2 of 3

061.014

মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে-মরিয়ম তার শিষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যবর্গ বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল।
O you who believe! Be you helpers (in the Cause) of Allâh as said ’Iesa (Jesus), son of Maryam (Mary), to Al­Hawârîûn (the disciples): ”Who are my helpers (in the Cause) of Allâh?” Al­Hawârîeen (the disciples) said: ”We are Allâh’s helpers” (i.e. we will strive in His Cause!). Then a group of the Children of Israel believed and a group disbelieved. So We gave power to those who believed against their enemies, and they became the uppermost.

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونوا أَنصَارَ اللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّينَ مَنْ أَنصَارِي إِلَى اللَّهِ قَالَ الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ اللَّهِ فَآَمَنَت طَّائِفَةٌ مِّن بَنِي إِسْرَائِيلَ وَكَفَرَت طَّائِفَةٌ فَأَيَّدْنَا الَّذِينَ آَمَنُوا عَلَى عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا ظَاهِرِينَ
Ya ayyuha allatheena amanoo koonoo ansara Allahi kama qala AAeesa ibnu maryama lilhawariyyeena man ansaree ila Allahi qala alhawariyyoona nahnu ansaru Allahi faamanat ta-ifatun min banee isra-eela wakafarat ta-ifatun faayyadna allatheena amanoo AAala AAaduwwihim faasbahoo thahireena

YUSUFALI: O ye who believe! Be ye helpers of Allah: As said Jesus the son of Mary to the Disciples, “Who will be my helpers to (the work of) Allah?” Said the disciples, “We are Allah’s helpers!” then a portion of the Children of Israel believed, and a portion disbelieved: But We gave power to those who believed, against their enemies, and they became the ones that prevailed.
PICKTHAL: O ye who believe! Be Allah’s helpers, even as Jesus son of Mary said unto the disciples: Who are my helpers for Allah? They said: We are Allah’s helpers. And a party of the Children of Israel believed, while a party disbelieved. Then We strengthened those who believed against their foe, and they became the uppermost.
SHAKIR: O you who believe! be helpers (in the cause) of Allah, as~ Isa son of Marium said to (his) disciples: Who are my helpers in the cause of Allah? The disciples said: We are helpers (in the cause) of Allah. So a party of the children of Israel believed and another party disbelieved; then We aided those who believed against their enemy, and they became uppermost.
KHALIFA: O you who believe, be GOD’s supporters, like the disciples of Jesus, son of Mary. When he said to them, “Who are my supporters towards GOD,” they said, “We are GOD’s supporters.” Thus, a group from the Children of Israel believed, and another group disbelieved. We helped those who believed against their enemy, until they won.

১৪। হে বিশ্বাসীগণ ! তোমরা আল্লাহ্‌র [ কাজে ] সাহায্যকারী হও ৫৪৪৬। মারইয়ামের পুত্র ঈসা যেরূপে তার শিষ্যদের বলেছিলো ৫৪৪৭, ” কে [আল্লাহ্‌র কাজে ] আমার সাহায্যকারী হবে ? ” শিষ্যরা বলেছিলো, ” আমরা আল্লাহ্‌র কাজে সাহায্যকারী।” অতঃপর বণী ইসরাঈলের একদল ঈমান আনলো, এবং একদল অবিশ্বাস করলো। কিন্তু যারা ঈমান এনেছিলো, আমি তাদের শত্রুদের উপরে শক্তিশালী করেছিলাম, ফলে তারা বিজয়ী হলো ৫৪৪৮।

৫৪৪৬। আল্লাহ্‌র সাহায্য লাভের পূর্বশর্ত হচ্ছে সৎ কাজ বা আল্লাহ্‌র রাস্তায় সাহায্য করা। এটাকেই আল্লাহ্‌ পূর্ববর্তী আয়াতে বাণিজ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমরা নিঃস্বার্থভাবে শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের আশায় আত্মোৎসর্গ করবো – তবেই আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম হব। এই আয়াতে [ ৬১ : ১৪ ] বলা হয়েছে যে, হযরত ঈসার শিক্ষার নির্যাস ছিলো একই। নিউ টেস্টামেন্টে হযরত ঈসা বলছেন যে, Then said Jesus to his diciples , if any man will come after me, let him deny himself , and take up his cross and follow me.” [ Matt xvi 24 ]

৫৪৪৭। দেখুন সূরা [ ৩ : ৫২ ] আয়াত ও টিকা ৩৯২ ; বাইবেলের উল্লেখিত অংশের জন্য দেখুন উপরের টিকা। হযরত ঈসার ১২ জন্‌ শিষ্যের জন্য দেখুন [ Matt x 2- 4 ].

৫৪৪৮। ইহুদীদের একাংশ যারা প্রকৃতই সত্যে বিশ্বাসী ছিলো, তারা হযরত ঈসার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন এবং তার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করেন। কিন্তু তাদের সংখ্যা ছিলো নিতান্তই স্বল্প। বেশীর ভাগ ইহুদীরা ছিলো কঠিন হৃদয় বিশিষ্ট ; তাদের হৃদয় ছিলো সত্যের আলোর জন্য অপ্রতিরোধ্য। ফলে তারা তাদের আনুষ্ঠানিকতা ও জাতিগত অহংকারকেই ধর্ম হিসেবে আকরে থাকে, তাদের অধিকাংশ নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাবতে ভালোবাসতো, কারণ তারা মনে করতো যে, তারা হযরত ঈসাকে হত্যা করেছে ফলে তারা সত্যের অপ্রতিহত গতিকে স্তব্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু শীঘ্র তাদের সে ভুল ভেঙ্গে গেলো। কারণ ৭০ খৃষ্টাব্দে টিটো জেরুজালেমকে ধ্বংস করে দেন এবং ইহুদীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পথভ্রষ্ট ইহুদীদের কাহিনী বহু পৌরাণিক সাহিত্যের বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়। অপরপক্ষে যে সব ইহুদীরা হযরত ঈসার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করেন তারা রোমান সম্‌রাজ্যের সাথে পরিব্যপ্ত হয়ে যান। তাঁরা তাদের বিশ্বাসের আওতায় বহু নূতন জাতিকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। এর ফলে রোমান সাম্রাজ্যের মাধ্যমে খৃষ্টান ধর্মের প্রসার লাভ ঘটতে থাকে। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত খৃষ্টান ধর্ম ছিলো পৃথিবীর প্রধান ধর্ম। ইসলামের অনুসারীদেরও আল্লাহ্‌ ঘোষণা দিয়েছেন যে, তারাও যদি সত্যকে অনুসরণ করে তবে তাদেরও বিজয় সুনিশ্চিত। নিম্নলিখিত ঘটনা সমূহ এর সত্যতা প্রমাণিত করে। মোশরেক আরবদের বিরুদ্ধে ‘বদর’ হচ্ছে বিজয়ের মাইলফলক [ ২য় হিজরী ]। এর পরে ধারাবাহিকভাবে এসেছে ‘ কুদসিয়া’ [ ১৪ই হিজরী ] এবং ‘মাদাইন’ [ ১৬ইহিজরী ] এর যুদ্ধ যা ছিলো শক্তিশালী পারস্য সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে। ইয়ারমুকের যুদ্ধ ছিলো শক্তিশালী বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত সিরিয়ান খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে। একই সাম্রাজ্যের অর্ন্তভূক্ত খৃষ্টান ধর্ম অবলম্বী মিশর ও আফ্রিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয় হেলিও পোলিসে ১৯ হিজরীতে। বহিঃর্বিশ্বের এই ঘটনাগুলি হচ্ছে বিজয়ের প্রতীক স্বরূপ। প্রকৃত বিজয় হচ্ছে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিজয় যা ধীরে ধীরে অর্জিত হয় বাস্তব সত্যরূপে। ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি যা লক্ষণীয় তা হচ্ছে, কিভাবে পুরোহিত তন্ত্র বা যাজক সম্প্রদায়ের ক্ষমতা, ঔদ্ধত্যকে চূর্ণবিচূর্ণ করা হয়, কিভাবে প্রতিটি মানুষ, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বাধীনতা ও অধিকারকে সমন্বিত করা হয়, বিবাহের পবিত্রতা ও তালাকের মাধ্যমে। কিভাবে সমাজে নারীদের মর্যদা বৃদ্ধি করা হয়। মিতাচার ও সংযমকে ধর্মের অংগে পরিণত করা হয়। জ্ঞান আরোহণ ও বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সম্পদের সুষ্ঠূ বন্টনের মাধ্যমে কিভাবে অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে শক্তিশালী করা হয়েছিলো ইত্যাদি অসংখ্য দিক্‌নিদ্দের্শনার মাধ্যমে পৃথিবীকে মধ্যযুগের বর্বরতাকে অতিক্রম করে সুশীল সভ্য জগতের দ্বার প্রান্তে নিয়ে আসে ইসলামের বিজয় নিকেতন।