। সুতারাং স্বামী স্ত্রীর কোনও মতদ্বৈতকে সে সময়ে উত্থাপন করা উচিত নয়। বিবাহের ভিত্তি-ই হচ্ছে যৌন জীবন। সুতারাং বিবাহ বিচ্ছেদের সময়ে দৃষ্টিদেয়া প্রয়োজন যে এর সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের যেনো অবমাননা না করা হয়। তাড়িত হয়ে যেনো কোনও কাজ করা না হয়। আবেগ তাড়িত অনুভূতি হচ্ছে পশুর অনুভূতি। মানুষ পশু থেকে উন্নত কারণ সে পরিচালিত হয় বিবেক দ্বারা। তালাকের ন্যায় অপছন্দের কাজের সময়ে প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ্‌র ভয়ে ভীত হয়ে বিবেকের দ্বারা পরিচালিত হয়ে প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

৫৫০৭। বৈবাহিক জীবনে ইসলাম মহিলাদের অধিকারের মূল্যদান করে। স্বামীর সম্পত্তি, বাড়ী প্রতিটি বস্তুতেই তার অধিকার ন্যায়সঙ্গত। বাড়ী অর্থ শুধুমাত্র বাসস্থানই নয়; এর অর্থ সেই বাড়ী পরিচালনার যাবতীয় খরচ, নারীর নিজের ও সন্তানদের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করা পুরুষের কর্তব্য। এই খরচ শুধু যে দাম্পত্য জীবন কালেই পুরুষ বহন করবে তা নয়, ‘ইদ্দত’ চলা কালেও তাকে বহন করতে হবে। এখানে নারীকে বলা হয়েছে তারাও যেনো এ সময়কালে বাড়ী থেকে চলে না যায়। কারণ ‘ইদ্দত’ চলা কালেও সমঝোতার সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকে, কিন্তু দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকলে সকল কিছুই ভিন্নরূপ ধারণ করতে পারে।

৫৫০৮। বিবাহ বিচ্ছেদ অপেক্ষা সমঝোতা সকল সময়েই কাম্য এবং উপযুক্ত পরিবেশে তা সম্ভবও হয়। দুপক্ষেরই অভিযোগ একটি পারিবারিক সভাতে উপস্থাপন করতে হবে, যেখানে উভয়দলের পারিবারিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন। দেখুন [ ৪ : ৩৫ ] আয়াত। পারস্পরিক দৈহিক আকর্ষণ মন্দার মুখে, বিবাহ বিচ্ছেদের বা তালাকের উচ্চারণ করা উচিত নয় [ টিকা ৩৫০৬ ]। যখন তা উচ্চারণ করা হবে তখন তার জন্য নির্দ্দিষ্ট সময়কাল থাকবে সমঝোতার জন্য। দেনমোহর শোধ করতে হবে, নারীর উপযুক্ত ভরণ পোষণের বন্দোবস্ত থাকবে হবে। সব কিছুই করতে হবে নারীর অধিকার ও সমতার ভিত্তিতে। শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা করা প্রয়োজন। আবেগ বা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে করা যে কোনও কাজকে বাধা দান করতে হবে, যেনো কেহ ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত না হয়। “হয়তো আল্লাহ্‌ এর পর কোন উপায় করে দেবেন।”