দেশ-এর মতন একটা বিশাল ভারী জিনিস সবসময় পিঠে বহন করা খুব শক্ত। আমি ভারতবর্ষে জন্মেছি, জন্মসূত্রে আমি ভারতীয় এবং ভারতবাসী হিসেবে আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট। কিন্তু সর্বক্ষণই কি আমি ভারতবাসী? আমি যখন কোনও রাস্তা দিয়ে একা হেঁটে যাই, তখন আমি শুধুই একজন মানুষ, এমনকী সেই রকম অনেক সময় আমি লেখকও নই, কারুর পিতা বা সন্তান নই, নেহাতই নামহীন একজন। মানুষ যখন অন্য মানুষের কাছাকাছি আসে তখনই তার একটা পরিচয়ের দরকার হয়।
বিদেশে গেলে কিন্তু সব সময়ই ভারতীয় সেজে থাকতে হয়। সেই জন্য মাঝে-মাঝে পিঠ ব্যথা করে। এখানে যার সঙ্গেই দেখা হবে, সে-ই আমাকে ভারতের একজন প্রতিনিধি বলে ধরে নেবে। আমি যদি ঘন-ঘন চোখ পিট পিট করি, তাহলে অনেকে ভাবতে পারে যেসব ভারতীয়েরই এরকম স্বভাব! অনেকেই তো এখানে সামনাসামনি কোনও ভারতীয়কে আগে দেখেনি। ভারতীয়রা যে কত বিচিত্র ও অদ্ভুত হয় তা অন্যরা কী করে বুঝবে? আমরা দু-দিকে মাথা নেড়ে ‘না’ বোঝাই, আবার এই ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ দুদিকে মাথা নেড়ে বোঝায় ‘হ্যাঁ’। ভারতবর্ষেই বহু মানুষ ঘোর নিরামিষাশী, গো-হত্যাকে মহা পাপ মনে করে। আবার ভারতেরই বহু লোক মাছ ধরে জীবিকা অর্জন করে, উৎসবে পাঁঠা বলি দেয়, পরবের সময় পবিত্র জ্ঞানে গো-মাংস ভক্ষণ করে। এই ভারতবর্ষেই কোটি কোটি লোককে এখনও গ্রামের বাইরের দিকে থাকতে হয়, তারা অস্পৃশ্য, তারা তথাকথিত ভদ্রলোকদের কুয়ো থেকে জল তুলতে গেলে মার খায়। আমি তবে কোন ভারতবর্ষের প্রতিনিধি?
বিদেশে এসে ভারতের গৌরব বৃদ্ধিই আমার দায়িত্ব। কিন্তু আমি তো আমার দেশের সবকিছু পছন্দ করি না। আমাদের শাসক শ্রেণির বোকামি, ভারতীয় চরিত্রের ভণ্ডামি, সামাজিক বৈষম্য, এসব কথা বিদেশে এসে গোপন করে যেতে হবে?
প্রায় দিন দশেক সারগেই-এর সঙ্গে একসঙ্গে ঘোরাফেরা করছি, আমি ওকে লক্ষ করছি ভালো করে। সে একজন সোভিয়েত যুবক, বছর দেড়েক সামরিক শিক্ষা গ্রহণ করেছে, এখন বিদেশ দফতরে কাজ করে। এই সব শুনলে যে ছবিটি ভেসে ওঠে তা কিন্তু তার চরিত্রের সঙ্গে মেলে না। সে আসলে বেশ নরম স্বভাবের মানুষ, শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে উৎসাহী, খুব একটা প্র্যাকটিক্যাল বা কেজো ধাঁচের নয়। আমাদের দেশের বা পৃথিবীর যে-কোনও দেশের একজন তরুণ কবির সঙ্গে তার চরিত্রের বিশেষ কিছুই অমিল নেই।
সারগেই অবশ্য তার দেশ সম্পর্কে খুব গর্বিত। প্রায়ই সে তার দেশের সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশ বা আমেরিকার তুলনা করে এবং আমার মতামত জানতে চায়।
বিকেল বেলা ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটিতে এসে আমার এইসব কথা মনে পড়ছিল। এখানে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হচ্ছে আমাকে নিয়েই। বন্ধু রাষ্ট্র ভারত থেকে আমি অতিথি হয়ে এখানে এসেছি, তাই রিগা শহরের বন্ধু পরিষদ সংবর্ধনা জানাচ্ছে আমাকে। আমার পক্ষে এক অস্বস্তিকর অবস্থা। এখন আমার পিঠের ওপর গোটা ভারতবর্ষ।
কয়েকজন বিশিষ্ট অতিথি এসেছেন। তিনটি মেয়ে লোক-উৎসবের পোশাক পরে, অর্গান বাজিয়ে একটি গান গাইল আমাকে উদ্দেশ্য করে। গান শেষ হওয়ার পর আমি উঠে দাঁড়িয়ে কোমর ঝুঁকিয়ে মেয়ে তিনটিকে ধন্যবাদ জানালুম। ভেতরে-ভেতরে কিন্তু আমি ঘামছি। কারণ, শেষকালে আমায় একটি বক্তৃতা দিতে হবে। এসব জায়গায় কীরকম বক্তৃতা দিতে হয় সে সম্পর্কে আমার কোনও ধারণাই নেই।
সারগেই উঠে দাঁড়িয়ে মুখস্থ করা ভঙ্গিতে আমার পরিচয় জানাল। তারপর একে একে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হল উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। অধ্যাপক ইভবুলিসও এসেছেন, তাঁর হাতে ‘দেশ’ পত্রিকার সেই সাহিত্য সংখ্যাটি, যাতে রিগা শহর সম্পর্কে অধ্যাপক ভূদেব চৌধুরীর রচনাটি ছাপা হয়েছে। রচনাটির নাম ‘দূরের বন্ধু’।
ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সভাপতি এবং আরও দু-একজন ভাষণ দিলেন ভারতীয় অতিথিটিকে স্বাগত জানিয়ে। তাঁদের কণ্ঠস্বরে আমি যেন সামান্য ক্লান্তির সুর লক্ষ করলাম। বিদেশি অতিথি এলে প্রত্যেকবারই তাঁদের খুব সম্ভবত এই একই কথা বলতে হয়। এক ঘণ্টার আলাপ-পরিচয়ে পরস্পরের ভাষা আলাদা-মানুষে-মানুষে বন্ধুত্ব হওয়া সম্ভব নয়। সেই জন্য ধরাবাঁধা কথা দিয়ে আলাপ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় কী!
সমিতির পক্ষ থেকে আমাকে কিছু উপহার দেওয়া হল। লোকসঙ্গীতের একটি রেকর্ড, একটি ছোট মূর্তি এবং ল্যাটভিয়ার একটি পতাকা। এবারে আমার ভাষণ দেওয়ার পালা। উঠে দাঁড়িয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে আমি বললুম, আপনাদের এই মহান দেশে আসতে পাওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি ধন্য বোধ করছি। আপনাদের জন্য আমি সঙ্গে কোনও উপহার আনতে পারিনি, কিন্তু এনেছি উষ্ণ বন্ধুত্ব এবং আমার দেশের শুভেচ্ছা!
এবারে একটু থামলুম, সারগেই আমার কথা অনুবাদ করে দিতে লাগল। সেই সুযোগে আমি আর একখানা বেশ সারগর্ভ বাক্য ভেবে নিলুম। ক্রমশ দেখলুম, দোভাষীর মাধ্যমে বক্তৃতা করা খুব একটা শক্ত কিছু নয়। ভেবে নেওয়ার যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। তা ছাড়া আমি যা বলছি তার সঠিক অনুবাদ হচ্ছে কি না তা-ও বোঝবার উপায় নেই। অনুবাদের সুবিধের জন্য সরল এবং প্রথাসম্মত বাক্য বলাই ভালো।
অনুষ্ঠান শেষে বাইরে বেরিয়ে এসে সারগেই-কে জিগ্যেস করলুম, আমি পাস করেছি তো?
সারগেই বলল, কীসের?
আমি বললুম, মহান ভারতবর্ষের প্রতিনিধি হিসেবে তোমাদের এই মহান সোভিয়েত দেশে আমি যে বক্তৃতাটি দিলুম, সেটা ঠিকঠাক হয়েছে তো!
সারগেই হো হো করে হেসে উঠল। তারপর বলল, এইসব অনুষ্ঠান তো খানিকটা ফর্মাল হবেই। আপনার ভালো লাগেনি?
আমি বললুম, নিশ্চয়ই ভালো লেগেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ওখানকার কফি। যে মহিলা কফি বানাচ্ছিলেন, আমি লক্ষ করছিলুম, তাঁর হাতের আঙুলগুলো কী সুন্দর। অস্ফুট চাঁপা ফুলের মতন। ওই হাতের গুণেই কফি অত সুন্দর হয়েছে।
আমরা দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে লাগলুম। রিগা শহরে আজই আমাদের শেষ দিন। সন্ধেবেলা একটি কনসার্ট শুনতে যাওয়ার কথা আছে। মাঝখানের সময়টা ঘুরে বেড়ানো যায়। এখানে এসে আমরা গাড়ি নিয়েছি খুব কম। একটু হাঁটলেই পৌঁছে যাওয়া যায় নদীর ধারে। এই ক’দিনেই আমি শহরটির মূল কেন্দ্রটি, ইংরেজিতে যাকে বলে ডাউন টাউন, বেশ চিনে গেছি।
খানিকক্ষণ ঘোরাঘুরির পর সারগেই বলল, আমাকে একবার এ পি এন দফতরে যেতে হবে প্লেনের টিকিট কাটবার জন্য। আপনি কি আমার সঙ্গে সেখানে যাবেন না এখানে অপেক্ষা করবেন?
আমি একটা পার্কের মধ্যে ঢুকে পড়লুম। নিজের দেশে বিকেলবেলা কোনও পার্কের বেঞ্চে বসে অলস সময় কাটাবার সুযোগ আজকাল আমি পাই না। তিন দিকের রাস্তা দিয়ে ব্যস্ত হয়ে মানুষজন হাঁটাহাঁটি করছে, তাদের মাঝখানে চুপচাপ বসে থাকা এক চমৎকার বিলাসিতা।
সব গাছেরই নতুন পাতা গজাচ্ছে, চারদিক তাই উজ্জ্বল সবুজ। পার্কে নানানরকম ফুলের মেলা, অধিকাংশ ফুলেরই নাম জানি না। তবে টিউলিপ-ই বেশি, বিভিন্ন রঙের, লাল, হলুদ, সাদা। আর একটি ফুল চিনতে পারলুম। রডোডেনড্রন। প্যারিসে, অসীম রায় তাঁর বাড়ির বাগানে এই ফুল চিনিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ যদিও লিখেছেন, ‘‘উদ্ধত যত শাখার শিখরে রডোডেনড্রন গুচ্ছ’, কিন্তু আমি আমাদের দেশে এ ফুল কোথাও দেখিনি। উত্তরবঙ্গে, কার্শিয়াং-কালিম্পং-এর দিকে এই ফুল অনেক ফোটে বলে শুনেছি। কিন্তু আমার দেখা হয়নি।
কাছেই রাস্তায় একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। পথ চলতি লোকেরা সেখানে থেমে গিয়ে কিছু কিনছে। সেদিকে তাকিয়ে হঠাৎ একটা কথা আমার মনে পড়ল। প্রায় দিন দশেক হল আমি নিজস্ব একটি পয়সাও খরচ করিনি। সাবালক হওয়ার পর, অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে থাকা ছাড়া, আর কখনও আমার এই অবস্থা হয়নি। আমার যা কিছু প্রয়োজন, তা সবই সারগেই কিনে দিচ্ছে। তার ফলে, আমার হঠাৎ কিছু কেনার ইচ্ছে হলেও মুখ ফুটে সে কথা সারগেই-কে বলতে পারি না। এরা আমাকে নেমন্তন্ন করে এনেছে বলে কি আমার নিজস্ব পয়সাও খরচ করতে দেবে না? এরপর আমার প্যারিস ও লন্ডনে যাওয়ার কথা আছে বলে সঙ্গে কিছু ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে এসেছি। এখানকার বড়-বড় হোটেলে ডলার বা পাউন্ড দিয়ে জিনিসপত্র কেনা যায়। আমি দু-একবার সেইসব দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের পকেটে হাত দিয়ে কিছু কেনার প্রস্তাব করতেই সারগেই অতি ব্যস্ত হয়ে বলেছে, না, না, আপনি পয়সা খরচ করবেন না। আপনার কী চাই বলুন না! ফলে, সেসব জিনিস আর আমার কেনাই হয়নি। আসলে, হোটেলে স্কচ হুইস্কি দেখে আমার মাঝে-মাঝে বাসনা জেগেছে। কিন্তু সারগেই-এর মতন একটা বাচ্চা ছেলে আমাকে মদ কিনে দেবে, এ আমি মেনে নিতে পারি না। তাই সংযম দেখিয়ে আমি হুইস্কি পানের বাসনা দমন করে যাচ্ছি। সারগেই অবশ্য মাঝে-মাঝে ঠান্ডা কাটাবার ওষুধ হিসেবে ভডকা বা ব্র্যান্ডি এনে দেয় আমাকে।
একটা বেশ ফুরফুরে খুশিয়ালি বাতাস দিচ্ছে। এ দেশে এখন বসন্তকাল। এ দেশে কি পাখি কম? সেরকম পাখি তো চোখে পড়েনি। আমাদের মতন গরম দেশেই বোধহয় পাখি বেশি থাকে। শালিখ, চড়াই, ছাতারে, কাক, চিল আর শকুন, এই কটা পাখি তো কলকাতা শহরে সর্বক্ষণ থাকে। এ ছাড়া, বুলবুলি, টিয়া, দোয়েল এবং বকও প্রায়ই দেখা যায়। এখানে সেরকম পাখি নেই।
সন্ধেবেলার অনুষ্ঠানটি খুবই উপভোগ্য। বস্তুত এ পর্যন্ত যে ক’টি থিয়েটার বা অপেরা দেখেছি, সেগুলির চেয়ে এই অনুষ্ঠানটি আমার ভালো লাগল বেশি। এখানে ভাষারও অসুবিধে নেই।
অনুষ্ঠানটি ঠিক বাজনার কনসার্ট নয়, বরং নাচই বেশি। বিভিন্ন এলাকায় যে খুব প্রতিষ্ঠান আছে তাদের নাচের দলগুলির একটা প্রতিযোগিতার মতন হচ্ছে এখানে। পঁচিশ-ছাব্বিশটি দল এসেছে এরকম। সবাই তরুণ-তরুণী বা কিশোর-কিশোরী। মঞ্চের নেপথ্যে বাজনা বাজছে, আর এক একটি দল এসে নাচ দেখিয়ে যাচ্ছে। বাজনাও অনেকরকম, নাচও অনেক রকম।
ঠিক বর্ণনা করে বোঝানো যাবে না সেই নাচ কত সুন্দর। ট্রাডিশনাল বা পুরোনো নানান উৎসবের পোশাক পরে এসেছে ছেলেমেয়েরা, কত তার রং, কত তার বৈচিত্র্য। কোনও-কোনও নাচ ওয়ালজের মতন মৃদু লয়ের, কোনও-কোনও নাচ ফক্স ট্রটের মতন দ্রুত। কোনওটি নিভৃত প্রণয়ের, কোনওটি যুদ্ধযাত্রার। যে দলের নাচ বেশি ভালো হচ্ছে, দর্শকরা বেশ হাততালি দিয়ে মঞ্চে আবার ফিরিয়ে আনছে তাদের, তারা দ্বিতীয়বার নাচ দেখাচ্ছে।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আমি দেখে গেলুম সেই দৃশ্যের ঐশ্বর্য। আজকালকার প্যান্ট শার্ট আর স্কার্টের চেয়ে আগেকার পোশাক কত সুন্দর ছিল। দেখতে-দেখতে মাঝে-মাঝে আমার মন খারাপও লাগছিল। নিজের দেশের কথা মনে পড়ে। এরকম স্বাস্থ্যবান, হাস্যোজ্জ্বল ছেলেমেয়ে কোথায় আমাদের দেশে? আমাদের যুবক-যুবতীদের মধ্যে গোষ্ঠীনাচের কোনও চলনই নেই। অথচ এরকম নাচে শরীর আর মন দুটোই ভালো হয়ে যায়।
সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো জন যুবক-যুবতীর নাচের ব্যবস্থা হয়েছে এই সন্ধেবেলা। সমান সংখ্যক ছেলে ও মেয়ে। মেয়েরা যে শুধু স্বাস্থ্যবতী তাই-ই নয়, লাটভিয়ান মেয়েরা বেশ সুন্দরী। অন্যান্য দর্শকদের সঙ্গে মিশে গিয়ে আমিও আমার পছন্দমতন নাচের পর প্রবল হাততালি দিতে লাগলুম।
যে-কোনও অনুষ্ঠানের শেষেই সারগেই আমার মতামত জানতে চায়। হল থেকে বেরিয়ে সে জিগ্যেস করল, সুনীলজি, আপনার কেমন লাগল?
এর মধ্যে আমি আরও দু-চারটি রুশ শব্দ শিখে নিয়েছি। আমি জোর দিয়ে বললুম, খারাসো, খারাসো! (ভালো, খুব ভালো!) তারপর ফরাসিতে বলুম, ত্রে বিয়াঁ। তারপর ইংরিজি, হিন্দি ও বাংলায় ওই কথাগুলিই আবার বললুম।
সারগেই বলল, মনে করুন, কোনও এক এঞ্জেল এসে আপনাকে বলল, তুমি একটা মাত্র কিছু চাও। যা চাইবে তাই-ই পাবে। তাহলে, সুনীলজি, আপনি কী চাইবেন।
আমি প্রশ্নটা ফিরিয়ে দিয়ে বললুম, এরকম হলে তুমি কী চাইবে শুনি? সারগেই বলল, আমি চাইব, সময়। জীবনে এত সব ভালো ভালো জিনিস আছে। সব কিছু ভালোভাবে উপভোগ বারবার জন্য আরও অনেক সময় চাই!
আমি নিজে কী চাইব সে বিষয়ে মনঃস্থির করতে পারলুম না। হয়তো আমার কিছুই চাইবার নেই। জীবনটা যেভাবে চলছে তাই তো বেশ। ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার একদম মাথা ঘামাতে ইচ্ছে করে না। ভবিষ্যৎ যত অনিশ্চিত, তত রহস্যময়। আমি দীর্ঘজীবন কামনা করি না এইজন্য, যদি তাতে এ জীবনটা পুরোনো হয়ে যায়।