ঋগ্বেদ ১০।০৭৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ৭৫
নদী দেবতা। সিন্ধুক্ষিৎ ঋষি।
১। হে জলগণ! যজমানের গৃহে কবি তোমাদিগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমা ব্যাখ্যা করিতেছেন। তাহারা সাত সাত করিয়া তিন শ্রেণীতে চলিল, সকল নদীর উপর সিন্ধু নদীর তেজই শ্রেষ্ঠ।
২। হে সিন্ধু নদী! যখন তুমি অন্ন শালী, অর্থাৎ শস্যশালী প্রদেশ লক্ষ্য করিয়া ধাবিত হইলে, তখন বরুণদেব তোমার যাইবার নানা পথ কাটিয়া দিলেন। তুমি ভূমির উপর উন্নত পথ দিয়া গমন কর। তুমি সকল গমনশীল নদীর উপর বিরাজ কর।
৩। পৃথিবী হইতে সিন্ধুর শব্দ উঠিয়া আকাশ পর্যন্ত আচ্ছাদন করিতেছে। মহাবেগে উজ্জ্বল মুর্তিতে ইনি চলিয়াছেন। ইহা শব্দ প্রবল করিলে জ্ঞান হয়, যেন মেঘ হইতে ঘোর রবে বৃষ্টি পড়িতেছে। সিন্ধু আসিতেছেন, যেন বৃষ গর্জন করিতে করিতে আসিতেছেন।
৪। হে সিন্ধু! যেমন শিশু বৎসের নিকট তাহাদিগের জননী গাভীরা দুগ্ধ লইয়া যায়, তদ্রুপ আর আর নদী শব্দ করিতে করিতে জল লইয়া তোমার চতুর্দিকে আসিতেছে। যেমন যুদ্ধ করিবার সময় রাজা সৈন্য লইয়া যায়, তদ্রুপ তোমার সহগামিনী এই দুইটা নদী শ্রেণীকে লইয়া তুমি অগ্ৰে অগ্ৰ চলিতেছ।
৫। হে গঙ্গা! হে যমুনা ও সরস্বতি ও শতদ্রু ও পরুষ্ণি! আমার এই স্তবগুলি তোমরা ভাগ করিয়া লও। হে অসিক্লী-সংগত মরুদবৃধা নদী! হে বিতস্তা ও সুসোমা সংগত আর্জীকীয়া নদী! তোমরা শ্রবণ কর (১)।
৬। হে সিন্ধু! তুমি প্রথমে তৃষ্টামা নদীর সঙ্গে মিলিত হইয়া চলিলে। পরে সুসর্ত ও রসা ও শ্বেতীর সহিত মিলিলে। তুমি ক্ৰমু ও গোমতীকে, কুভা ও মেহৎনুর সহিত মিলিত করিলে। এই সকল নদীর সঙ্গে তুমি এক রথে অর্থাৎ একত্রে যাইয়াথাক (২)
৭। এই দুর্ধর্ষ সিন্ধু সরলভাবে যাইতেছে, তাহার বর্ণ শুভ্র ও উজ্জ্বল, তিনি অতি মহৎ, তাহার জল সকল মহাবেগে যাইয়া চতুর্দিক পরিপূর্ণ করিতেছে। যত গতিশালী আছে, ইহার তুল্য গতিশালী কেহ নাই। ইনি ঘোটকীর ন্যায় অদ্ভুত, ইনি স্থূলকায় রমণীর ন্যায় সৌষ্ঠবদর্শনা ।
৮। সিন্ধু চিরযৌবনা ও সুন্দরী; ইহার উৎকৃষ্ট ঘোটক, উৎকৃষ্ট রথ এবং উৎকৃষ্ট বস্ত্র আছে, সুবর্ণের অলঙ্কার আছে, ইনি উত্তমরূপে সজ্জিত হইয়াছেন। ইহার বিস্তর অন্ন আছে, বিস্তর পশুলোম আছে, ইহার তীরে সীলমা খড় আছে। ইনি মধু প্রসবকারী পুষ্পের দ্বারা আচ্ছাদিত(৩)।
৯। সিন্ধু ঘোটকযুক্ত অতি সুখকর রথ যোজনা করিয়াছিলেন, তাহা দ্বারা এই যজ্ঞে অন্ন আনিয়া দিয়াছেন। ইহার মহিমা অতি মহৎ বলিয়া স্তব করে। ইনি দুর্ধর্ষ, আপনার যশে যশস্বী এবং মহৎ(৪)।
————
(১) “Satudri (Sutlaj).”
“Parushni ( Iravati, Ravi).” “It was this river which the ten kings when attacking the Tritsus under Sudas tried to cross from the west by cutting off its water, but their strarageni faied, and they perished in the river.”—Rig Veda, 7.18.8.
“Asikni, which means black.” “It is the modern Chinab.”
“Marudyridha, a general name for river. According to Roth the combined course of the Akesines and Hydaspes.”
“Vitasta, the last of the rivers of the Punjab, changed in Greek into Hydaspes.” “It is the modern Behat or Jilam.”
“According to Yaska the Arjikiya is the Vipas.” “Its modern name is Bias or Bejah,”
“According to Yaska the Sushoma is the Indus.”–Max Muller’s India, what can it reach us (1883), pp. 165 to 173.
(২) ৫ ঋকে সিন্ধু নদীর পূর্বদিকের অর্থাৎ পঞ্জাব প্রদেশের শাখাগুলির নাম পাওয়া যায়। ৬ ঋকে পশ্চিম দিগের অর্থাৎ কাবুল প্রদেশের শাখাগুলির নাম পাওয়া যায়। মক্ষমূলকৃত ৬ খকের অনুবাদ উদ্ধৃত করিতেছি।
“First thou goest united with the Trishtama on this journey, with the Susartu, the Rasa (Ramha Araxes?), and the Sveti, -0 Sindhu, with the Kubha (Kophen, Cabul river) to the Gomoti (Gomal), with the Mehatnu to the Krumu(Kurun)—with whom thou proceedest together.”
(৩) “Rich in horses, in chariots, in garments, in gold, in booty, in wool, and in straw, the Sindhu, handsome and young, cloths herself in sweet flowers.”—Max Muller.
(৪) “He (the poet) takes in at swoop three great river systems, or, as he calls them, three great armies of rivers,– those flowing from the north-west into the Indus, those joining it from the north-east, and in the distance the Ganges and the Jumna with their tributaries. “I call a man, who fur the first time could see those three marching armies of rivers, a poet.”
“It shows the widest geographical horizon of the Vedic poets, confines by the snowy mountains in the north, the Indus and the range of the Suleiman mountains in the west, the Indus or the sea in the south, and the valley of the Jumna and Ganges in the east, Beyond that the world, though open, was unknown to the Vedic poets.”—Max mullar’s India, What can it teach us (1883), pp. 168 and 174.