আজকাল পরাজয় যখন আমার
আত্মসম্মানে ঘাড় ধরে
হিড়হিড় ক’রে টেনে নিয়ে যাচ্ছে নিয়ত আঁধারে
তখন কেবলি মনে পড়ে তাঁর কথা।
খুব বেশি ক’রে
মনে পড়ে।
কার কথা? এমন একটা প্রশ্ন ওঠা
অমূলক কিছু নয়। যতটুকু জানি
আমি শুধু সেটুকুই
কোনো রঙ না চড়িয়ে বলে যাবো।
না, বাজারে তাঁর
কোনো আত্মজীবনী মেলে না।
জীবন চরিত্র লিখে যারা
যশস্বী এখন, তারা, বলা যায়, সযত্বে এড়িয়ে গেছে তাঁকে।
হয়তো তাঁর বিষয়ে তেমন মালমশলা গেঁজিয়ে
ওঠেনি এখনো।
হাজার হাজার বামনের ভিড়ে যখন আমরা
একজন দীর্ঘকায় মানুষকে দেখি,
বস্তুত তখন আমাদের
সবার চোখের তারা যেমন নিমেষে
স্থির হয়ে যায়,
অবিকল তেমনি হয়েছিল আমার সন্ধ্যার গাঢ় অন্ধকারে,
যখন প্রথম দেখি তাঁকে
সে মুহূর্তে আমার ভেতর
জ্বলে উঠেছিল লক্ষ প্রদীপের আলো।
যাদের শোণিতে খেলা করে সাপ, তারা
ছিটাতো ঘৃণার থুথু তাঁর প্রতি, কুৎসার জোয়ারে যেত ভেসে
আর যারা কাপুরুষ, তারা
সহজে নিত না তাঁর নাম,
যদিও অন্তরে তাঁকে
গভীর ভূতলবাসী রাজা বলে দিয়েছিল ঠাঁই।
আমি মধ্যবর্তী, তাই আমার স্বপ্নের
নায়কের পথ ধরে হাঁটতে চেয়েছি বহুদিন,
অথচ ঝড়ের উড়ো ধূলি দেখে মাঝপথে হঠাৎ থমকে
দাঁড়িয়েছি নিজের প্রেতের মতো, আখেরে দিয়েছি পিঠ টান।
পরাস্ত মানুষ আমি নির্মাণের চেয়ে
দেখেছি ধ্বংসের নাচ বেশি মরুদ্যানের উদ্দেশে
যাত্রা করে গাফেল পথিক চলে গেছি
তপ্ত বালিয়াড়ির নিকটে।
অনেকেই ব্যাপক আলোর মতো শোভা হতে চায়,
কিন্তু কেউ সহজে কখনো
নায়কের ধরনে অমন
আতশবাজির মতো নিজের জীবনটাকে পোড়াতে জানে না।