কখনও চঞ্চল ছিলো অতিশয় চক্ষুদ্বয়, এখন কেমন
ভয়ানক স্থির,
অচিন পাথর যেন, শ্যাওলায় হবে আচ্ছাদিত বৃষ্টি হলে।
ভয়ানক স্থির, রোদের তুমুল সুঁচ
ঠোকরাচ্ছে অবিরাম, তবু অক্ষিপক্ষ নিরুদ্যম,
হাতও উঠে আসে না কখনও। পড়ে আছো
রাস্তার কিনারে, ক্রুশকাঠ। ভনভনে
মাছি নাক-মুখ ঘেঁষে বুঝি জিজ্ঞাসায় অত্যন্ত চঞ্চল-
বেওয়ারিশ রয়েছো ঘুমিয়ে তুমি কে হে?
হাতের যজম মুঠো বিয়াবান, হৃদ্ ঠিকানার
তল্লাটে কোথাও কোনো ঘর নেই, সাঁকো নেই, ফোটে না চকিতে
স্বর্ণচাঁপা মফস্বলি স্টেশনের রাত
রাখে না শিশির তার বুকে রক্তে ঝিঁঝিঁ
ভুলেও দেয় না
মদির স্লোগান।
পৈশাচী খরায় আজ তাকে ঘিরে জীবনের হা-হা হরতাল।
দেখে কৃপা হয়? ইচ্ছা হয়, মাথাটা বুলিয়ে দিই,
চিবুকের কাটা দাগ করি অনুভব
তর্জনী অথবা অনামিকা ডগায়। খুলে নেবো
বিবর্ণ জুতোর পাটি? মিটবে কি সাধ রৌদ্রস্নানে?
যিনিই করান স্নান, তার
চুল রুক্ষ থেকে যাবে, হবে না কোমল
বুকের নিথর রোমারাজি।
কোথায় যাচ্ছিলে তুমি? বাজারের পথে? না কি হাওয়া
খেতে মাঠে? পোস্টাপিসে গিয়েছিলে কিনতে টিকিট?
হয়তো-বা সুগন্ধি নিঃশ্বাসে তৃপ্তি পেতে চেয়েছিলে
সূর্যাস্তের ছোপ-লাগা বারান্দায় লুকিয়ে-চুরিয়ে।
তপ্ত পিচে বিস্তৃত রোদ্দুরে,
কেমন নিঃশ্বাসহীন আছো পড়ে। কী তোমার গোত্র,
জাতধর্ম? কোন সে ভাষায় বলতে গাঢ়, ‘বাড়ি যাবো’,
বলতে ‘চাই, তোমাকেই চাই?’