১২১. শ্রীকৃষ্ণের সুরলোকে গমন

নারদ বলিলা, তবে শুন নারায়ণ।
অদিতি কহিলা যত কুণ্ডল কারণ।।
নরক আনিল বলে অদিতি-কুণ্ডল।
লুটিয়া অমরাবতী অমরী সকল।।
পৃথিবীর পুত্র হয় নরক দুর্ম্মতি।
তারে না মারিলে নহে স্বর্গের বসতি।।
শুনিয়া গোবিন্দ তথা করিল গমন।
নরকেরে মারিয়া পাইল কন্যাগণ।।
ষোড়শ-সহস্র কন্যা দেবের কুমারী।
এককালে বিবাহ করিলেন মুরারি।।
অদিতির কুণ্ডল দিলেন অদিতিরে।
তথা হৈতে চলিলেন অমর-নগরে।।
নন্দন-কানন মধ্যে হৈয়া উপনীত।
দেখেন কুসুম-রাজ গন্ধে আমোদিত।।
সাত্যকিরে বলেন, আনহ তরুবর।
শুনিয়া সাত্যকি তথা গেলেন সত্বর।।
বৃক্ষের রক্ষণেতে আছিল বহু রক্ষ।
হাতে অস্ত্র লইয়া ধাইল লক্ষ লক্ষ।।
সাত্যকি বলিল, প্রাণ যদি সবে চাহ।
না করহ দ্বন্দ্ব, ইহা ইন্দ্রেরে জানাহ।।
ধাইয়া ইন্দ্রের ঠাঁই সবে গিয়া কহে।
চল শীঘ্র দেবরাজ, বিলম্ব না সহে।।
গরুড়-আরূঢ় যে মনুষ্য চারিজন।
ভাঙ্গিয়া লইয়া পুষ্প পারিজাত-বন।।
শুনিয়া ইন্দ্রের চিত্তে হইল স্মরণ।
পারিজাত লইতে আইল নারায়ণ।।
ক্রোধে থরথর কলেবর, কাঁপে শক্র।
সহস্র লোচন-ফিরে যেন কালচক্র।।
নানা অস্ত্র লইয়া সমরে কৈল সাজ।
হাতে বজ্র লইয়া চড়িল গজরাজ।।
শচী বলে, যাব আমি সংহতি তোমার।
কিরূপ হইবে যুদ্ধ দেখিব দোঁহার।।
শুনি ইন্দ্র বসাইল বামে আপনার।
শচী, জয়দেব সখা আর জয়ন্তকুমার।।
হেনমতে আরোহণ কৈল চারিজন।
চালাইয়া দিল গজ যথা নারায়ণ।।
মহাভারতের কথা অমৃত-লহরী।
কাশীদাস কহে, শুনি তরি ভববারি।।