এই মেলা

সংবাদপত্রের সব পৃষ্ঠার চিৎকার,
যাবতীয় টেলিপ্রিন্টারের হইচই আর
বাচাল মাইক্রোফোন আর রেডিয়োর কলরব
ছাপিয়ে হৃদয় ডেকে যায়। কতো শব-
বিজড়িত কাঁটাতার ছিঁড়ে ছুটে যাই
চতুর্দিকে বারবার এবং বাজাই
খোল, করতাল প্রাণে যেন-বা চড়ক
সাম্প্রতিক। স্বাধীনতা মুছে ফেলে ব্যাপক নরক।

যেখানে পা রাখি আজ সেখানেই মেলা
মুখর প্রাণের এই দীর্ণ বাংলাদেশ। সারাবেলা
‘এসো এসো’ সুর বাজে অলিতে-গলিতে,
ছায়াচ্ছন্ন শহরতলিতে,
রোয়াকে মণ্ডপে। হাত খোঁজে হাত, চোখ,
পেতে চায় আরো কতো চোখের আলোক-
এ-ও এক আনন্দিত খেলা,
যেখানে পা রাখি আজ সেখানেই মেলা।

নিয়ামত খলিফা সফেদ
কাফনের মতো বিষম বিরক্ত হয়ে শেষ খেদ
বিদ্ধ চোখে ফুটপাতে না লুটোলে, আজ
এই মেলা হতো না এখানে। পানিওয়ালী রহিমন কী নিলাজ
রোদ্দুরে উদর মেলে না রাখলে, গোবিন্দ মণ্ডল
(জানতো না সে এমন বিরূপ ভূমণ্ডল)
না দেখলে আত্মজার যৌবন হনন, ফুটফুটে
শিশুর মগজে ওরা না পুঁতলে হিংস্র নিশান উঠতো না ফুটে
এমন মেলার আলো এখানে কখনও। এই আলো,

সুহাস মণ্ডপ এই আনন্দিত পারাপার, ভালো
বিশদ মিলনবেলা চুরি করতে দেবো না কাউকে কোনোদিন।
সর্বদা হৃদয় যাক ডেকে মৃত্যুহীন
স্বরে ঘরে ঘরে
ফুটপাতে ফুটপাতে আলে আলে নদীতীরে এই চরাচরে।