ঋগ্বেদ ১০।০৮৩

ঋগ্বেদ ১০।০৮৩
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ৮৩
মন্যু দেবতা। মন্যু ঋষি।

১। হে মন্যু, অর্থাৎ ক্রোধের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা)! হে বজ্রতুল্য! হে বাণসদৃশ! যে ব্যক্তি তোমার পরিচর্যা করে, সে সর্বদা সর্বপ্রকার তেজ ও বল ধারণ করে, তোমাকে সহায় পাইয়া আমরা যেন দাসজাতি ও আৰ্য্যজাতি উভয়ের সঙ্গেই যুদ্ধ করিতে পারক হই(১); কারণ, তুমি বলের কর্তা, নিজে বলরূপ ও বলবান।

২। মন্যুই নিজে ইন্দ্র, মন্যুই দেবতা, তিনি হোতা, তিনি বরুণ, তিনি জাতবেদা বহ্নি। মনুষ্যজাতীয় তাবৎ প্রজা মন্যুকে স্তব করে। হে মন্যু! তপস, অর্থাৎ আমার পিতার সহিত মিলিত হইয়া আমাদিগকে রক্ষা কর।

৩। হে মন্যু! অতি বিপুল মূর্তি ধারণপূর্বক এস, তপস, অর্থাৎ আমার পিতাকে সহায় করিয়া শত্ৰুদিগকে ধ্বংস কর। তুমি শত্ৰু সংহারকারী, বৃত্র নিধনকারী এবং দস্যু জাতির প্রাণবধকারী (২)। আমাদিগের জন্য সর্বপ্রকার সম্পত্তি আনিয়া দাও।

৪। হে মন্যু! তোমার তেজঃ সকলকে পরাভব করে। তুমি স্বয়ম্ভু, তুমি দিপ্তিশীল, শত্রু জয়কারী, চতুর্দিক দর্শনকারী, শত্রুর আক্রমণ সহ্য করিতে সমর্থ এবং বলবান। আমাদিগের সেনাবর্গকে তেজোযুক্ত কর।

৫। হে উৎকৃষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন! যজ্ঞভাগের আয়োজন করিতে না পারিয়া আমি তোমাকে পূজা দিতে বিমুখ হইয়াছি। যদিচ তুমি মহান, তথাপি আমি পূজা দিই নাই। হে মন্যু! এই রূপে তোমার যজ্ঞ সম্পাদনে শৈথিল্য করিয়া এখন লজ্জা পাইতেছি। তুমি নিজ গুণে আপন ইচ্ছায় আমাকে বল দিতে এস।

৬। হে মন্যু! এই আমি তোমার নিকটে আসিয়াছি, তুমি অনুকুল হইয়া আমার নিকট আসিয়া অবতীর্ণ হও। তুমি আক্ৰমণ সহ্য করিতে সমর্থ, তুমি সকলের ধারণকর্তা। হে বস্ত্রধারী মন্যু! আমার নিকটে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হও, আমাকে আত্মীয় জ্ঞান কর, তাহা হইলে আমি দস্যুদিগকে বধ করিতে পারি(৩)।

৭। নিকটে এস, আমার দক্ষিণ হস্তের দিকে অবস্থিত হও, তাহা হইলে বৃত্রদিগকে নিধন করিতে পারি(৪), তোমার নিমিত্ত মধুর উৎকৃষ্ট অংশ হোম করিতেছি, উহাদ্বারা প্রাণধারণ সম্পন্ন হইবেক। এস,তোমাতে আমাতে সর্বাগ্রে গোপনে মধু পান করা যাউক।

————

(১) দাসজাতি ও আর্য্যজাতির উল্লেখ।

(২) দস্যুজাতির কথা।

(৩) পুনরায় দস্যুজাতির উল্লেখ।

(৪) ক্রোধই শত্রু বিজয়ের একটি প্রধান সাধন; শত্রুদিগের সহিত যুদ্ধ উপলক্ষে সেই ক্রোধকে দেবরূপ, এই সূক্তে ও পরের সূক্তে স্তুতি করা হইতেছে।