অবসাদ হাত-পা খেলিয়ে স্মৃতিকে পাশে নিয়ে
শুয়ে আছে বিকেলবেলা।
অবসাদ এখন আমার ওপর শয্যা পেতেছে,
আমি পা দুলিয়ে হাত ঝুলিয়ে
মাটি থেকে খুঁটে খুঁটে তুলছি
অনবরত সাবুদানার মতো যাবতীয় স্বপ্নকণা।
ইচ্ছে হলেই আমি এখন ছাদে যেতে পারি না,
সিঁড়ি নেই। আমার ঘর থেকে
দেখতে পারি এক মেঘের সঙ্গে অন্য মেঘের
সাবলীল মেলামেশা, আকাশজোড়া
পাখির সাঁতার, ঝাঁকামুটের
হনহনিয়ে ছুটে-যাওয়া।
হামেশা খুব রাত ক’রে ফিরতাম বলে আম্মা
টেবিলে খাবার ঢাকা দিয়ে
বসে থাকতেন, ঘুমে চোখ বুঁজে আসতো, তাঁর,
মনে পড়ে। কখনো আমি মাতৃদৃষ্টি এড়িয়ে বেড়ালের মতো
চুপিসারে ঢুকে পড়তাম আমার ঘরে,
কখনোবা চুপচাপ বসে পড়তাম খাবার টেবিলে,
আম্মা কিছু না বলে
দেখতেন আমার আহার দৃশ্য।
একজন জোহরা আমার মশারি টাঙ্গিয়ে
ভাত নিয়ে মধ্যরাত অব্দি জেগে থাকে, প্রতীক্ষার আলপিন
ক্রমাগত ফুটতে থাকে ওর সত্তায়। যখন আমি
দরজার সামনে দাঁড়াই আলুথালু, এক ধরনের
অস্বস্তিকর নিস্তব্ধতা ভর করে ওর ওপর।
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে
এক সময় ঘুমে ভিজে যায় চোখ।
ইদানীং মানুষের চেয়ে জীর্ণ পাঁচিলে আশ্রয় নিবিড়
ম্যাজেণ্টা রঙের পাখি,
আমার ঘরের দাগসমূহে মধ্য থেকে
জেগে-ওঠা নানা ছবি আর ঘরের ভেতর লুটিয়ে-পড়া
জ্যোৎস্নার সঙ্গেই বেশি কথা বলি,
পদ্মকোরকের মতো উম্মীলিত হয় সন্ধ্যাভাষা।