১৯৭তম অধ্যায়
জপকারীর জপত্রুটিজন্য গতি
যুধিষ্ঠির কহিলেন, “পিতামহ! আপনি জাপকদিগের যে গতি কীৰ্ত্তন করিলেন, ইহা ভিন্ন তাঁহাদিগের অন্য কোন গতি আছে কি তাহা কীৰ্ত্তন করুন।”
ভীষ্ম কহিলেন, “বৎস! এক্ষণে জাপকগণ যেরূপে নিরয়গামী হয়েন, তাহা কীৰ্ত্তন করিতেছি, অবহিত হইয়া শ্রবণ কর। যে জাপক পূর্ব্বোক্ত সমুদয় নিয়ম প্রতিপালন না করিয়া অপূর্ণাঙ্গ [কোন কোন অঙ্গ বাদ দিয়া] জপপরায়ণ হয়েন, যে জাপক শ্রদ্ধাবান, প্রীত ও হৃষ্ট না হইয়া জপ করেন, যে জাপক অহঙ্কারনিরত ও পরাবমানপরায়ণ হয়েন এবং যে জাপক ফলভোগলোলুপ হইয়া মোহিতচিত্তে জপানুষ্ঠান করেন তাঁহাদিগকে নিঃসন্দেহেই নিরয়গামী হইতে হয়। যে জাপক অণিমাদি ঐশ্বর্য্যে অনুরাগী হয়েন, তাঁহার সেই ঐশ্বৰ্য্যলাভরূপ নরক হইতে কদাপি নিষ্কৃতি নাই। যে জাপক বিষয়রোগে বিমোহিত হইয়া জপ করেন, তাঁহার যে যে বিষয়ে অনুরাগ থাকে, তৎসমুদয়ই লাভ হয়। যে জাপক দুর্বুদ্ধি, জ্ঞানশূন্য ও চঞ্চলচিত্ত হয়েন, তাঁহাকে চঞ্চল গতি লাভ করিতে হয়। যে জাপক বালকস্বভাব, প্রজ্ঞাবিহীন ও মোহাক্রান্ত হইয়া জপ করেন এবং যিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়াও সম্পূর্ণরূপে জপ করিতে না পারেন, তাহাদিগকে পরলোকে নরকগামী হইয়া অনুতাপ করিতে হয়।”
যুধিষ্ঠির কহিলেন, “পিতামহ! জাপকেরা ত’ স্বাভাবিক অব্যক্ত ব্রহ্মভাব অবগত হইতে পারেন, তবে তাঁহাদিগকে কি নিমিত্ত ইহলোকে পুনৰ্ব্বার জন্মগ্রহণ করিতে হয়?’
ভীষ্ম কহিলেন, “বৎস! জপক্রিয়া অতি উৎকৃষ্ট। যাঁহারা দুর্বুদ্ধিনিবন্ধন উক্তবিধ দোষসকল পরিত্যাগ না করিয়া জপ করেন, তাঁহাদিগকেই নরক প্রাপ্ত হইতে হয়।”