২৮. ভীম-দিগ্বিজয়

ভীম-দিগ্বিজয়

বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! এই অবসরে ভীমপরাক্রম ভীম যুধিষ্ঠিরের আদেশানুসারে করিতুরগসঙ্কুল [অনেক অশ্বগজযুক্ত] বহুল বলসমভিব্যাহারে পূর্ব্বদিগ্বিভাগে যাত্ৰা করিলেন এবং অনতিকালমধ্যে পাঞ্চালনগরে উপনীত হইয়া বিবিধ উপায় উদ্ভাবনপূর্ব্বক পাঞ্চালদিগকে স্ববশে আনিলেন। অনন্তর তিনি বিদেহ ও গণ্ডকদিগকে পরাজয় করিয়া অত্যল্পকালবিলম্বেই দশার্ণদেশ অধিকার করিলেন। তথায় দশার্ণাধিপতি সুধন্বা ভীমসেনের সহিত অতি ভয়ঙ্কর বাহুযুদ্ধ করিলেন। সেই মহাবল মহীপালের বাহুবল পরীক্ষা করিয়া ভীম তাহাকে পরাজিত ও সেনাপতিমধ্যে প্রধানতম করিয়া রাখিলেন।

অনন্তর ভীমসেন বাহিনী সমভিব্যাহারে বলভরে বসুন্ধরাকে কম্পান্বিত করিয়া পূর্ব্বদিকে যাত্রা করিলেন; তথায় সমরানল অবলীলাক্রমে পরাজয় করিয়া পূর্ব্বদেশ অধিকার করিতে লাগিলেন। অনন্তর তিনি দক্ষিণদিন্বিভাগস্থ পুলিন্দনগরে উপস্থিত হইয়া সুকুমার ও সুমিত্ৰনামা ভূপালদ্বয়কে বশীভূত করিলেন। তৎপরে ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠিরের আদেশানুসারে মহাবল শিশুপালসন্নিধানে উপনীত হইলেন। চেদিরাজ ভীমের অভিপ্রেত সম্যক অবগত ও রাজধানী হইতে নিৰ্গত হইয়া তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। সাক্ষাৎ হইবামাত্র উভয়ে আত্মকুলগত কুশল প্রশ্ন জিজ্ঞাসিলেন। তদনন্তর শিশুপাল স্বরাজ্যের অবস্থা নিবেদন করিয়া সস্মিতবদনে কহিলেন, “হে মহাবাহো! এক্ষণে কিরূপ কাৰ্য্যসংসাধনে অধ্যবসায় করিয়াছ?” ভীমসেন প্রত্যুত্তর নিৰ্গত হইয়া কর সংগ্ৰহ করিতেছি।” এই কথা শুনিবা মাত্র চেদিরাজ তাহাকে করা প্ৰদান করিলেন। তৎপরে ভীমসেন তথায় ত্রিংশদিবস বাস করিয়া শিশুপাল কর্তৃক সমাদৃত ও সৎকৃত হইয়া বলবাহন-সমভিব্যাহারে নিষ্ক্রান্ত হইলেন।