গোরা – ৯

মায়াপুর থেকে গাড়িতে গঙ্গা পেরিয়ে মূল নবদ্বীপে ‘মেগাসিরিয়াল’ তৈরির জন্যে ভাড়া নেওয়া দপ্তরে পরের দিন সকালে যাওয়ার পথে ‘কৃষ্ণচেতনা’ মন্দিরের আশপাশে আরও কয়েকটা ঘণ্টা ছোট-বড় পুরনো মন্দির গোরাকে দেখাল তার সেজকাকা, ত্রিদিবনাথ। প্রত্যেক মন্দিরের সদর দরজার পাশে পাথরের ফলকে লেখা, ‘এখানে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য, ১৪০৭ শকে ২৩ ফাল্গুন, ইং ১৪৮৬ সনে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন।’ পাঁচটা মন্দিরে, পাথরের ফলকে সন, তারিখে কিছু তফাত থাকলেও প্রায় একই তথ্য নজর করে সেজকাকাকে গোরা জিজ্ঞেস করল, কোন মন্দিরটা আসল জন্মস্থান?

মুচকি হেসে ত্রিদিবনাথ বলল, বলা মুশকিল। সব মন্দির চত্বরে একরকম বিশাল নিমগাছ, গাছের নিচে খড়ের ছাউনি, আঁতুড়ঘর রয়েছে, মন্দিরের চাতালে প্রণামীর বাক্স পেতে যারা গৌর-নিতাই পুজো করছেন, তোর প্রশ্নের উত্তর তাঁরা দিতে পারেন। আমি যতটা জানি, নবদ্বীপের উত্তরে রামচন্দ্রপুর গ্রামে ছিল গোরার জন্মভিটে। গ্রামটা সম্ভবত গঙ্গার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে।

ইতিাসে কি সেরকম লেখা আছে?

গোরার প্রশ্নে ত্রিদিবনাথ বলল, আছে। ইতিহাসে মতান্তরও আছে। ইতিহাসে এমনও রয়েছে যে তখন মায়াপুর নামে কোনও গ্রাম ছিল না। মায়াপুরের প্রকৃত নাম ছিল—মিঞাপুর। কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, অভয়চরণ দে, পরে পৃথিবীর বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের কাছে যিনি এ.সি.ভক্তিবেদান্তস্বামী নামে পরিচিত হলেন, তিনি-ই ঘটিয়েছিলেন মায়াপুরের পুনর্জন্ম। তার আগে, ১৯১৮ সালে অবশ্য অভয়চরণের গুরু, বৈষ্ণবাচার্য ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী, মায়াপুরে ‘শ্রীচৈতন্য মঠ’, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁরই উদ্যোগে এগারো বছর পরে, সরকারি পোস্ট অফিস শ্রীমায়াপুর ডাকঘর’ স্থাপনার সুবাদে ‘মায়াপুর’ নাম আইনি সিলমোহর পায়।

মন্দির দেখা শেষ করে, চলন্ত গাড়িতে বসে, নবদ্বীপের ভূ-মানচিত্র নিয়ে সেজকাকার দেওয়া বিবরণের পুরোটা গোরার কানে ঢুকছে না। কানে ঢুকলেও মাথায় পৌঁছোচ্ছে না। ‘গোরা’ মেগাসিরিয়ালের কাহিনী সম্পূর্ণ শোনার জন্যে মনের মতো তীব্র আকুলতার সঙ্গে গোরার ভূমিকায় অভিনয় করার গুরুদায়িত্ব তার মাথার ওপর পাহাড়ের মতো চেপে বসেছে। মেগাসিরিয়ালের টুকরো টুকরো কাহিনীর চেয়ে গোরার জীবনকথা, আগাপাশতলা, প্রথমে সে শুনে নিতে চায়।

দুপুরে আগে ত্রিদিবনাথের সঙ্গে তার দপ্তর, বাংলো ধাঁচের একটা বাড়িতে গোরা পৌঁছে গেল। বাইরে থেকে একতলা বাড়িটা জরাজীর্ণ মনে না হলেও বাড়িটা নতুন নয়, এক নজরে বোঝা যায়। নীল উর্দিধারী দুই নিরাপত্তারক্ষীর একজন লোহার গেট খুলে ‘স্যালুট’ করল ত্রিদিবনাথকে। অন্যজন একই ভঙ্গিতে হাতের পাতা কপালে ঠেকাল। মোরাম বিছানো রাস্তা, বাংলোর সামনে শেষ না হয়ে বাগানের দিকে চলে গেছে। রাস্তার দু’পাশে অগোছালো বাগান। বাড়ির সামনে গাড়ি গিয়ে দাঁড়াতে বাগানের ভেতর থেকে একজন, সম্ভবত মালি, গাড়ির দরজা খুলতে দৌড়ে এলেও সে সুযোগ তার জুটল না। নিজেই দরজা খুলে, গাড়ি থেকে ত্রিদিবনাথ নেমে পড়তে গোরাও অন্য দরজা খুলে মোরাম বিছানো পথের ওপর দাঁড়িয়ে গেল। বাড়ির ভেজানো দরজা খুলে দিয়ে মালি সরে দাঁড়াতে সেজকাকার সঙ্গে গোরা ভেতরে ঢুকল। বাইরে থেকে দেখে বাড়িটা যত পুরনো মনে হয়েছিল, ভেতরটা তা নয়। লাল সিমেন্টের মেঝে, দেওয়াল নতুনের মতো। বিশাল পুঁজির দুরন্ত ‘সিরিয়াল’-এর দপ্তর সাজাতে যা দরকার, সব রয়েছে। বাইরের দিকে ছড়ানো লাল সিমেন্টের চাতালের ডানদিকে নব্বই ডিগ্রি কোণাকুণি দুটো ঘর নিয়ে ত্রিদিবনাথের মেগাসিরিয়ালের দপ্তর। চাতালের বাঁদিকের অংশটা ডানদিকের চেয়ে অনেক বড়, এক নজরে বোঝা যায়। প্রথমে গোরাকে নিজের দপ্তরে নিয়ে গেল ত্রিদিবনাথ। হাল আমলের দপ্তর বলতে যা বোঝায়, ‘দু’ কামরার দপ্তরটা তাই। কী নেই সেখানে? চারটে টেবিলে চার পিস আধুনিকতম মডেলের কম্প্যুটার, একাধিক ফ্যাক্স মেশিন, টেলিফোন, জেরক্স মেশিন, তিন দেওয়াল জুড়ে কাচ লাগানো র‍্যাক ভর্তি ইংরেজি, বাংলা বই, অসংখ্য সিডি, পাশের ঘরে ‘কনফারেন্স রুম,’ বৈঠকখানা ‘কাম’ গ্রন্থাগার। কাচের চারটে ঢাউস আলমারি বোঝাই বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, হিন্দি, ওড়িয়া এবং নানা ভাষার বই। আলমারির দিকে আঙুল তুলে ত্রিদিবনাথ বলল, চৈতন্যকে নিয়ে যত বই গত সাড়ে চারশো বছরে লেখা হয়েছে, এখনও হচ্ছে, তার সংখ্যা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আজ পর্যন্ত প্রকাশিত কেতাবের চেয়ে বেশি।

ঘরের দেওয়ালে ঝুলছে, হলুদ মখমলের ঢাকা জড়ানো পাখোয়াজ, মৃদঙ্গ, ঢোল, মেঝেতে পাতা গালিচাতে হারমোনিয়াম, দু’জোড়া তবলা, চারপায়া কাচের বাক্সে মিউজিক সিস্টেম, বাক্সের আলাদা খোপে কয়েক জোড়া নানা মাপের পেতলের খঞ্জনি, পায়ের ঘুঙুর। মিউজিক বক্সের বাইরে রাখা কয়েকটা সিডি নেড়েচেড়ে গোরা দেখল, বেশিরভাগ পদাবলী কীর্তনের সংগ্রহ। গোরা টের পেল নবদ্বীপের এই বাড়িতে বড়রকম এক কর্মযজ্ঞ চলছে। অফিসঘর দেখিয়ে, চারটে বিশাল শোওয়ার ঘর ছুঁয়ে গোরাকে নিয়ে বাংলোর ছাতে এসে দাঁড়াল ত্রিদিবনাথ। অভিনেতা, কলাকুশলীদের কেউ না থাকাতে বাড়ি এখন ফাঁকা। ছাতে উঠে গোরা দেখল, পুব-দক্ষিণে গঙ্গা বয়ে চলছে। কলকাতার গঙ্গার মতো চওড়া না হলেও তিরতির স্রোত আছে। জল কত গভীর, সে আন্দাজ করতে পারল না। মায়াপুর থেকে যে গাড়িতে গঙ্গা পার হয়ে নবদ্বীপে এসেছে, সেই জলস্রোতের উল্টোদিকের কিনারা ঘেঁষে সেজকাকা ডেরা গেড়েছে গোরা বুঝতে পারল। ত্রিদিবনাথ বলল, এখন যে গঙ্গাকে নবদ্বীপের পুবে দেখছিস, পাঁচশো বছর আগে তা পশ্চিম দিক দিয়ে বইত। গঙ্গা আর পদ্মাকে জুড়ে রেখেছিল, খড়ে নদী, যার আর এক নাম জলঙ্গী। পাঁচশো বছর আগের সেই দামাল নদীগুলো এখন অনেক শান্ত হয়ে গেলেও এই লম্বা সময় ধরে তারা যে কত চর ভেঙেছে, কত নতুন জনপদ গড়ে নতুন খাতে দৌড় লাগিয়েছে, নদী বিশেষজ্ঞরা সে ফর্দ দিতে পারলেও, নির্ভুল, সম্পূর্ণ ফদ এখনও মেলেনি।

কথার মধ্যে গোরার মুখের দিকে এক সেকেণ্ড তাকিয়ে ত্রিদিবনাথ বলল, চল্, খেয়েনি। ভরত, মানে এখানকার মালি রান্নাবান্না করে রেখেছে। দারুণ রাঁধে ভরত। খাওয়ার পরে তোর মা, বাবাকে ফোন করে, তোকে দিয়ে যে কাজটা করাতে চাই, তাদের বলব। তাদের জানিয়ে, অনুমতি নেব। মনে হয়, তারা গররাজি হবে না। তারপর ফের তোকে শোনাব বাকি ‘এপিসোড’গুলোর কাহিনী। কম্প্যুটারে সি.ডি. লোড করে এপিসোডগুলো দেখে নিতে পারিস।

এক মুহূর্ত থেমে গোরাকে ত্রিদিবনাথ জিজ্ঞেস করল, তুই ফোন করবি না কাউকে?

গোরা বলল, করেছি।

‘মোবাইল’ ফোন থেকে?

হ্যাঁ।

কার সঙ্গে কথা বললি?

ঐশীর সঙ্গে, মায়ের সঙ্গে।

ঐশীর পরিচয় ত্রিদিবনাথ জানতে চাইলে গোরা বলল, আমার বন্ধু।

মোলায়েম হাসি ছড়িয়ে পড়ল ত্রিদিবনাথের মুখে, বলল, ঐশী আর তোর অন্য বন্ধুরা যদি এখানে আসতে চায়, তাদের ডেকে নে একদিন। জমিয়ে চড়ুইভাতি করা যাবে। আমি কিন্তু পাকা রাঁধুনি!

গোরা মুচকি হাসতে ত্রিদিবনাথ জিজ্ঞেস করল, মায়ের সঙ্গে কী কথা হল?

তোমার ‘প্ল্যান’ শুনে মা একচোট হেসে বলল, তুই আবার যেন ‘সন্নেসি’ হয়ে যাসনি?

হাসিতে ফেটে পড়ে সেজকাকা বলল, খাওয়ার পরে বৌদি আর মেজদার সঙ্গে আমি কথা বলব।

গোরাকে নিয়ে ছাত থেকে ত্রিদিবনাথ একতলায় এসে খাবার ঘরে ঢুকে ‘ডাইনিং টেবিল’-এ বসতে ঘরের পাখা চালিয়ে দিল ভরত। কাচের প্লেটে গরম ভাত, তরকারি, আলুভাজা, এক বাটিতে ডাল আর এক বাটিতে মুরগির মাংস, পরিপাটি করে সাজিয়ে দু’জনের সামনে রাখল ভরত। নিজের প্লেটে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের মধ্যে দু আঙুল ডুবিয়ে ঈষৎ ভাঙতে গাওয়া ঘি-এর গন্ধ পেল গোরা। কাল দুপুরে মায়াপুরে ভাত খাওয়ার শুরুতে, শিউলি ফুলের মতো ধবধবে সাদা গরম ভাতে হাত দিয়ে এই সুবাস পেয়েছিল। খাওয়ার মধ্যে খুচরো কথা চালাচালির ফাঁকে গোরা নজর করল, সেজকাকার প্লেটের পাশে মাংসের বাটি নেই। অবাক হল সে। টেবিল থেকে সামান্য দূরে তটস্থ হয়ে দাঁড়ানো ভরতকে বলল, সেজকাকাকে মাংস দিতে ভুলে গেছ কেন?

ভরতকে মুখ খোলার সুযোগ না দিয়ে সেজকাকা বলল, মাংসের বদলে আমার জন্যে অন্য জিনিস আছে। শেষপাতে খাব। ইচ্ছে করলে তুই-ও খেতে পারিস।

সেটা কি?

লাউ-এর পায়েস।

কথাটা আবছা হেসে সেজকাকা জানাতে, অবাক হয়ে গোরা জিজ্ঞেস করল, তুমি মাংস খাওয়া ছেড়ে দিলে?

মোটেই না, বন্ধ রেখেছি।

কাল-তো আমাদের বাড়িতে খেলে?

তা খেয়েছি। নিজের সংসার ছেড়ে আর কোথাও গেলে, সেখানে তারা যা দেয়, খাই।

তুমি কি ‘ভেজিটেরিয়ান’?

নিজের সংসারে নিরামিষাশী, মাংস, মাছ, ডিম খাই না।

কতদিন নিরামিষ খাচ্ছো?

এই ‘মেগাসিরিয়াল’ পরিকল্পনা করার পর থেকে।

মাংসের বদলে কি লাউয়ের পায়েস খাওয়া ধরলে?

গোরার প্রশ্নে থালা থেকে মুখ তুলে একগাল হেসে ত্রিদিবনাথ বলল, আরও কিছু জিনিস, চর্চা করছি, তার একটা হল ধ্যান।

কার ধ্যান করো, কে তোমার ইষ্টদেবতা?

কাচের বাটি ভর্তি লাউ-এর পায়েস প্লেটের ওপর নিয়ে, তার মধ্যে চামচ ডুবিয়ে ত্রিদিবনাথ বলল, বিশেষ কোনও ইষ্টদেবতা বা দেবী আমার নেই। মেঝেতে আসন পিঁড়ি হয়ে বসে দু’চোখ বুজে আমার দেখা নীল মহাসমুদ্রের ছবি ভাবতে ভাবতে, সমুদ্রের জলে গলা পর্যন্ত ডুবে থাকতে চেষ্টা করি, কখনও ভোরের আকাশ, শেষ বেলার আলো, অনেক সময় ধরে চোখ বুজে মগজের মধ্যে খুঁজে বেড়াই, বরফে ঢাকা পাহাড়চুড়োর ছবি, সাতকন্যা জলপ্রপাত, আমাজন অববাহিকার অন্ধকার ঘন জঙ্গল, প্রিয় ফুল, আধফোটা বেলকুঁড়ি, মহাকাশের ওপাশে মহাকাশের যে সব গ্রহ, তারা, ছায়াপথে প্রবল গতিসম্পন্ন ছবি, উড়ন্ত মহাকাশযান থেকে হাউস্টনের নভোবিজ্ঞান কেন্দ্রে, আমার ল্যাবোরেটরির কম্প্যুটারের পর্দায় পাঠানো হয়, প্রায়ই দেখি, সেই মুহূর্তগুলো, বুঁদ হয়ে মনের মধ্যে সাজাতে সাজাতে যে অনুভব হয়, সেটাই আমার ধ্যান। সকালের শিশির জমে থাকা একটা সবুজ দুব্বোঘাস এমন কি, বাতাসে উড়তে থাকা এককণা ধুলো পর্যন্ত, দু’চোখ বুজে মনের ভেতরে, মনের অংশ করে নিয়ে রোজ এক ঘণ্টা যে কসরৎ চালাই তাই ধ্যান। ধ্যানে বসতে আমার কোনও দেবদেবীর দরকার হয় না।

পায়েসের বাটিতে চামচ ডুবিয়ে, কথার ঝোঁকে ত্রিদিবনাথ খেতে ভুলে গেছে। গোরার মনে হল, ধ্যানের মুহূর্তগুলো যেন সেজকাকাকে ঘিরে ফেলছে। প্লেটের ওপর গোরা মাংসের বাটি উপুড় করতে ত্রিদিবনাথের ঘোর কেটে গেল। মুহূর্তে স্বাভাবিক হল তার গলার আওয়াজ। মুখে এক চামচ লাউ-এর পায়েস নিয়ে বলল, আহা, দারুণ, খুব ভালো পায়েস বানিয়েছিস রে ভরত। কর্পূর আর ছোট এলাচের গন্ধ চমৎকার মিশে গেছে।

আমেরিকাবাসী মনিবকে তুষ্ট করে ভরতের মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়েছে। গোরাকে ত্রিদিবনাথ বলল, ‘টেস্ট’ করে দেখ, এক চামচ। তারপর নিজে চেয়ে খাবি।

মাংস খাওয়ার পাট শেষ করে সেজকাকাকে খুশি করতে কয়েক চামচ পায়েস খেয়ে গোরার মনে হল, মায়ের তৈরি গোবিন্দভোগ চালের ঘন পায়েসের চেয়ে ভরতের হাতের লাউ-এর পায়েস কম মুখরোচক নয়। ভরতকে সেজকাকার প্রশংসা নিছক কথার কথা নয়। গোবিন্দভোগ চালের পায়েসকে টক্কর দিতে পারে এই অচেনা অদ্ভুত পায়েসের স্বাদ। আরও কয়েক চামচ খেতে ইচ্ছে করলেও তখনই চাইতে সঙ্কোচ বোধ করল। সেজকাকাও তাকে পায়েস খাওয়াতে চাপাচাপি করল না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *