০৬১. বিখ্যাত দিলীপনৃপতি কথা

৬১তম অধ্যায়

বিখ্যাত দিলীপনৃপতি কথা

নারদ কহিলেন, হে সৃঞ্জয়! ইলবিলতনয় মহাত্মা দিলীপও মৃত্যুমুখে নিপতিত হইয়াছেন। ঐ মহাত্মা তত্ত্বজ্ঞানার্থ সম্পন্ন পুত্র পৌত্রশালী অযুত অযুত ব্রাহ্মণগণ দ্বারা শত শত যজ্ঞ সম্পাদন করিয়াছিলেন। ঐ ভূপাল বিবিধ যজ্ঞানুষ্ঠান করিয়া ব্রাহ্মণগণকে এই বসুপূর্ণ বসুন্ধরা প্রদান করেন। উহার যজ্ঞে পথ সমুদায় সুবর্ণময় হইয়াছিল। ইন্দ্রাদি দেবগণ ঐ মহাত্মার যজ্ঞ সময়ে ক্রীড়া করতই যেন চষাল, প্রচষাল ও হিরন্ময় যূপে অধিষ্ঠান করিয়াছিলেন। ঐ যজ্ঞে সমাগত মনুষ্যগণ অপরিমিত রাগখাণ্ডবভোজনে মত্ত হইয়া পথিমধ্যে শয়ান থাকিত। মহাত্মা দিলীপ সলিলের উপর রথারোহণে সংগ্রাম করিতেন কিন্তু তাঁহার রথ চক্রদ্বয় কদাপি সলিল মধ্যে নিমগ্ন হইত না। এই অদ্ভুত ক্ষমতা মহাত্মা দিলীপ ব্যতীত আর কাহারও ছিল না। যাহারা দৃঢ়ধন্বা, সত্যবাদী, দাক্ষিণ্য শালী মহারাজ দিলীপকে দেখিয়াছিলেন, তাহাদেরও স্বর্গলাভ হইয়াছে। মহারাজ দিলীপের আলয়ে স্বাধ্যায়ঘোষ, জ্যানির্ঘোষ এবং ‘পান কর, ভোজন কর ও আহার কর’ এই সকল শব্দ কখনই বিলুপ্ত হইত না। হে সৃঞ্জয়! তোমা অপেক্ষা সমধিক তপ, সত্য, দয়া ও দানশালী এবং তোমার পুত্র অপেক্ষা অধিক পুণ্যবান, সেই মহাত্মা দিলীপকেও কাল গ্রাসে নিপতিত হইতে হইয়াছে; অতএব তুমি অযাজ্ঞিক অধ্যয়নাদি রহিত স্বীয় পুত্রের নিমিত্ত আর অনুতাপ করিও না।