এখানে আসার কথা ছিল না তোমার। এরকম
ভাঙা ঘাটে আসে না কখনো
ভাসাতে কলস কেউ। জলের তেমন সজীবতা
নেই, ঝরা পাতাদের ফোঁপানি নিথর জলে ভাসে।
এখানে চৌদিকে কাঁটাবন, আগাছার ভিড়, ফুল
ফোটে না মোটেই, হু হু হাওয়া বয়ে যায় মরা ঘাসে,
মৃত পাখিদের শুক্নো পালক ছড়ানো ইতস্তত, বাউলের
ভাঙাচোরা দোতারা রয়েছে পড়ে দূরে এক কোণে।
এখানে আসার কথা ছিল না তোমার এই রুক্ষ
বিরানায়; অথচ স্বেচ্ছায় তুমি এখানেই এলে। আঘাটায়
তোমার পা পড়তেই জলাশয় কেমন সজীব;
কাকচক্ষু জল করে ছলছল, নিষ্পত্র গাছেরা সুসজ্জিত।
চোখের পলকে কী পুষ্পল কাঁটাবন, মৃত পাখি
হঠাৎ গা ঝাড়া দিয়ে সুরে সুরে দাগ কাটে স্তব্ধতায়
স্থাপত্যে, গৈরিক বাউলের কণ্ঠে, সে যারে বোঝায়, সেই বোঝে
মৃর্ত হয়। তোমার গ্রীবায় বিষাদের জাল-ছেঁড়া প্রজাপতি।
সূর্যাস্তের দিকে মুখ রেখে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তুমি
স্বচ্ছ জলে ধুয়ে দিলে ধূলিম্লান জীবন আমার
কী ব্যাকুল স্পর্শে, দেখি তোমার দু’চোখে ভালোবাসা
দিনান্তে অমর্ত্য কণ্ঠে শব্দহীন অপরূপ কলরব করে।
১৪.১২.৯৪