১৩০. অর্জ্জুন সহ সুভদ্রার বিবাহে বলরামের অসম্মতি

প্রভাতে উঠিয়া সবে করি স্নান দান।
একত্র বসিল সব যাদব-প্রধান।।
উগ্রসেন বসুদেব সাত্যকি উদ্ধব।
অক্রূর সারণ গদ মুষলী মাধব।।
প্রসঙ্গ করেন তবে দেব নারায়ণ।
সুভদ্রা দেখিয়া মম স্থির নহে মন।।
বিবাহের যোগ্যা যে অবিবাহিতা থাকে।
অস্পৃশ্য তাহার অন্ন জল বলে লোকে।।
অনূঢ়া কুমারী যদি হয় ঋতুমতী।
উভয়তঃ সপ্তকুল হয় অধোগতি।।
কুলেতে কলঙ্ক হয় সংসারেতে লাজ।
এ কারণে কন্যা দিতে নাহি করিবে ব্যাজ।।
সপ্তম বৎসরে কন্যা দিলে ফল পায়।
অতঃপর ইহাতে বিলম্ব না যুয়ায়।।
ভদ্রার সম্বন্ধ যোগ্য না দেখি যে আর।
মোর চিত্তে লয় এক কুন্তীর কুমার।।
রূপে গুণে কুলে শীলে বলে বলবান।
পার্থ যোগ্য হয়, করিয়াছি অনুমান।।
শুনি বসুদেব তাহা করেন স্বীকার।
যা বলেন কৃষ্ণ চিত্তে লইল আমার।।
সাত্যকি বলিল, যদি কুলে ভাগ্য থাকে।
তবে ত পাইবে ভদ্রা স্বামী অর্জ্জুনকে।।
অর্জ্জুন-সমান যোগ্য না দেখি ভুতলে।
ভাল ভাল বলি বলে যাদব সকলে।।
এতেক সবার বাক্য শুনি হলধর।
রক্তচক্ষু করি ক্রোধে করেন উত্তর।।
কেন চিন্তা কর সবে সুভদ্রা কারণে।
তার হেতু বর আমি চিন্তিয়াছি মনে।।
কৌরব-কুলেতে শ্রেষ্ঠ রাজা দুর্য্যোধন।
উচ্চ কুল বলি হয় বিখ্যাত ভুবন।।
বলে জিনে মত্ত দশ-সহস্র বারণ।
রূপেতে কন্দর্প জিনে, ধনে বৈশ্রবণ।।
অর্জ্জুনের শতাংশ না গণি তার গুণে।
না বুঝিয়া হেন বাক্য বল কি কারণে।।
দূত পাঠাইয়া দেহ হস্তিনা নগর।
দুর্য্যোধনে তথা গিয়া আনুক সত্বর।।
শুভদিন করহ করিতে শুভ কার্য্য।
রাজগণ আনাইব যত আছে রাজ্য।।
এই বাক্য যদ্যপি বলেন হলধর।
অধোমুখ হৈয়ে কেহ না দিল উত্তর।।
কতক্ষণে বলরাম ডাকি দূতগণে।
রাজ্যে নিমন্ত্রণ-লিপি দেন জনে জনে।।
দুর্য্যোধনে লিখেন সকল সমাচার।
সুসজ্জা হইয়া এস বিভা যে তোমার।।
মহাভারতের কথা অমৃত লহরী।
কাশীদাস কহে, সাধু যায় ভব তরি।।