০৪২. ‘মৌন’ শব্দের তাৎপয্য ব্যাখ্যা

৪২তম অধ্যায়

‘মৌন’ শব্দের তাৎপয্য ব্যাখ্যা

ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “ভগবান! কাহার নিমিত্ত মৌন নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে, মৌন শব্দের অর্থ কি, মৌনের লক্ষণ কি; বিদ্বান ব্যক্তি মৌনদ্বারা কি প্রকারে নির্ব্বিকল্প পদ প্রাপ্ত হয়েন এবং কিরূপেই বা মৌনভাব অবলম্বন করিয়া থাকেন? আপনি এক্ষণে এই সমস্ত কীর্ত্তন করুন।” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! সমস্ত বেদ ও মন যাঁহাকে প্রাপ্ত হইতে পারে না এবং যাহা হইতে বেদ ও “অয়ং” শব্দ সমুত্থিত হইয়াছে, সেই পরব্রহ্ম মৌন বলিয়া অভিহিত ও তিনিই মৌনময়।”

বেদের পাপনাশক রহস্য

ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “ভগবান! যিনি ঋক্, যজুঃ ও সামবেদ অধ্যয়ন করিয়াছেন, তিনি পাপানুষ্ঠান করিলে পাপে লিপ্ত হয়েন কি না?” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! আমি আপনাকে সত্য কহিতেছি, ঋক, সাম ও যজুঃ কপটাচারী পুরুষকে পাপ হইতে কদাচ পরিত্রাণ করে না, প্রত্যুত যেমন পক্ষিসকল পক্ষোদ্ভেদ হইলে কুলায় পরিত্যাগ করে, তদ্রূপ বেদসকল সেই ব্যক্তিকে চরমে পরিত্যাগ করিয়া থাকে।” ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “হে বিচক্ষণ! যদি বেদসকল ধর্ম্ম ব্যতিরেকে উদ্ধার করিতে সমর্থ না হয়, তবে ব্ৰাহ্মণেরা কি নিমিত্ত বেদকে পাপনাশক বলেন?” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! এই বিশ্ব ব্রহ্মের উপাধিবিশেষ মাত্ৰ; বেদেও ইহা নিরূপিত আছে যে, ব্ৰহ্ম বিশ্ব হইতে পৃথক। সেই ব্ৰহ্মলাভার্থ তপস্যা ও যজ্ঞানুষ্ঠান অভিহিত হইয়াছে। বিদ্বান ব্যক্তি তদ্বারা পুণ্যলাভ করেন এবং সেই পুণ্যাবলে তাহার পাপসকল দূরীভূত হইলে তাহার আত্মা জ্ঞানালোকে উদ্দীপিত হইয়া থাকে। এইরূপে তিনি জ্ঞানদ্বারা পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হয়েনি; কিন্তু জ্ঞানোদয় না হইলে বিষয়লালসা ক্রমশঃ পরিবর্ধিত হইয়া উঠে। ইহলোকে যেসকল পাপপুণ্যের অনুষ্ঠান করা যায়, পরকালে তাহার ফলভোগ করিয়া পুনরায় এই কর্ম্মক্ষেত্রে আগমন করিতে হয়। ইহলোকে যেসকল তপানুষ্ঠান করা যায়, পরলোকে তাহার ফলভোগ করিতে হয়; কিন্তু এই সংসার কেবল অবশ্যকর্ত্তব্য তপানুষ্ঠাননিরত বিদ্বান ব্রাহ্মণগণের ফলভোগের স্থান বলিয়া নির্দ্দিষ্ট আছে।”

তপস্যার প্রশংসা

ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “হে সনৎসুজাত! একমাত্র তপস্যা কি প্রকারে সমৃদ্ধ ও অসমৃদ্ধ হইয়া থাকে, আপনি তাহা কীর্ত্তন করুন।” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! দোষ স্পৰ্শ শুন্য তপস্যা মোক্ষসাধন; এই নিমিত্ত উহা সমৃদ্ধ আর দম্ভপ্রদর্শক তপস্যা অসমৃদ্ধ হইয়া থাকে। হে মহারাজ! আপনি যেসকল কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন, সে সমস্তই তপোমূলক; বেদবেত্তারা কেবল তপস্যাদ্ধারা অমৃতলাভ করিয়া থাকেন।”

ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “ভগবন! ব্ৰহ্মজ্ঞানের সাধন দোষম্পর্শশূন্য তপস্যা অবগত হইয়াছি; এক্ষণে তপস্যার দোষ কি প্রকার, তাহা সবিশেষ কীর্ত্তন করুন।” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! ক্ৰোধপ্রভৃতি দ্বাদশ ও আত্মশ্লাঘাপ্রভৃতি ত্ৰয়োদশ নৃশংসাচার তপস্যার দোষ বলিয়া অভিহিত হয়। শাস্ত্রে দ্বিজাতিগণের যাহা গুণ বলিয়া নির্দ্দিষ্ট আছে, সেই ধর্ম্মাদি দ্বাদশ পিতৃগণেরও গুণ বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে। কাম, ক্ৰোধ, লোভ, মোহ, বিধিৎসা [অতৃপ্তি—উত্তরোত্তর বর্দমানা প্রাপ্তির ইচ্ছা], নির্দয়তা, অসূয়া, মান, শোক, স্পৃহা, ঈৰ্ষা ও জুগুপ্সা [নিন্দা]—এই দ্বাদশটি দোষ; অতএব যত্নসহকারে ইহা পরিত্যাগ করিবে। যেমন ব্যাধ মৃগদিগকে বধ করিবার নিমিত্ত অবসর অনুসন্ধান করিয়া থাকে, তদ্রূপ। এইসকল দোষ প্রত্যেক মনুষ্যকেই আক্রমণ করিবার নিমিত্ত সতত অবসর অনুসন্ধান করে। যাহারা মহাসঙ্কট সমুপস্থিত হইলেও কদাচ ভীত হয় না, সেই সমস্ত পাপস্বভাবসম্পন্ন মনুষ্যেরা আত্মশ্লাঘা, পরদারাদিভোগেচ্ছা, অবমাননা, অকারণ ক্ৰোধ, চপলতা এবং সামর্থ্য সত্ত্বেও প্রতিপাল্যবৰ্গকে প্রতিপাল না করা-এই ছয়প্রকার পাপাচরণ করিয়া থাকে। যে ব্যক্তি বনিতাসম্ভোগই পুরুষাৰ্থ জ্ঞান করিয়া নিতান্ত দুর্ব্ববস্থিত হয়, যে ব্যক্তি অত্যন্ত অহঙ্কৃত, যে ব্যক্তি দান করিয়া অনুতাপ করে, যে ব্যক্তি প্ৰাণান্তেও ধন ব্যয় করে না, যে ব্যক্তি পূর্ব্বতন রাজাদিগের অপেক্ষা প্ৰজাগণের নিকট অধিক কর গ্রহণ করে, যে ব্যক্তি পরের পরাভব দেখিয়া সুখী হয় এবং যে ব্যক্তি ভাৰ্য্যান্দ্বেষী—এই সাত ব্যক্তি নৃশংসমধ্যে পরিগণিত হইয়া থাকে।

“ধর্ম্ম, সত্য, ইন্দ্ৰিয়নিগ্ৰহ, তপস্যা, আমাৎসৰ্য্য, হীং [লাজ], তিতিক্ষী, অনসূয়া, যজ্ঞ, দান, ধূতি ও বেদাধ্যয়ন—এই দ্বাদশটি ব্রাহ্মণের ব্ৰত। যিনি এই দ্বাদশ ব্রতসাধনে সমর্থ হয়েন, তিনি সমস্ত পৃথিবী শাসন করিতে পারেন; অধিক কি, যিনি এই দ্বাদশটির মধ্যে তিনটি, দুইটি অথবা একটি ব্ৰতও সাধন করেন, তিনি অবশ্যই অলৌকিক ঐশ্বর্য্যশালী হইয়া উঠেন। ইন্দ্ৰিয়নিগ্ৰহ, ত্যাগ ও তত্ত্বানুসন্ধান মুক্তির আধার। মনীষী ব্রাহ্মণগণ এই তিনটি গুণকে সত্যপ্রধান বলিয়া কীর্ত্তন করিয়া থাকেন। দাম অষ্টাদশগুণসম্পন্না বৈদিক কাৰ্য্য ও উপবাসপ্রভৃতি ব্ৰতাদির প্রতিকূলতাচরণ, অমৃত, অসূয়া, কাম, ধনোপার্জ্জনাৰ্থ নিতান্ত যত্ন, স্পৃহা, ক্ৰোধ, শোক, তৃষ্ণা, লোভ, পিশুনতা [খলতা], মাৎসৰ্য্য, হিংসা, পরিতাপ, সৎকর্মে অনভিলাষ, কর্ত্তব্যবিস্মরণ, পর্যাক্রোশ ও আপনার প্রতি মহত্ববুদ্ধি—এই সকল দোষ হইতে যিনি বিমুক্ত হইয়াছেন, সুধালোক তাঁহাকে দমগুণসম্পন্ন বলিয়া থাকেন। মদ এই অষ্টাদশ দোষসম্পন্ন। মদের বিপরীতই দম।

“প্ৰথম, সম্পদলাভে হর্ষ প্রকাশ না করা, দ্বিতীয়, যজ্ঞহোমাদির অনুষ্ঠান ও তাড়াগ-খননাদি, তৃতীয়, বৈরাগ্যবশতঃ কামত্যাগ্ন, চতুর্থ নানাবিধ গুণ ও দ্রব্যসম্পন্ন হওয়া এবং অপ্রিয় উপস্থিত হইলে কদাচ ব্যথিত না হওয়া, পঞ্চম, অভিলষিত কলাত্র ও পুত্ৰগণকে কদাচ যাচ্ঞা না করা এবং, ষষ্ঠ, যোগ্য ব্যক্তি যাচ্ঞা করিলে তাহার অভিলাষ পূর্ণ করা—এই ষড়্বিধ ত্যাগ শ্রেয়স্কর। ইহার মধ্যে তৃতীয় নিতান্ত দুষ্কর, কিন্তু তদ্বিষয়ের অনুষ্ঠান করিলে দুঃখনাশ ও দ্বৈতভাগ বিদূরিত হয়। স্বেচ্ছানুসারে উপভোগসামগ্ৰী পরিত্যাগ করিলেই নিষ্কাম হইয়া থাকে; কিন্তু উপভোগ করিলে কদাচ কামের উপশম হয় না। কর্ম্ম সম্পন্ন না হইলে দুঃখ বা গ্লানি প্রকাশ করা অনুচিত। যিনি উক্ত ষড়্বিধ ত্যাগদ্বারা প্ৰমাদী না হয়েন, তিনি সত্য, ধ্যান, সমাধান, তত্ত্বজিজ্ঞাসা, বৈরাগ্য, অস্তেয়, ব্ৰহ্মচৰ্য্য ও অপ্রতিগ্রহ-এই আটটি গুণসম্পন্ন হইয়া থাকেন। এইরূপে ত্যাগী ও অপ্রমাদের আটটি গুণ আর প্রমাদের আটটি দোষ। সেই সমস্ত দোষ পরিত্যাগ করা কর্ত্তব্য; মানব পাঁচ ইন্দ্ৰিয়, মন এবং অতীত ও অনাগত প্ৰমাদ হইতে মুক্ত হইলে সুখী হয়। হে মহারাজ! আপনি সত্যপরায়ণ হউন, লোকসকল সত্যেই প্রতিষ্ঠিত আছে এবং উহাদিগের সত্যপ্রধান বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়া থাকে এবং সত্যই মুক্তির আধার। দোষসমুদয় পরিহার করিয়া তপানুষ্ঠানব্রতে দীক্ষিত হইবে। বিধাতা এইরূপ বিধান করিয়াছেন যে, সত্যই সাধুলোকের একমাত্ৰ ব্ৰত। হে রাজন! এইসমস্ত দোষবিহীন ও এইসকল গুণসম্পন্ন তপস্যাই সমৃদ্ধ তপস্যা। আপনি আমাকে যাহা জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই জন্মমৃত্যুজরাপহারী পাপহর পবিত্র বিষয় সংক্ষেপে কীর্ত্তন করিলাম।”

বেদের প্রকারভেদ-বেদবেদ্য বিষয়

ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “ভগবন! ইতিহাস-পুরাণাদি অন্তর্গত করিয়া বেদ পাঁচপ্রকার অভিহিত হইয়া থাকে, কিন্তু কেহ চতুর্ব্বেদ, কেহ ত্ৰিবেদ, কেহ দ্বিবেদ, কেহ একবেদ, কেহ বা আপনাকে বেদশূন্য বলিয়া নির্দ্দেশ করেন, তন্মধ্যে কোন ব্যক্তিকে ব্রাহ্মণ বলিতে পারা যায়?” সনৎসুজাত কহিলেন, “মহারাজ! একমাত্র সত্যস্বরূপ বেদ্যের অপরিজ্ঞানার্থ বেদ বহুবিধা উপকল্পিত হইয়াছে, ফলতঃ ব্ৰহ্মলাভ হওয়া নিতান্ত দুর্ঘট। কেহ কেহ সত্যস্বরূপ বেদ্যকে সবিশেষ পরিজ্ঞাত না হইয়া আপনাকে প্রাজ্ঞ বলিয়া জ্ঞান করিয়া থাকেন এবং বাহ্য সুখভোগে দান, অধ্যয়ন ও যজ্ঞানুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হয়েন। যাহারা পরমানন্দলাভ হইতে প্রচ্যুত হইয়াছে, তাহাদিগের সামান্য আনন্দলাভের অভিলাষ হয়, পরে তাহারা বেদবচনের মন্ত্রগ্রহণ করিয়া যাগযজ্ঞে দীক্ষিত হইয়া থাকে। কেহ মানস, কেহ বাক্য এবং কেহ বা কর্ম্মদ্বারা যজ্ঞানুষ্ঠান করেন; কিন্তু যিনি তদ্বিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হইয়া উঠেন, তিনি ব্ৰহ্মলোকাদি প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। চিত্তের একাগ্ৰতা না হইলে বাকসংযমাদি বিষয়ে মনোনিবেশ করিবে, কিন্তু তাহার ফল নিত্য নহে, এই নিমিত্ত সাধুলোকেরা সত্যেরই আশ্রয় গ্রহণ করিয়া থাকেন।

“জ্ঞানের ফল প্রত্যক্ষ, দেখুন যে ব্রাহ্মণ বহু অধ্যয়ন করেন, তাহাকে বহুপাঠী বলে। তপস্যার ফল লোকে প্রাপ্ত হইয়া থাকে। হে মহারাজ! কেহ কেবল অধ্যয়নদ্বারা প্রকৃত ব্ৰাহ্মণ হইতে পারে না, কিন্তু যিনি সত্য হইতে প্রচ্যুত না হয়েন, তিনিই ব্ৰাহ্মণ। পূর্ব্বে মহামুনি অথর্ব্ব ও অন্য মহর্ষিগণ যাহা প্রকাশ করিয়াছেন, তাহার নাম উপনিষদ ও তাঁহারাই উপনিষদ্বেত্তা। কিন্তু যাহারা বেদধ্যয়নে পরাঙ্মুখ, তাহারা বেদবেদ্য বস্তুর তত্ত্ব কিছুমাত্র অবগত হইতে সমর্থ হয় না। বেদ ব্ৰহ্মজ্ঞানের নিরপেক্ষ কারণ, বেদবেত্তারা সেই জ্ঞানদ্বারা সত্যস্বরূপ ব্ৰহ্মলাভ করিয়া থাকেন। কেহ বেদাৰ্থ অনুধাবন করিতে সমর্থ হয়, কেহ বা অসমর্থ হইয়া থাকে। যে ব্যক্তি বেদজ্ঞ, তিনি বেদবেদ্য বিষয় পরিজ্ঞাত নহেন, কিন্তু যিনি সত্যনারায়ণ, তিনিই সেই বেদবেদ্য পরামাত্মাকে জ্ঞাত হইতে পারেন।

“যেমন কোন প্রসিদ্ধ মহীরুহের শাখা প্রতিপদচন্দ্রের কলার জ্ঞানবিষয়ে সাহায্য করিয়া থাকে, তদ্রূপ বেদ পরমপুরুষাৰ্থস্বরূপ সত্যের জ্ঞানবিষয়ে সহায়তা করে।

“যিনি বাক্যার্থবৰ্ণনকুশল, বিচক্ষণ এবং ছিন্নসংশয় হইয়া অন্যের সংশয় অপনোদন করিতে সমর্থ হয়েন, তিনি ব্ৰাহ্মণ। কি উত্তর কি দক্ষিণ, কি পূর্ব্ব কি পশ্চিম, কি উৰ্দ্ধ কি অধঃ, কি দিক কি বিদিক, কি প্ৰাণময়াদি পঞ্চকোষ [পঞ্চকোষ-অন্নময় প্রাণময়, মনোময়, বিজ্ঞানময়, আনন্দময়], কোন স্থানেই তাঁহার অনুসন্ধান করিবে না। তপস্বী বেদ অনুসন্ধান না করিয়া সেই পরমাত্মাকে সন্দর্শন করিয়া থাকেন। তূষ্ণীম্ভাব অবলম্বন করিয়া তাঁহার উপাসনা করিবে, কিন্তু ব্যাপারযুক্ত মনদ্বারা তাঁহাকে প্রাপ্ত হইবার চেষ্টা করিবে না। হে মহারাজ! আপনি বেদবিশ্রুত বাক্যের অগোচর সেই পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হউন। মৌন অবলম্বন ও অরণ্যে বাস করিলে মুনি হইবেন, এমন নহে; ফলতঃ যিনি আপনার (নিজ) লক্ষণ অবগত হইয়াছেন, তিনিই মুনিশ্রেষ্ঠ। যিনি অর্থসকল ব্যাখ্যা করিতে সমর্থ হয়েন, তিনি বৈয়াকরণ শব্দে অভিহিত হইয়া থাকেন, অতএব যে শাস্ত্রে ঐরূপ অৰ্থসকল ব্যাখ্যাত হইয়া থাকে, তাহা ব্যাকরণ বলিয়া বিখ্যাত। যে ব্যক্তি লোকসকলকে প্রত্যক্ষ করিয়া থাকেন, তিনি সর্ব্বদর্শী, কিন্তু যিনি ব্ৰহ্মে অবস্থান করেন, তিনি ব্ৰহ্মজ্ঞানবলে সর্ব্ববিৎ হইয়া থাকেন। এইরূপে যে ব্যক্তি বেদাধ্যয়ন ও ধৰ্মদমাদিতে আনুপূর্ব্বিক অবস্থান করেন, তিনি ব্ৰহ্মাসাক্ষাৎকার লাভ করিয়া থাকেন। হে রাজন! আমি স্নেহপূর্ব্বক আপনার নিকট অনুভবসিদ্ধ [উপলব্ধ] বিষয়সকল কীর্ত্তন করিলাম।”