০৪. পরঞ্জয়ের কাহিনী
পূর্বকালে ক্রেতাযুগে দেবতা আর অসুরদের মধ্যে একবার তুমুল যুদ্ধ বাধে। দেবতারা অমর, মরবেন না কিন্তু বার বার পরাজিত হন। দানবরা স্বর্গরাজ্য অধিকার করে নেয়। তখন স্বর্গচ্যুত দেবতারা বিষ্ণুর আরাধনা করতে লাগলেন। বিষ্ণু প্রসন্ন হয়ে বললেন– তোমরা বার বার হেরে যাচ্ছ। আমার কথা শোন, মর্তে বিকুক্ষি নামে এক রাজা আছেন, তার পুত্র পরঞ্জয়। তার অংশে আবির্ভূত হয়ে বিনাশ করব দানবগণদের। কাজেই এখন তোমরা সেই পরঞ্জয়ের কাছে গিয়ে সাহায্য চাও।
বিষ্ণুর কথা শুনে দেবতারা মর্ত্যে গেলেন। পরঞ্জয়ের কাছে গিয়ে বললেন–হে মহারাজ, আমরা অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছি। বিষ্ণুর পরামর্শে আমরা আপনার কাছে এসেছি, আমাদের সাহায্য করুন।
দেবতাদের প্রার্থনা শুনেও পরঞ্জয় যুদ্ধে না যাওয়ার কথাই ভাবলেন। কিন্তু সরাসরি না বলবেন কেমন করে? তখন তিনি বললেন– আমি একটা শর্তে যুদ্ধ করতে যেতে পারি। যদি ইন্দ্র আমার বাহন হন, অর্থাৎ আমি ইন্দ্রের কাঁধে চড়ে যুদ্ধ করব। যদি তিনি রাজি হন তবেই যুদ্ধ করব, নতুবা যাব না।
এই অভূতপূর্ব শর্তে দেবতাগণ যারপরনাই অপমানিত বোধ করলেন। আজ তাঁরা পরাজিত হয়ে স্বর্গ-চ্যুত। তাই শত্রুবিনাশের জন্য এই শর্তে রাজি হওয়াই উচিত। তা না হলে স্বর্গরাজ্য ছেড়ে ভিখারীর মত ঘুরতে হবে।
দেবতারা সকলে রাজি হলেন। পরঞ্জয় ইন্দ্রের পিঠে চড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে চললেন। বিষ্ণুর তেজ যুক্ত হল তাঁর শরীরে। মনের সুখে পরঞ্জয় যুদ্ধ করল। দৈত্যরা মারা গেল, দেবতারা জয়ী হলেন। ইন্দ্রের কাঁধে চড়ে যুদ্ধ করেছিলেন বলে, পরঞ্জয়ের নাম কুৎস্থ হয়।