ঋগ্বেদ ১০।০৮৫

ঋগ্বেদ ১০।০৮৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ৮৫
সোম, প্রভৃতি দেবতা। সূর্য্যা ঋষি।

১। সত্যই পৃথিবীকে উত্তম্ভিত করিয়া রাখিয়াছেন, সূৰ্য্য স্বৰ্গকে উত্তম্ভিত করিয়া রাখিয়াছেন, ঋতপ্রভাবে আদিত্যগণ আকাশে অবস্থিত আছেন, উহারই প্রভাবে সোম সেই স্থান আশ্রয় করিয়া আছেন।

২। সোমের প্রভাবে আদিত্যগণ বলবান্ হয়েন, সোমের প্রভাবে পৃথিবী প্রকান্ড হইয়াছে, অপিচ, এই সকল নক্ষত্রের সন্নিধানে সোমকে রাখিয়া দেওয়া হইয়াছে(১)।

৩। যখন উদ্ভিজ্জরূপী সোমকে নিষ্পীড়ন করে, তখন লোকে ভাবে, তাহার সোম পান করা হইল। কিন্তু স্তোতাগণ যাহা প্রকৃত সোম বলিয়া জানেন, তাহা কেহই পান করিতে পায় না।

৪। হে সোম! স্তোতাগণ(২) গোপন করিবার ব্যবস্থা করিয়া তোমাকে গোপন করিয়া রাখেন। তুমি পাষাণের শব্দ শুনিতে থাক, পৃথিবীর কেহই তোমাকে পান করিতে পায় না ।

৫। হে দেবসোম! তোমাকে যে পান করা হয়, তাহাতে তোমার ক্ষয় না হইয়া আবার বৃদ্ধিই হইয়া থাকে। যেরূপ সংবৎসরকে মাসগুলি রক্ষা করে, সেইরূপ বায়ু সোমকে রক্ষা করেন, উভয়ের আকৃতি, অর্থাৎ স্বরূপ এক।

৬। সূর্যার, অর্থাৎ সূর্যদুহিতার বিবাহকালে রৈভী (নান্নী ঋকগুলি) ঐ সূৰ্য্যর সহচরী হইয়াছিল, নরাশংসী (নামক ঋকগুলি) উহার দাসী হইল। সূৰ্য্যার অতি সুন্দর বস্ত্র গাথা অর্থাৎ সামগান দ্বারা পরিষ্কৃত হইয়া আসিয়াছিল।

৭। যখন সূৰ্য্যা পতিগৃহে গমন করিলেন, তখন চৈতন্য স্বরূপ উপবন সঙ্গে চলিল, চক্ষুই তাহার অভ্যঞ্জন। দ্যুলোক ও ভূলোক তাহার কেশস্বরূপ হইয়াছিল।

৮। স্তবসমূহ তাহার রথের প্রতিধি, অর্থাৎ চক্রাশয় ছিল; কুরীর নামক ছন্দ রথের অভ্যন্তরভাগ হইল। অশ্বিদ্বয় সূৰ্যার বর হইলেন, অগ্নি অগ্রগামি দূতস্বরূপ হইলেন।

৯। সূর্য্যা মনে মনে পতি প্রার্থনা করিতেছিলেন, তাহাতে সূৰ্য্য যখন সূৰ্য্যাকে সম্প্রদান করিলেন, তখন সোম তাহার বিবাহার্থী ছিলেন, কিন্তু অশ্বিদ্বয়ই তাহার বরস্বরূপে পরিগৃহীত হইলেন(৩)।

১০। মনই তাহার শকট হইল, আকাশই উর্ধাচ্ছাদন হইল। দুই শুক্র, ( অর্থাৎ দুটী শুকতারা) তাঁহার শকটবাহী হইল; এইরূপে সূৰ্য্যা পতির গৃহে গমন করিলেন।

১১। ঋক্ ও সামদ্বারা বর্ণিত দুই বৃষ তাহার শকট, এই স্থান হইতে বহিয়া লইয়া গেল। হে সূর্য! দুই কর্ণ তোমার রথচক্র হইল, আর সেই রথের পথ আকাশে, ঐ পথে সর্বদা যাতায়াত হইয়া থাকে।

১২। যাইবার সময় তোমার দুই রথচক্ৰ অতি উজ্জ্বল হইল, সেই রথে বিস্তারিত অক্ষ সংস্থাপিত ছিল। সূৰ্যা পতিগৃহে যাইতে উদ্যত হইয়া মনঃ স্বরূপ শকটে আরোহণ করিলেন।

১৩। পতিগৃহে গমনকালে সূৰ্য্য সূর্য্যাকে যে উপঢৌকন দিয়াছিলেন, তাহা অগ্রে অগ্রে চলিল। মঘা নক্ষত্রের উদয় এই উপঢৌকনের, অঙ্গভুত গাভীদিগকে তাড়াইয়া লইয়া যায়(৪), অর্জনী, অর্থাৎ ফাল্গুণী নামক দুই নক্ষত্রের উদয় কালে সেই উপঢৌকন বহিয়া লইয়া যায়(৫)।

১৪। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা যখন ত্রিচক্রযুক্ত রথে আরোহণপূর্বক জিজ্ঞাসা করিতে করিতে সূৰ্যার বিবাহদান গ্রহণ করিলে, তখন সকল দেবতা তোমাদিগের সেই গ্ৰহণকাৰ্য অনুমোদন করিলেন, পূষাতোমাদিগের পুত্র হইয়া তোমাদিগকে কন্যার বরস্বরূপ বরণ করিলেন।

১৫। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা যখন বর হইয়া সুৰ্যাকে বরণ করিতে নিকটে গমন করিলে, তখন তোমাদিগের একখানি চক্র কোথায় ছিল, তোমরা পথ জিজ্ঞাসা করিবার জন্য কোথায় দাড়াইয়াছিলে?

১৬। স্তোতাগণ জানেন যে, কালে কালে অগ্রসর হইয়া থাকে এরূপ দুইখানি চক্র প্রসিদ্ধ আছে, আর অতি গোপনীয় একখানি যে চক্র আছে, তাহা বিদ্বানেরা জানেন।

১৭। সূৰ্য্যা ও দেবগণ এবং মিত্র ও বরুণ, ইহারা প্রাণিবর্ণের শুভচিন্তা করেন, ইহাদিগকে নমস্কার করিলাম।

১৮। এই দুইটী শিশু ক্ষমতাবলে পূর্ব ও পশ্চিমে বিচরণ করেন, ইহারা ক্রীড়া করিতে করিতে যজ্ঞে যান। একজন, (অর্থাৎ চন্দ্র ) ভুবনে ঋতু ব্যবস্থা করিতে করিতে সংসার অবলোকন করেন। দ্বিতীয়, (অর্থাৎ সূৰ্য্য ) ঋতুগণ বিধান করিতে করিতে পুনঃ পুনঃ জন্মগ্রহণ করেন।

১৯। সেই সূৰ্য্য দিনের পতাকা, অর্থাৎ জ্ঞাপনকর্তা, প্রত্যহ নূতন, নূতন হইয়া প্রভাতের অগ্রে আসিয়া থাকেন। আসিয়া দেবতাদিগকে যজ্ঞভাগ দিবার ব্যবস্থা করেন। চন্দ্র দীর্ঘ আয়ুঃ বিতরণ করেন।

২০। হে সূৰ্য্যা! তোমার পতিগৃহেতে যাইবার রথে সুন্দর পলাশ তরু, সুন্দর শালমলীবৃক্ষ আছে, অর্থাৎ ঐ কাষ্ঠে নির্মিত ইহার মূর্তি উৎকৃষ্ট, সুবর্ণের ন্যায় প্রভা। উহা উত্তমরূপে পরিবেষ্টিত, উহার সুন্দর চক্র, উহা সুখের আবাসস্থান। তোমার পতিগৃহে অতি প্রচুর উপঢৌকন লইয়া যাও।

২১। হে বিশ্ববসু! এই স্থান হইতে গাত্রোত্থান কর, যেহেতু এই কন্যার বিবাহ হইয়া গিয়াছে। নমস্কার ও স্তবের দ্বারা বিশ্বাবসুকে স্তব করি। আর যে কোন কন্যা পিতৃগৃহে বিবাহ লক্ষণযুক্ত হইয়া আছে, তাহার নিকটে গমন কর; সেই তোমার ভাগস্বরূপ জন্মিয়াছে, তাহার বিষয় অবগত হও(৬)।

২২। হে বিশ্বাবসু! এই স্থান হইতে গাত্রোত্থান কর। নমস্কার দ্বারা তোমাকে পূজা করি। নিতম্ববতী, অন্য অবিবাহিত নারীর নিকটে যাও, তাহাকে পত্নী করিয়া স্বামি সংসর্গণী করিয়া দাও(৭)।

২৩। যে সকল পথ দিয়া আমাদিগের বন্ধুগণ বিবাহের জন্য কন্যা প্রার্থনা করিতে যান, সেই সকল পথ যেন সরল ও কণ্টকবিহীন হয়, অৰ্যমা এবং ভগ আমাদিগকে উত্তমরূপে লইয়া চলুন। হে দেবগণ! পতি পত্নী যেন পরস্পর উৎকৃষ্টরূপে গ্রথিত হয়।

২৪। হে কন্যা! সুন্দরমূৰ্ত্তিধারী সূৰ্য্যদেব যে বন্ধনের দ্বারা তোমাকে বদ্ধ করিয়াছিলেন, সেই বরুণের বন্ধন হইতে তোমাকে মোচন করিতেছি। যাহা সত্যের আধার, যাহা সৎকর্মের আবাসস্থানস্বরূপ, এইরূপ স্থানে তোমাকে নিরুপদ্রবে তোমার পতির সহিত স্থাপন করিতেছি।

২৫। এই নারীকে এই স্থান হইতে মোচন করিতেছি, অপর স্থান হইতে নহে (৮)। অপর স্থানের সহিত ইহাকে উত্তমরূপ গ্রথিত করিয়া দিলাম। হে বৃষ্টিবর্ষণকারী ইন্দ্র! ইনি যেন সৌভাগ্যবতী ও উৎকৃষ্ট পুত্রবতী হয়েন।

২৬। পূষা তোমাকে হস্তে ধারণ করিয়া এস্থান হইতে লইয়া যাউন। অশ্বিদ্বয় তোমাকে রথে বহন করুন। গৃহে যাইয়া গৃহের কর্তী হও। তোমায় গৃহের সকলের উপর প্রভু হইয়া প্রভুত্ব কর।

২৭। এই স্থানে সন্তানসন্ততি জন্মিয়া তোমার প্রীতিলাভ হউক। এই গৃহে সাবধান হইয়া গৃহকাৰ্য্য সম্পাদন কর। এই স্বামির সহিত আপন শরীর সম্মিলিত কর, বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত নিজ গৃহে প্রভুত্ব কর।

২৮। নীল ও লোহিত বর্ণ হইতেছে; ইহাতে অনুমান হইতেছে যে, কৃত্যার আক্রমণ হইয়াছে। এই নারীর জ্ঞাতিগুণ বৃদ্ধি পাইতেছে। ইহার স্বামী নানা বন্ধনে বদ্ধ হইতেছে।

২৯। মলিন বস্ত্র ত্যাগ কর। স্তোতাদিগকে ধন দান কর। এই কৃত্যাপাদযুক্তা হইয়াছে, অর্থাৎ চলিয়া গিয়াছে। পত্নী পতির সহিত এক হইয়া যাইতেছে(৯)।

৩০। যদি পতি বধূর বস্তুদ্বারা আপন অঙ্গ আচ্ছাদন করিবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে এই কৃত্যা আক্রমণ করে, উজ্জ্বল শরীরও শ্রীভ্রষ্ট হইয়া যায়।

৩১। যাহারা বরের নিকট হইতে বধূর নিকট লব্ধ আহলাদজনক উপঢৌকন সরাইয়া লইতে আসে, তাহার যথা হইতে আসিয়াছিল, তথায় যজ্ঞভাগগ্রাহী দেবতাগণ তাহাদিগকে পাঠাইয়া দিন, অর্থাৎ বিফল প্রয়াস করিয়া দিন।

৩২। যাহারা বিপক্ষতাচরণ করিবার জন্য এই পতি পত্নীর নিকটে আসে, তাহারা বিনাশ প্রাপ্ত হউক। পতি পত্নী যেন সুবিধার দ্বারা অসুবিধা সমস্ত কাটাইয়া উঠেন। শত্রুগণ দূরে পলায়ন করুক।

৩৩। এই বধূ অতি লক্ষণান্বিতা, তোমরা এস, ইহাকে দেখ। ইহাকে সৌভাগ্য, অর্থাৎ স্বামীর প্রতিপাত হউক, ইহাকে এইরূপ আশীর্বাদ করিয়া নিজ নিজ গৃহে প্ৰতিগমন কর।

৩৪। এই বস্ত্র দূষিত, অগ্রাহ্য, মালিন্যযুক্ত ও বিষযুক্ত। ইহা ব্যবহারের যোগ্য নহে। যে, ব্রহ্মা নামক ঋত্বিক বিদ্বান্ সে বধূর বস্ত্র পাইত পারে (১০)।

৩৫। দেখ, সূৰ্যার মূৰ্ত্ত কি প্রকার, ইহার বস্ত্র কোথাও অর্ধেক ছিন্ন.. কোথাও মধ্যে ছিন্ন, কোথাও চতুর্দিকে ছিন্ন । যিনি ব্রহ্মা নামক ঋত্বিক তিনি তাহা শোধন অর্থাৎ নবীকৃত করেন।

৩৮। হে অগ্নি! উপঢৌকন সমেত সূৰ্য্যাকে অগ্রে তোমার নিকট লইয়া যাওয়া হয়। তুমি সন্তানসন্ততিসমেত বনিতাকে পতিদিগের নিকট সমৰ্পণ করিলে।

৩৯। অগ্নি আবার লাবণ্য ও পরমায়ুঃ দিয়া বনিতাকে প্রদান করিলেন। এই বনিতার পতি দীর্ঘায়ুঃ হইয়া একশত বৎসর জীবিত থাকিবে (১২)।

৪০। প্রথমে তোমাকে সোম বিবাহ করে, পরে গন্ধর্ব বিবাহ করে, তোমার তৃতীয় পতি অগ্নি, মনুষ্যসন্তান তোমার চতুর্থ পতি।

৪১। সোম সেই নারী গন্ধৰ্ব্বকে দিলেন, গন্ধর্ব অগ্নিকে দিলেন, অগ্নি ধনপুত্র সমেত এই নারী আমাকে দিলেন (১৩)।

৪২। হে বরবধু! তোমরা এইস্থানেই উভয়ে থাক, পরস্পর পৃথক হইও না, নানা খাদ্য ভোজন কর, আপন গৃহে থাকিয়া পুত্র পৌত্রদিগের সঙ্গে আমোদ আহলাদ ও ক্রীড়া বিহার কর(১৪)।

৪৩। প্রজাপতি আমাদিগের সন্তানসন্ততি উৎপাদন করিয়া দিন, অৰ্য্যমা আমাদিগকে বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত মিলন করিয়া রাখুন। হে বধূ! তুমি উৎকৃষ্ট কল্যাণসম্পন্ন হইয়া পতিগৃহে অধিষ্ঠান কর। আমাদিগের দাসদাসী এবং আমাদিগের পশুগণের মঙ্গল বিধান কর(১৫) ।

৪৪। তোমার চক্ষু যেন দোষ শূন্য হয়, তুমি পতির কল্যাণকরী হও, পশুদিগের মঙ্গলকারিণী হও, তোমার মা যেন প্রফুল্ল এবং লাবণ্য, যেন উজ্জল হয়। তুমি বীরপুত্র প্রসবিনী এবং দেবতাদিগের প্রতি ভক্ত হও। আমাদিগের দাস দাসী, (ইত্যাদি পূর্বঋকের শেষ অংশের সহিত এক)।

৪৫। (ইন্দ্রের নিকট প্রার্থনা) হে বৃষ্টি বর্ষণকারী ইন্দ্ৰ! এই নারীকে তুমি উৎকৃষ্ট পুত্রবতী ও সৌভাগ্যবতী কর। ইহার গর্ভে দশ পুত্র সংস্থাপন কর, পতিকে লইয়া একাদশ ব্যক্তি কর।

৪৬। তুমি শ্বশুরের উপর প্রভুত্ব কর, শ্বশ্রূকে বশ কর, ননদ ও দেবরগণের উপর সম্রাটের ন্যায় হও।

৪৭। তাবৎ দেবতাগণ আমাদিগের উভয়ের হৃদয়কে মিলিত করিয়া দিন। বায়ু ও ধাতা ও বাগদেবী আমাদিগের উভয়কে পরস্পর সংযুক্ত করুন(১৬)।

————

(১) এখানে সোম অর্থে চন্দ্র করিলে সুন্দর হয়। ইহার পরের ঋকেও “প্রকৃত সোম” অর্থে চন্দ্র বলিয়া বিবেচনা করা যাইতে পারে। নবম মন্ডলে ও ঋগ্বেদের অন্যান্য স্থানে, সোম অর্থে সোমরস, এই দশম মন্ডলের কোন স্থলে চন্দ্র অর্থে ঋষিগন এই শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন কি না, তাহা বিচার করিতে আমি অক্ষম। পন্ডিতবর Roth এই ৮৫ সূক্তটি অপেক্ষাকৃত আধুনিক বলেন। Nirukta, p. 147.

(২) মূলে “বার্হত” শব্দ আছে। “বৃহ” ধাতু হইতে উৎপন্ন সুতরাং অর্থ বোধ হয় “ব্রহ্ম” অর্থাৎ স্তোত্র উচ্চারণকারী। “Lofty ones.”—Weber. Ind. Stud. V. 178.

(৩) সূর্য্যার বিবাহ সম্বন্ধে ১।১১৬।১৭ ঋকের টীকা দেখ, তথায় সোম অর্থে সোমরস করিয়া আমি টীকা লিখিয়াছিলাম। সূর্য্যকন্যার বিবাহার্থী যে সোম। তিনি সোমলতা, না চন্দ্র, তাহা বিচার করা কঠিন। সূক্ত রচয়িতা কি অর্থে ঐ শব্দ ব্যবহার করিয়াছিলেন?।

(৪) মূলে “অযানু হন্যতে গাবঃ” আছে।

(৫) মূলে “অর্জন্যো পরিউহ্যতে” আছে।

(৬) বিশ্বাবসু বিবাহের অধিষ্ঠাতা। বিবাহ হইয়া গেলে পর, তাঁহার অধিষ্ঠাতৃত্ব থাকে না।

(৭) কন্যা বিবাহ লক্ষণপ্রাপ্তা হইলে পর, তাঁহার বিবাহ দেওয়া বিধেয়, এই মত ২১ ও ২২ ঋকে প্রতীয়মান হইতেছে। এই স্থান হইতে সূক্তের শেষ পর্যন্ত বিবাহের বিবরণ ও মন্ত্র পাওয়া যায়।

(৮) অর্থ বোধহয় পিতৃকুল হইতে মোচন করিয়া স্বামিকুলে গ্রথিত করিলাম, ২৬ ও ২৭ ঋকে বিবাহিতা স্ত্রীর প্রতি উপদেশ।

(৯) “কৃত্যা” অর্থ আমি বুঝিতে পারি নাই। সায়ণ ইহার অর্থ পাপ দেবতা করিয়াছেন।

(১০) এই ঋকগুলি বিবাহের আচার সম্বন্ধে। এক্ষণে যেমন নাপিত বিবাহের বস্ত্র লাভ করে, তৎকালে বোধ হয় সে বস্ত্র ঋত্বিকের প্রাপ্য ছিল।

(১১) এটা স্বামীর উক্তি।

(১২) মনুষ্য জীবনের সীমা শত বৎসর।

(১৩) কন্যাকে বোধ হয় সোম ও গন্ধর্ব ও অগ্নির নিকট সমর্পণ করিয়া পরে বিবাহ কার্য সম্পন্ন হইত।

(১৪) এটা বরবধূর প্রতি উক্তি।

(১৫) ৪৩ হইতে ৪৬ ঋক বধূর প্রতি উক্তি। ৪৭ সূক্ত বর বধূর উক্তি।

(১৬) এই সূক্তের অনেকাংশে পাঠ করিতে করিতে এক্ষনকার স্ত্রী আচারের ব্যাপারের সহিত কিছু কিছু সৌসাদৃশ্য লক্ষিত হয়। এই সূক্তের অনেক স্থান পূর্বকালে বিবাহের সময় মন্ত্রের ন্যায় পাঠ করা হইত, এপ্রকার অনুমান করিলে বোধহয় বিশেষ ভ্রম হইবেক না।