সপ্তপঞ্চাশত্তম অধ্যায়
যজ্ঞাগ্নিদগ্ধ নাগগণের নাম
শৌনক কহিলেন, হে সূতনন্দন! যে-সকল সর্প সর্পসত্রে দগ্ধ হইয়াছে, তাহাদিগের নামোল্লেখ কর, আমি শুনিতে অভিলাষ করি। উগ্রশ্রবাঃ উত্তর কহিলেন, হে দ্বিজোত্তম! সেই যজ্ঞে সহস্র সহস্র, প্রষুত প্রষুত, অর্ব্বুদ অর্ব্বুদ সর্পগণ বিনষ্ট হইয়াছে। বাহুল্যপ্রযুক্ত সকলের নামোল্লেখ করা অসাধ্য বোধ হইতেছে। তথাপি স্মৃতি অনুসারে কতিপয় বিষোল্বণ [অচিন্তিতপূর্ব—অভাবনীয়] প্রধান প্রধান সর্পের নাম করিতেছি, শ্রবণ করুন। পূর্ণ, শল, পাল, হলীমক, পিচ্ছল, কৌণপ, চক্র, কালবেগ, প্রকালন, হিরণ্যবাহু, শরণ, কক্ষক, কালদন্তক, ইহারা বাসুকির পুৎত্র; এই সকল সর্প এবং বাসুকির কুলজাত মহাবল-পরাক্রান্ত সহস্র সহস্র ভয়ঙ্কর সর্প মাতৃশাপে দগ্ধ হইয়াছে। পুচ্ছাণ্ডুক, মণ্ডলক, পিণ্ডসেক্তা, রভেণক, উচ্ছিখ, শরভ, ভঙ্গ, বিল্বতেজাঃ বিরোহণ, শিলী, শলকর, মূক, সুকুমার, প্রবেপন, মুদ্গর্, শিশুরোমা, সুরোমা, মহাহনু, ইহারা তক্ষকের বংশজাত; এই সকল বিষধর প্রদীপ্ত-দহনে দগ্ধ হইয়াছে। পারাবত, পারিজাত, পাণ্ডুর, হরিণ, কৃষ, বিহঙ্গ, শরভ, মেদ, প্রমোদ, সংহতাপন, ইহারা ঐরাবতকুলে জাত; এই সমস্ত নাগগণ অনলে প্রবেশ করিয়াছে। এরক, কুণ্ডল, বের্ণী, বেণীস্কন্ধ, কুমারক, বাহুক, শৃঙ্গবের, ধুর্ত্তক, প্রাতরাতক, কৌরবকুলাৎপন্ন এই সকল সর্প ভস্মসাৎ হইয়াছে। শঙ্কুবর্ণ, পিঠরক, কূঠার, মুখসেচক, পূর্ণাঙ্গদ, পূর্ণমুখ, প্রহাস, শকুনি, দরি, অমাহঠ, কামঠক, সুষেণ, মানস, ব্যয়, ভৈরব, মুণ্ডবেদাঙ্গ, পিশঙ্গ, উদ্রপারক, ঋষভ, পিণ্ডাকর, রক্তাঙ্গ, সর্ব্বসারঙ্গ, সমৃদ্ধ, পঠবাসক, বরাহক, বীরণক, সুচিত্র, চিত্রবেগিক, পরাশর, তরুণক, মণিস্কন্ধ, অরুণি, ধৃতরাষ্ট্রকুলজাত এই সকল নাগগণ ভস্মীভূত হইয়াছে। বাহুল্য প্রযুক্ত ইহাদিগের পুৎত্র-পৌৎত্রের নাম করিতে পারিলাম না। এতদ্ব্যতিরিক্ত ত্রিশিরাঃ, সপ্তশিরাঃ, দশমুণ্ড, মহাবেগবান্, পর্ব্বতাকার যোজনবিস্তীর্ণ দ্বিযোজনবিস্তীর্ণ কামবল কামরূপী অতি ভয়ঙ্কর নানাপ্রকার মহাবিষ বিষধরগণ প্রজাপতির শাপদণ্ডে নিপীড়িত হইয়া অনবরত প্রদীপ্ত-দহনে দেহত্যাগ করিয়াছে।