১২৭. শ্রীকৃষ্ণের দান পাইয়া নারদের গমনোদ্যোগ

দান পেয়ে নারদ নাচের ঊর্দ্ধবায়।
যতেক দক্ষিণা পায় ব্রাহ্মণে বিলায়।।
নারদ দ্বারকানাথে লৈয়া যায় ধরি।
শুনিয়া দ্বারকা শুদ্ধ ধায় নর নারী।।
পারিজাত বৃক্ষ হৈতে খসান বন্ধন।
গোবিন্দে বলেন সব ফেল আভরণ।।
এখন গোপাল আর এ বেশে কি কাজ।
তপস্বী হইলা ধর তপস্বীর সাজ।।
কিরীট ফেলিয়া শিরে ধর পিঙ্গ জটা।
কনক-পইতা ফেলি লহ যোগপাটা।।
কনক-মুকুতা হার ফেল বনমালা।
পীতাম্বর ফেলিয়া পরহ বাঘছানা।।
মুনির বচনে হরি ত্যজি সেইক্ষণ।
ধরেন তপস্বী-বেশ দৈবকী-নন্দন।।
হাতেতে করিয়া বীণা কাঁধে মৃগছালা।
পাছে পাছে যান যেন সন্ন্যাসীর চেলা।।
দেখিয়া কৃষ্ণের বেশ কান্দে সর্ব্বজন।
উগ্রসেন বসুদেব করয়ে ক্রন্দন।।
কান্দয়ে যাদব যত নারী আর শিশু।
থাকুক অন্যের কথা কান্দে বণ্য-পশু।।
বাল বৃদ্ধা যুবা কান্দে ভূমিতলে পড়ি।
দৈবকী রোহিণী কান্দে দিয়া গড়াগড়ি।।
রুক্মিণী প্রভৃতি ষোল-সহস্র রমণী।
পাছে পাছে চলি যায় যতেক কামিনী।।
নারদ বলেন যে তোমরা যাহ কোথা।
রুক্মিণী বলেন যে তোমরা যাবে যেথা।।
নারদ বলেন, কি তোমায় প্রয়োজন।
নানা স্থানে ভ্রমি আমি তপস্বী ব্রাহ্মণ।।
রুক্মিণী বলেন, কৃষ্ণ দান পেলে মুনি।
যৌতূক পাইলা ষোল-সহস্র রমণী।।
মুনি বলে, রুক্মিণী না কর মিছা দ্বন্দ্ব।
পাছে ক্রোধ না করিল বলি ভাল মন্দ।।
যখন করিল দান সত্রাজিত-সুতা।
তখন ত কেহ না কহিলা কোন কথা।।
তার আগে কহিবারে নহিলে ভাজন।
আমার সহিত তব কোন্ প্রয়োজন।।
রুক্মিণী বলেন, পুনঃ শুন মুনিরায়।
সত্যভামা দিল দান, আমার কি তায়।।
প্রাণনাথে লয়ে যাহ আমা সবাকার।
কহ মুনি, আমরা রহিব কোথা আর।।
মহাভারতের কথা সুধা সমতুল।
কাশীরাম দাস রচে জগতে অতুল।।