০৯১. অর্জ্জুনতনয় ইরাবানের সমরাভিযান

৯১তম অধ্যায়

অর্জ্জুনতনয় ইরাবানের সমরাভিযান

সঞ্জয় কহিলেন, “হে রাজন! এইরূপ ভয়ঙ্কর বীরক্ষয়কর যুদ্ধ উপস্থিত হইলে সুবলনন্দন শকুনি পাণ্ডবগণের প্রতি ধাবমান হইলেন। মহাবীর হার্দ্দিক্য বায়ুবেগগামী বহুসংখ্যক কাম্বোজদেশীয়, দেশজ, নদীজ, আরট্টজ [অরট্টদেশীয়], মহীজ, সিন্ধুজ, বনায়ুজ [বনায়ু দেশজ] ও তিত্তিরজ [তিত্তির দেশজাত], গিরিজ অশ্বদ্বারা পাণ্ডবসৈন্যকে আক্রমণ করিলেন। মহাবলপরাক্রান্ত অর্জ্জুনাত্মজ শ্ৰীমান ইরাবান সুবৰ্ণালীঙ্কৃত বর্ম্মাচ্ছন্ন, প্রণালীক্ৰমে অবস্থাপিত, বেগগামী তুরঙ্গ মগণের সহিত হৃষ্টমনে হার্দ্দিক্যের সৈন্যাভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন।

‘ইনি পার্থের ঔরসে নাগরাজকন্যার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। নাগরাজ ঐরাবত পক্ষিরাজ বৈনতেয়কর্ত্তৃক জামাতার লোকান্তর প্রাপ্তি হইলে অর্জ্জুনকে সন্তানবিহীনা দীনমনা স্বীয়কন্যা সম্প্রদান করিয়াছিলেন, অর্জ্জুনও কামবশবর্ত্তিনী সেই কামিনীর পাণিগ্রহণ করিলেন। হে মহারাজ! এইরূপে অর্জ্জুনতনয় ইরাবান পরক্ষেত্রে উৎপন্ন হইয়াছিলেন। তাঁহার দুরাত্মা পিতৃব্য অর্জ্জুনের প্রতি বিদ্বেষপরতন্ত্র হইয়া তাহাকে পরিত্যাগ করিলে, তিনি জননীকর্ত্তৃক নাগলোকেই পরিপালিত ও বর্দ্ধিত হইতে লাগিলেন। অনন্তর পার্থ সুরলোকে গমন করিয়াছেন শ্রবণ করিয়া রূপবান গুণসম্পন্ন সত্যপরাক্রম ইরাবান অবিলম্বে তথায় উপস্থিত হইলেন এবং কৃতাঞ্জলিপুটে পিতাকে অভিবাদন করিয়া নিবেদন করিলেন, ‘হে তাত! আমি আপনার পুত্র; আমার নাম ইরাবান।’ এই বলিয়া তিনি পার্থের সহিত তাঁহার জননীর যেরূপে সমাগম হইয়াছিল, তাহা আদ্যোপান্ত সমস্ত বর্ণন করিলেন। তখন অর্জ্জুন পূর্ব্ববৃত্তান্ত স্মরণ করিয়া আপনার অনুরূপ গুণসম্পন্ন পুত্রকে আলিঙ্গন করিয়া সাতিশয় প্রীত হইলেন এবং প্ৰসন্নমনে তাহাকে আদেশ করিলেন, “বৎস! তুমি সংগ্রামকালে আমাদিগকে সাহায্য প্রদান করিবে।” ইরাবান ‘যে আজ্ঞা’ বলিয়া বিদায়গ্ৰহণ করিলেন। এক্ষণে যুদ্ধ উপস্থিত দেখিয়া বহুসংখ্যক অশ্বের সহিত এই স্থানে আগমন করিয়াছেন।

গজগবাক্ষাদি শকুনিভ্রাতৃগণবধ

“অনন্তর তাঁহার অশ্বসকল মহাসাগরে হংসের ন্যায় সহসা রণস্থলে উপস্থিত হইয়া কৌরবদিগের মহাবেগসম্পন্ন অশ্বগণকে আক্রমণ করিল এবং পরস্পর অতিবেগে বক্ষদ্বারা বক্ষে ও নাসিকাদ্বারা নাসিকায় আঘাত করিয়া ভূতলে নিপতিত হইল। যেমন বিহঙ্গরাজ গরুড়ের পতনকালে ঘোরতর শব্দ সমুত্থিত হয়, তদ্রূপ উহাদিগের পতনসময়ে অতি দারুণ শব্দ সমুত্থিত হইয়াছিল। পরে অশ্বারোহিগণ মিলিত হইয়া পরস্পরের সংহারে প্রবৃত্ত হইল। তখন এইরূপ তুমুল সঙ্কুলযুদ্ধ উপস্থিত হইলে উভয়পক্ষীয় অশ্বসকল সাতিশয় সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিল। বীরগণ অশ্ব বিনষ্ট ও সায়কসকল নিঃশেষিত হইলে একান্ত ক্লান্ত হইয়া পরস্পর আঘাত করিয়া বিনষ্ট হইতে লাগিল। এইরূপে অশ্বসৈন্যসকল বিনষ্ট ও অল্পমাত্র অবশিষ্ট হইলে গজ, গবাক্ষ, বৃষভ, চর্ম্মবান, আৰ্জব ও শুক, শকুনির এই ছয়টি অনুজ বায়ুবেগগামী বয়স্থ সৎস্বভাব অশ্বে আরোহণ করিয়া সেই মহৎবল হইতে নিৰ্গত হইলেন। তখন শকুনি ও অন্যান্য মহাবলপরাক্রান্ত যোদ্ধৃগণ তাঁহাদিগকে নিবারণ করিতে লাগিলেন। তথাপি সেই সমস্ত ভীষণাকার সমরনিপুণ গান্ধারগণ স্বৰ্গ বা জয়াভিলাষী হইয়া হৃষ্টমনে সৈন্যগণসমভিব্যাহারে নিতান্ত দুৰ্জয় ইরাবানের সৈন্য ভেদ করিয়া তন্মধ্যে প্রবেশ করিলেন। ইরাবান তাঁহাদিগকে নিতান্ত সস্তুষ্ট দেখিয়া স্বীয় যোদ্ধৃগণকে কহিলেন, “হে যোদ্ধৃগণ! এইসকল ধাৰ্তরাষ্ট্রদিগের বীরপুরুষেরা যেরূপে বিনষ্ট হয়, তাহার উপায়বিধান কর।” তখন তাহারা ‘যে আজ্ঞা’ বলিয়া সেই সমস্ত নিতান্ত দুৰ্জয় সৈন্যগণকে বিনাশ করিতে লাগিল। অনন্তর সুবলাত্মজগণ স্বীয় সৈন্যদিগকে বিনষ্ট হইতে দেখিয়া নিতান্ত অসহিষ্ণু হইয়া পরস্পর ত্বরা প্রদর্শনপূর্ব্বক রণস্থল একান্ত ব্যাকুল ও দ্রুতগমনে ইরাবানকে বেষ্টন করিয়া প্রাসপ্ৰহারে প্রবৃত্ত হইলেন। ইরাবান প্রাসবিদ্ধ হইয়া তোদানদণ্ডাহত [করিকুম্ভভেদী অঙ্কুশাকার বেদনাদায়ক লৌহযন্ত্র] মাতঙ্গের ন্যায় নিরন্তর নিপতিত রুধিরধারায় অভিষিক্ত হইতে লাগিলেন; বহুসংখ্যক বীরগণকর্ত্তৃক বক্ষঃস্থল, পৃষ্ঠ ও উভয়পার্শ্বে সাতিশয় আহত হইয়াও ধৈৰ্য্যবলে কিছুমাত্র ব্যথিত হইলেন না; বরং ক্ৰোধাবিষ্ট হইয়া নিশিতশরে তাঁহাদিগকে বিদ্ধ ও বিমোহিত করিলেন এবং আপনার শরীর হইতে প্ৰাসসমুদয় উৎপাটন করিয়া তদ্দ্বারাই সুবলনন্দনদিগকে প্রহার করিতে লাগিলেন। পরে তাঁহাদিগকে বিনাশ করিবার বাসনায় সত্বর নিশিত আসি নিষ্কাসিত ও চর্ম্মগ্রহণ করিয়া পাদচারে ধাবমান হইলেন। সৌবলেরা পূর্ব্ববৎ বললাভ করিয়া ক্রোধাভরে ইরাবানের প্রতি গমন করিলেন। বলদৃপ্ত মহাবীর ইরাবানও খড়্গদ্বারা পাণিলাঘব প্রদর্শনপূর্ব্বক তাঁহাদিগের সন্নিহিত হইলেন। অশ্বারূঢ় সুবলনন্দনগণ মহাবেগে সঞ্চরণ করিয়াও লাঘবচারী [দ্রুত বিচরণশীল] ইরাবানকে আহত করিবার অবকাশ প্রাপ্ত হইলেন না। পরিশেষে তাঁহাকে অনেকবার লক্ষ্য করিয়া বেষ্টনপূর্ব্বক গ্রহণ [বন্দী] করিবার উপক্ৰম করিলেন। তাঁহারা সন্নিহিত হইলে ইরাবান অসিপ্ৰহারে তাঁহাদের সর্ব্বাঙ্গ ছিন্নভিন্ন করিয়া ফেলিলেন। তখন বহুবিধ ভূষণে বিভূষিত আয়ুধধারী করনিকর [ছিন্নহস্তসকল] অনবরত নিপতিত হইতে লাগিল এবং সৌবলেরাও অবিলম্বে প্রাণ পরিত্যাগপূর্ব্বক ভূতলে নিপতিত হইলেন। কেবল শকুনি বারংবার পরিরক্ষিত হইয়া এই ভয়ঙ্কর বীরবিনাশ হইতে পরিত্ৰাণ লাভ করিলেন।

কৌরবপক্ষীয় আর্য্যশৃঙ্গসহ ইরাবানের যুদ্ধ

“অনন্তর মহারাজ দুৰ্য্যোধন রোষপরবশ হইয়া বকবধনিবন্ধন ভীমসেনের সহিত জাতবৈর ঘোররূপ মায়াবী রাক্ষস আৰ্য্যশৃঙ্গকে আহ্বান করিয়া কহিলেন, “হে বীর! দেখ অর্জ্জুনের আত্মজ মহাবলপরাক্রান্ত মায়াবী ইরাবান আমার বলক্ষয় রূপ ঘোরতর অনিষ্ট করিয়াছে। তুমিও কামচারী ও মায়াস্ত্ৰবিশারদ, ভীমসেনের সহিত তোমার শত্রুভাব বদ্ধমূল রহিয়াছে; অতএব তুমি এক্ষণে ইহার সংহার করা।” তখন আৰ্য্যশৃঙ্গ যে আজ্ঞা’ বলিয়া সমরনিপুণ প্রহরণধারী সৈন্যগণ ও অবশিষ্ট দুই সহস্ৰ অশ্বে পরিবৃত হইয়া ইরাবানকে বিনাশ করিবার অভিলাষে সিংহনাদ পরিত্যাগপূর্ব্বক গমন করিল। ইরাবানও রোষপরবশ হইয়া রাক্ষসকে বধ করিবার নিমিত্ত অগ্রসর হইলেন। রাক্ষস তাঁহাকে আগমন করিতে দেখিয়া সত্বর মায়াপ্রকাশের উপক্ৰম করিতে লাগিল এবং শূলপট্টিশধারী ভয়ঙ্কর রাক্ষসে অধিষ্ঠিত [রাক্ষস অশ্বারোহিসহ]দুই সহস্ৰ মায়াময় অশ্ব সৃষ্টি করিল। সেই মায়াসৈন্য রোষাবিষ্ট ও শক্রগণের সহিত মিলিত হইয়া অচিরে পরস্পর বিনষ্ট হইল। তখন আৰ্য্যশৃঙ্গ ও ইরাবান উভয়ে রণস্থলে বৃত্র ও বাসবের ন্যায় অবস্থান করিতে লাগিলেন।

আর্য্যশৃঙ্গকর্ত্তৃক ইরাবানবধ

“অনন্তর ইরাবান যুদ্ধদুর্ম্মদ রাক্ষসকে ধাবমান দেখিয়া রোষকষায়িতলোচনে নিবারণ করিলেন এবং তাহাকে সন্নিহিত নিরীক্ষণ করিয়া খড়্গদ্বারা তাহার কার্ম্মুকচ্ছেদ ও শরসকল পাঁচ খণ্ড করিয়া ফেলিলেন। তখন রাক্ষস মায়াবলে ইরাবানকে বিমোহিত করিয়া মহাবেগে নভোমণ্ডলে সমুত্থিত হইল। কামরূপী ইরাবানও অন্তরীক্ষে উত্থিত হইয়া মায়াপ্রভাবে রাক্ষসকে বিমুগ্ধ করিয়া তাহার সর্ব্বাঙ্গ ছিন্নভিন্ন করিয়া ফেলিলেন। রাক্ষসদিগের মায়া স্বাভাবিক এবং বয়ঃক্রম ও রূপ স্বেচ্ছাধীন। এই কারণে ছিন্নভিন্নাঙ্গ আর্য্যশৃঙ্গ পুনরায় যৌবনসম্পন্ন হইয়া শোভা প্রাপ্ত হইতে লাগিল। মহাবীর ইরাবান রোষপরবশ হইয়া সুতীক্ষ্ণ পরশুদ্বারা তাহাকে বারংবার ছেদন করিতে লাগিলেন। আৰ্য্যশৃঙ্গ ছিদ্যমান [ছিন্ন] বৃক্ষের ন্যায় ঘোরতর শব্দ ও পরশুক্ষত [কুঠারদ্বারা আহত] হইয়া অনবরত রুধিরধারা বর্ষণ করিতে লাগিল; পরে শত্রুর বৃদ্ধি নিরীক্ষণপূর্ব্বক ক্রোধাবিষ্ট হইয়া সাতিশয় বেগপ্রদর্শন ও ভয়ঙ্কর আকার স্বীকার করিয়া সর্ব্বসমক্ষে ইরাবানকে ধারণ করিবার উপক্ৰম করিল। ইরাবানও রোষাভিভূত সমরানুরাগী রাক্ষসকে মায়াপরিগ্রহ করিতে দেখিয়া রোষভরে মায়া সৃষ্টি করিবার উদ্যোগ করিলে, তাঁহার মাতৃবংশীয় নাগগণ তাঁহার নিকট উপস্থিত হইল। তিনি তখন বহুসংখ্যক নাগে পরিবৃত হইয়া বেগবান অনন্তের ন্যায় অতি ভয়ঙ্কর রূপ পরিগ্রহ করিলেন। অনন্তর বহুবিধ নাগে রাক্ষসকে সমাচ্ছন্ন করিতে আরম্ভ করিলে রাক্ষস কিয়ৎক্ষণ চিন্তা করিয়া সৌপর্ণ[গরুড়]রূপ পরিগ্রহ করিয়া পন্নগদিগকে ভক্ষণ করিতে লাগিল। তদ্দর্শনে ইরাবান মোহাবিষ্ট হইলেন। রাক্ষস আৰ্য্যশৃঙ্গ তৎক্ষণাৎ সুতীক্ষ্ন অসিদ্বারা তাঁহার কুণ্ডলযুগলালঙ্কৃত, কিরীট-পরিশোভিত, পদ্মেন্দু সুন্দর [কমল ও চন্দ্রতুল্য] বদনমণ্ডল ভূতলে নিপতিত করিল। তখন ধাৰ্তরাষ্ট্র ও ভূপালগণ একান্ত হষ্টি ও নিতান্ত সন্তুষ্ট হইলেন।

কৌরবপরাক্রমে পাণ্ডবগণের ভয়সঞ্চার

“অনন্তর উভয়পক্ষীয় সেনাগণ পরস্পর মিশ্রিত হইয়া গেল। এই সন্ধুলযুদ্ধে গজ, অশ্ব ও পদাতিগণ পরস্পর মিশ্রিত হইয়া গজগণ অশ্ব, হস্তী ও পদাতিসকলকে, পদাতিসকল রথ, অশ্ব ও হস্তীদিগকে এবং রথিগণ পদাতি, রথ ও অশ্বদিগকে বিনাশ করিতে লাগিল। অর্জ্জুন আত্মজের বিনাশসংবাদ অবগত না হইয়াই ভীষ্মরক্ষক [ভীষ্মের পৃষ্ঠপোষক] ক্ষিতিপালগণকে সংহার করিতে লাগিলেন। সৃঞ্জয় ও কৌরবগণ পরস্পর বিনাশে প্রবৃত্ত হইয়া সমরানলে জীবনকে আহুতিপ্রদান করিলেন। ছিন্নবাহু, ছিন্নখড়্গ, ছিন্নকামুক ও মুক্তকেশ রথিসকল পরস্পর সমবেত হইয়া মহাযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন। মহাবীর ভীষ্ম পাণ্ডবসেনা বিকম্পিত করিয়া মর্ম্মভেদী শরনিকরে মহারথগণকে বিনাশ করিতে লাগিলেন। পাণ্ডবদিগের বহুসংখ্যক মনুষ্য, রথী, হস্তী ও গজারোহী বিনষ্ট হইল। মহাবীর ভীষ্ম, ভীমসেন, দ্রুপদ ও সাত্বতের পরাক্রম নিরীক্ষণ করিয়া সকলের অন্তঃকরণে সাতিশয় ভয়সঞ্চার হইল। যুদ্ধ অতিশয় ভীষণ হইয়া উঠিল।

“দ্রোণের পরাক্রম সন্দর্শন করিয়া পাণ্ডবদিগের অন্তঃকরণ ভয়বিহ্বল হইল এবং তাঁহারা দ্রোণের শরনিকরে নিতান্ত নিপীড়িত হইয়া কহিতে লাগিলেন, “হে বীরগণ! দ্রোণাচাৰ্য্য মহাবলপরাক্রান্ত বহুসংখ্যক বীরগণে পরিবৃত না হইয়াও একাকীই সসৈন্যে আমাদিগকে বিনাশ করিতে পারেন।” হে মহারাজ! এইরূপে অতি ভীষণ সমরানল প্রজ্বলিত হইয়া উঠিলে উভয়পক্ষীয় বীরগণ নিতান্ত অসহিষ্ণু হইয়া ক্ৰোধাভরে রাক্ষসাবিষ্ট ও ভূতাবিষ্টের ন্যায় পরস্পর যুদ্ধ করিতে লাগিল। সেই দৈত্যসমরসঙ্কাশ [দৈত্যসমরসদৃশ] বীরক্ষয়কর সংগ্রামে প্রাণরক্ষা করিতে কাহাকেও নিরীক্ষণ করিলাম না।”