খরায় ছিলাম আমি দীর্ঘকাল, গূঢ় চাষাবাদ
হয়নি কিছুঁই ; ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরেছে এবং
ঘাম মুছে, বারংবার ছায়া খুঁজে এখানে সেখানে
গেছে বেলা কায়ক্লেশে। কখনো বিধ্বস্ত মূর্তি দেখে
চমকে উঠেছি কোজাগরী পূর্ণিমায়, রক্তে ছিল
মহরমী সুর সর্বক্ষণ ছিলাম উদাস বসে
বড় একা সর্বস্বান্ত ভূমিহীন চাষির মতন;
সন্ন্যাস পারিনি নিতে, যদিও সন্ন্যাসী এক করে
বসত আমার অভ্যন্তরে, জ্বালায় ধুনুচি আর
ফেলে যায় খড়কুটো, ছেঁড়া কানি, ভস্ম একরাশ।
অকস্মাৎ মধ্যরাতে দিগন্ত ডুবিয়ে কী প্রবল
বৃষ্টিপাত, জলে চোখ, মুখ, চুল খুব ফেটে-যাওয়া
ক্ষেতের মতন আর্ত হৃদয় আমূল ভিজে যায়
এ কেমন ব্যাপক কুহক এলো দু’কূল ছাপিয়ে?
মাথার উপর দিয়ে বয় জলধারা অবিরল;
চোরা টানে কোথায় চলেছি ভেসে? নানা জলচর
প্রাণী আসে ধেয়ে প্রতিষ্ঠিত হিংস্রতায়, হাবুডুবু
খাচ্ছি ক্রমাগত, কুটো নেই আশেপাশে, কোনো তীর
পড়ে না নজরে আর। তবে কি তলিয়ে যাবো শেষে?
কতকাল গেল, তবু আমি আজো সাঁতার শিখিনি।