যার ইন্তেকাল
হলো আজ, তিনি খুব একাকী এখন।
একটি কাফন
তার আর পৃথিবীর মাঝখানে গূঢ় অন্তরাল
দিয়েছে নিপুণ বুনে। কাঠের চেয়ারে বসে তিনি
পড়তেন খবরের কাগজ, কোরান,
কখনো নিতেন ঘ্রাণ
ফুলের, কখনো শুনতেন রিনিঝিনি
কাচের চূড়ির আর দিতেন চুমুক
দুধের গেলাশে ঘুমোবার আগে; কী-যে সুখ
পেতেন বালিশে মাথা রেখে,
স্বপ্নের ছায়ায় যেত দু’চোখের পাতা ঢেকে।
এখন এ-ঘরে কেউ নেই, শুধু,
আস্তেসুস্থে যাচ্ছে পুড়ে বিবাগী লোবান।
এত কিছু আছে ঘরে-আসবাব, বই তবু এ-ঘর বিরান
মাঠ, আদিগন্ত ধুধু!
কলতলা ভরে আছে শূন্য মাটির কলসে, পথে
যাচ্ছে ঠেলাগাড়ি খুব কাতরাতে কাতরাতে,
কেশর নাড়ছে ঘোড়া, নীল মাছি এসে বনে ভিখিরীর ক্ষতে,
আয়াতের ধ্বনি লগ্ন ধোঁয়া-ধোঁয়া সুগন্ধের সাথে।
দেয়ালে মৃতের ফটোগ্রাফ,
পড়েছে ধুলোর কিছু ছাপ,
ছবির দু’চোখ দ্যাখে চেয়ে কৌতূহলে
নিজেকে কাফন মোড়া, টেবিলে রয়েছে পড়ে বসি
বেলফুল কিছু, শিয়রে স্মৃতির মতো জ্বলে
নিভৃত আগরবাতি, ফটোর সস্মিত ঠোঁটে কেমন রহস্যময় হাসি।