মৃত্যুঘণ্টা – ৩১

একত্রিশ

কার্লসপিট-এ ছেলের বাড়িতে এলেনার পাঠানো ফোটোগ্রাফগুলো পুরো আঠারো ঘণ্টা ধরে দেখেছেন প্রফেসর বার্ডম্যান। নানান রেফারেন্স ঘেঁটেছেন। ক্রস-রেফারেন্স শেষ করে দ্বিতীয়বারের মত পরখ করলেন সব। নার্ভাস লাগল তাঁর। অস্থির মনে ভাবলেন, যোগাযোগ করবেন এলেনার সঙ্গে। ওই আলাপ হতে হবে অতি গোপনে।

রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে রওনা হলেন তিনি। ১-৫ ফ্রিওয়েতে পড়ে চললেন বালবোয়া পার্কের ভেতর দিয়ে। পেছনে পড়ল স্যান ডিয়েগোর বড় একাংশ। উঠলেন করোনাডো সেতুর ওপর। অনেক নিচে উপসাগরের বুকে চাঁদের রুপালি ঝিলিক।

নেভাল বেসের গেটে পৌঁছে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখালেন গার্ডকে। চট করে কার্ড চেক করল লোকটা। লিস্টে আছে এই ভদ্রলোকের নাম। ওপরে উঠে গেল স্টিলের বার। যেতে পারেন প্রফেসর বার্ডম্যান।

গার্ডকে স্যালুট দিলেন তিনি।

জবাব না দিয়ে প্রফেসরের দরজার পাশে থেমে বলল গার্ড,  ‘স্যর, আপনি সিভিলিয়ান। দয়া করে স্যালুট দেবেন না।’

‘ঠিক,’ হেসে মাথা দোলালেন প্রফেসর। ‘ফেরত দাও।’

‘সম্ভব না, স্যর। নিইনি তো!’

দশ মিনিট পর সিকিয়োর এক ঘরে স্ক্যানার, কমপিউটার ও ফ্ল্যাট-স্ক্রিন মনিটরের সামনে বসলেন প্রফেসর। এবার অপেক্ষা করতে হবে টেলিকনফারেন্সের জন্যে। যে-কোনও সময়ে কোথাও থেকে যোগাযোগ করবে এলেনা।

উত্তেজিত বোধ করছেন প্রফেসর।

গাছের বাকলের কাগজ বা প্যাপিরাস একসময়ে গুঁড়ো হয়, এদিকে পাথরের ট্যাবলেট ভীষণ ওজনদার— কিন্তু তামার লিপি হাজার হাজার বছরের জরুরি এক সমস্যা দূর করে দিয়েছিল। হালকা জিনিস। বয়ে নিতে কষ্ট হয় না। দশ হাজার বছর ধরে এই ধাতু তোলা হচ্ছে খনি থেকে। তাম্রলিপির বুকে লিখলে রয়ে যায় সব। আগুনে পোড়ে না, সহজে ভাঙে না, খেয়ে শেষ করে না. উই বা মথ। এই জিনিসই দরকার ছিল প্রাচীন আমলে।

আর্কিওলজিস্টদের অনেকে আশা করেছিল, সব জায়গায় পাবে এসব তামার লিপি। সেসবে থাকবে সে সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। পাওয়া গেছে মাত্র কয়েকটা তাম্রলিপি। কোথাও কোথাও পাওয়া গেছে টিনের পাত। কিন্তু ডেড সি-র মত লিপি নেই বললেই চলে।

আর্কিওলজিস্টরা ধারণা করেন, ডেড সি-র তামার লিপি এসেছে অন্য এলাকার লোকের কাছ থেকে। তারা ছিল সমাজ বহির্ভূত। পরে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে প্যাপিরাস বা পার্চমেন্ট লিপিতে, সেসব থেকে অনেক আলাদা তাদের লিপি। যারা তৈরি করত, আঁচ করা হয় তারা এসব লিপিতে লিখত তাদের গুপ্তধনের খোঁজ। খুব গোপনে রাখত, ফলে পরে আর পাওয়া যেত না কিছুই। কখনও কখনও এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হতো তাম্রলিপির মালিক। কিন্তু এলেনা যে লিপির ছবি পাঠিয়ে দিয়েছে, ওটার মালিক কখনও চায়নি হারিয়ে যাক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যত্ন করে রেখেছিল বলে এত হাজার বছর পরেও রয়ে গেছে। প্রফেসর ধারণা করছেন, যে-কোনও কারণেই হোক, বাধ্য হয়ে পালাতে হয়েছিল লোকটাকে।

লিপির অর্থ বুঝতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করেছেন তিনি। প্রথম অংশ প্রোটো-এলামাইট ভাষায়। আগে কাছাকাছি যেসব ভাষার লিপি পেয়েছেন, সেগুলোর সাহায্য নিয়ে এগোতে হয়েছে আন্দাজে। মৃত ভাষা প্রোটো-এলামাইট। অনুবাদ করার কাজটা ছিল কঠিন। কেউ জানে না এসব অক্ষর দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছে ওরা।

শুরুতেই হাল ছেড়ে দেয়ার মত অবস্থা হলো। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন পুরো লিপি। তখনই অবাক হয়ে আবিষ্কার করলেন, ওটার ভেতর ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর চেনা দুটো ভাষা।

দ্বিতীয় ভাষাটি কিউনিফর্ম বা কীলক ভাষা। ব্যবহার করা হতো নানান আকারের কীলকের মত সিম্বল। এই তাম্রলিপিতে যে ভঙ্গিতে লেখা হয়েছে, তা সুমেরিয়ান স্টাইল। খ্রিস্টের জন্মের তিন হাজার বছর আগে ব্যবহৃত হতো দক্ষিণ ইরাকে।

প্রাচীন আমলের অন্যতম লিখিত ভাষা ওই সুমেরিয়ান। এ যুগে অনেকেই জানে কীভাবে অনুবাদ করতে হবে। ওই ভাষা পেয়ে যাওয়ার পর কপাল খুলল প্রফেসর বার্ডম্যানের।

তাম্রলিপির শেষাংশে যে লিখিত ভাষা, ওটা আক্কাডিয়ান বা পুবের সেমিটিক। ওটা অনুবাদ করেছে পরবর্তী সময়ের মানুষ। খ্রিস্টের জন্মের আড়াই হাজার বছর আগে ব্যবহার করা হতো মধ্য ও উত্তর ইরাকে। একই ভাষা চলত বর্তমানের সিরিয়াতে। আক্কাডিয়ান দেখলে মনে হবে নানান দিকে তাক করা হয়েছে অনেক ধরনের তীর।

প্রফেসর বুঝে গেলেন, আসলে এই তাম্রলিপিতে আছে তিনটে ভাষা। এটা করা হয়েছে বেশি মানুষকে খবর জানাতে। যে-কোনও একটা ভাষা জানলেই লিখিত বক্তব্য বুঝবে যে-কেউ। এই একই কাজ করা হয়েছিল রেসেটো স্টোনে।

কিন্তু অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনা করতে পারবেন না বার্ডম্যান এই তাম্রলিপির। যে কথা লেখা হয়েছে, তা অকল্পনীয়। মানুষটা চেয়েছিল ছড়িয়ে পড়ুক তার লিখিত বক্তব্য।

মনিটরে মৃদু টিং শব্দ হতেই সচেতন হলেন প্রফেসর। এক মুহূর্ত পর দেখলেন গ্রিক দেবীর মত সুন্দরী এলেনা রবার্টসনকে।

সংক্ষেপে কুশল বিনিময় করল দু’জন, তারপর দেরি না করে মূল কথায় এলেন বার্ডম্যান।

‘এ যেন জেনেসিসের কাহিনি। বললে বিশ্বাস করবে না কী হয়েছিল।’

‘এসবের ভেতর অস্ত্র বা প্লেগের কথা লিখেছে?’ জানতে চাইল এলেনা।

‘না।’ একটু অবাক হয়েছেন প্রফেসর। ‘লিখেছে প্রায় স্বর্গীয় কয়েকটা বাগান ছিল সে আমলে।’

‘তা-ই?’

গলা পরিষ্কার করলেন প্রফেসর। ‘হ্যাঁ। এসব বাগানে ছিল অদ্ভুত এক গাছ। ওটার ফল মানুষকে দিত দীর্ঘ জীবন। এখানে লিখেছে, ওই ফল খেলে মরত না কেউ। এমন একটা বাগান ছিল মিশরের ফেরাউনের। ওটার দায়িত্বে ছিল সম্রাটের সবচেয়ে বিশ্বস্ত যাজক। আরেকটা ছিল ভারতের গঙ্গার পাড়ে। ওই বাগানের মত আরও কয়েকটা ছিল ইথিয়োপিয়া আর ম্যাসেডোনিয়া বা গ্রিসেও।’

‘বুঝলাম,’ বলল এলেনা। ‘একাধিক বাগান ছিল।’

‘অদ্ভুত গাছের। আরেকটা ইরাকের সমতল এলাকায়। ওখানে ছিল সুমেরিয়ানদের বিশাল সভ্যতা। সব এখন মরুভূমি। কিন্তু সাত হাজার বছর আগে আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমের মতই ইরাকের ওই এলাকা ছিল সবুজ। সভ্যতা ছিল। তারা ব্যবহার করত ঘোড়া। শিকারের অভাব ছিল না। এসব এলাকার একাংশে ছিল ওই বাগান এডিন। সুমেরিয়ান ভাষায় ওটা খোলা প্রান্তর।’

‘খোলা এলাকায় বাগান, বুঝলাম,’ বলল এলেনা, ‘আর কিছু, প্রফেসর?’

‘হাজার হাজার বছর আগে যখন লেখা হলো এই তামার লিপি, তত দিনে স্বপ্নের মত ওসব বাগানের বেশিরভাগ হয়ে গেছে বিরান এলাকা। একটার পর একটা। বীজ দিয়ে আর জন্ম হচ্ছিল না ওই গাছ। আবার গাছ থেকেও পাওয়া যাচ্ছিল না বিচি বা বীজ। ওই লোক যেখান থেকে এসেছে, সেখানেই ছিল ওই শেষ বাগান। ওখানে তখনও জন্ম নিত ফল।’

‘বলে যান, প্রফেসর,’ বলল এলেনা।

‘সে সময়ের আগে হয়েছিল চরম দুর্ভিক্ষ,’ নোট দেখলেন প্রফেসর। ‘আমরা ওটাকে বলি ৫.৯ ইভেন্ট। কমবেশি ছয় হাজার বছর আগের কথা। উত্তর আফ্রিকা, মিডল ইস্ট আর এশিয়ার বড় একটা অংশ হয়ে গেল ধূসর মরুভূমি। আজও আমরা তা-ই দেখি। কেন এমন হয়েছিল, কেউ জানে না। কিন্তু এটা আমরা জানি: পরে মরুভূমিতে খুঁজে পাওয়া যেসব আধার থেকে ফসলের ফসিল পাওয়া গেছে, সে থেকে বোঝা যায়, খুব দ্রুত শুকিয়ে গিয়েছিল ওই এলাকা।’

‘বলুন, শুনছি,’ আগ্রহ নিয়ে বলল এলেনা।

‘চরম দুর্ভিক্ষের কথা থেকে আন্দাজ করছি, এই লিপি যে লিখেছে, সে বেঁচে ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৯০০ থেকে ৩৪০০ বছর সময়ের ভেতর।’

‘আর কিছু, প্রফেসর?’

‘চারপাশে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, রাজার বাগানের গাছ আর ফল দেয় না। কিন্তু কথাটা ছিল পুরো মিথ্যা। ঠিকই ফল দিত গাছ।’

‘তার মানে, ওই শেষ বাগান রয়ে গিয়েছিল,’ বলল এলেনা। ‘তারপর কী?’

‘লিপি অনুযায়ী, বালির প্রান্তরে ছিল মস্ত এক নদী। তার মাঝে ছিল একটা দ্বীপ, ওই বাগান ছিল ওখানে। শুধু রাজা, তাঁর কাছের লোক আর সেরা সৈনিকরা জানত কোথায় আছে ওটা। গোপন করা হয়েছিল সব। দিন-রাত পাহারা দেয়া হতো। দূরের সব রাজা ও বড়লোকদের কাছে প্রচুর সোনা-দানার বিনিময়ে বিক্রিও করা হতো ওই ফল। তারা ভাল করেই জানত, ফল খেলে অনেক দিন বাঁচবে। আর এ কারণেই বিত্তবান হয়ে উঠেছিল রাজা। সাধারণ মানুষ তার সুফল পায়নি।’

‘চিরকাল যা হয়েছে, বলল এলেনা, ‘কিন্তু, প্রফেসর, এসব তথ্য থেকে বিশেষ কোনও লাভ হবে না আমার।’

‘হয়তো সাহায্য করতে পারব, যদি তুমি বলো কী ধরনের সমস্যায় আছ,’ বললেন বার্ডম্যান।

দ্বিধায় পড়ল এলেনা। কয়েক সেকেণ্ড ভেবে বলল, ‘ঠিক আছে, আপনাকে বলতে আপত্তি নেই। ওই লিপি চুরি করে নিয়ে গেছে চরমপন্থী এক কাল্টের লোক। তাদের কথা, আসলে স্রষ্টা বলে কিছুই ছিল না কোনও কালে। যা খুশি করছে তারা। যাকে খুশি খুন করছে। শুধু তা-ই নয়, চাইছে বায়োলজিকাল ওয়েপন। সুযোগ পেলে সর্বনাশ করবে মানব জাতির।’

এলেনার কথা শুনে গলা শুকিয়ে গেল প্রফেসর বার্ডম্যানের। ‘যে জন্যেই হোক, ওই লিপি তাদের দরকার,’ বলল এলেনা, ‘ওই একই কারণে আমরাও ওটা ফিরে পেতে চাইছি। এখনও জানি না ওটার সঙ্গে ভাইরাসের হুমকি দেয়ার কী সম্পর্ক, কিন্তু এটা বুঝতে পারছি, সম্পর্ক আছে।’

চুপ করে ভাবতে লাগলেন প্রফেসর।

অন্তত এক মিনিট পর বলল এলেনা, ‘তামার লিপি এত মূল্যবান মনে করছে কেন? এর কোনও কারণ বলতে পারেন?’

‘ওটায় লেখা আছে কীভাবে যেতে হবে ওখানে,’ বললেন প্রফেসর।

‘একটু খুলে বলুন।’

‘ওটাই বাগানের পথ দেখিয়ে দেবে।’

অবাক চোখে প্রফেসরকে দেখল এলেনা। ওর মনে হলো ভুল শুনছে। ‘সেই স্বর্গের মত বাগানে যাওয়ার পথ জানাবে?’

‘হ্যাঁ।’ মাথা দোলালেন বার্ডম্যান। ‘অবশ্য, জিয়োগ্রাফিক ডেসক্রিপশন দিয়ে কিছুই বুঝবে না। আসলে এ কারণেই পরের কয়েক হাজার বছর ধরে খুঁজেও ওই বাগান পায়নি কেউ।’ নিজের নোট দেখলেন বার্ডম্যান। ‘ওটা ছিল পুবে। কিন্তু শুধু পুব বললে তো চলবে না। হাজার হাজার মাইল এলাকা। আরও বলেছে, এসব বাগান ছিল নদীর তীরে বা মাঝে। টাইগ্রিস আর ইউফ্রেটিস কোথায় আমরা জানি, এ ছাড়াও ওদিকে ছিল অন্য নদী। ওখানে মিলত সোনা ও অনিক্স। এসব আছে ইরাকে। ওদিকে নির্দেশ করছে তামার লিপি। বা বলতে পারো, মিডল ইস্ট। বাইবেলে আছে হাভিলা এলাকার কথা। ওটার অর্থ বিস্তৃত বালি। আবার লিপি অনুযায়ী, ইরাকের সমতল এলাকায় আছে ওই বাগান।’

‘এটুকু বুঝলাম,’ একটু অসহায় সুরে বলল এলেনা।

‘কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, লিপি অনুযায়ী ওখানে আছে গিহন নামের নদী,’ বললেন প্রফেসর, ‘ওটা বয়ে গেছে কুশ এলাকার মাঝ দিয়ে। কিন্তু ওই নদী ইথিয়োপিয়ার কুশ এলাকার ভেতর দিয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করেন আর্কিওলজিস্টরা। কাছেই ছিল নীল নদ। বর্তমানের স্কলারদের মত নিখুঁত বর্ণনা দেয়নি ওই লোক। আবার বাইবেলে বারবার এসেছে নীল নদের সঙ্গে যুক্ত ছিল কুশ।’

চুপ করে আছে এলেনা।

‘জায়গাটা খুঁজে বের করা কঠিন,’ বললেন বার্ডম্যান। ‘কিন্তু সত্যিই যদি থাকে মাত্র একটা বাগান, তো…’ চুপ হয়ে গেলেন তিনি।

‘ওই বাগান কোথায় বলতে পারেন, প্রফেসর?

‘লিপি অনুযায়ী হয়তো খুঁজে বের করা যাবে। এখনও রয়ে যাওয়ার কথা একটা-দুটো দিক নির্দেশনা।’

‘কিন্তু ওই বাগানের সঙ্গে স্রষ্টার অস্তিত্বের কী সম্পর্ক? ওই কাল্ট আসলে কী চায়? বায়োলজিকাল অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে কেন?’ আরও গম্ভীর হয়ে গেল এলেনা। ‘আমার মনে হচ্ছে কানা গলিতে আটকা পড়েছি।’

‘তামার ওই লিপিতে অস্ত্রের কথা নেই,’ বললেন বার্ডম্যান। স্ক্রিনে দেখছেন সুন্দরী মেয়েটাকে। কয়েক সেকেণ্ড পর জানতে চাইলেন, ‘তুমি খুঁজতে যাবে ওই বাগান?’

প্রথমবারের মত হাসল এলেনা। ‘আপনার ভয়ের কিছু নেই, গেলেও আপনাকে সঙ্গে নেব না।’

মাথা দোলালেন প্রফেসর। ‘তা বুঝলাম। কিন্তু সত্যি যদি রানা আর তুমি যাও খুঁজতে, আমি হয়তো তোমাদেরকে জানাতে পারব কোথায় ছিল ওই বাগান। কিন্তু শর্ত থাকবে, তোমরা পচা লোকগুলোকে মেরে সাফ করার পর প্রথম সুযোগে এক্সকেভেট করতে দেবে আমাকে।’

চকচক করছে এলেনার চোখ। ‘কিছু গোপন করেছেন, প্রফেসর? বোধহয় জানেন ওটা কোথায়?’

‘এখনও না,’ মাথা নাড়লেন বার্ডম্যান। ‘কিন্তু লিপির ভেতর নানান ল্যাণ্ডমার্ক। তোমাদেরকে পাঠাতে পারব বাগানের খুবই কাছে। ওখান থেকে খুঁজতে শুরু করলে পেয়ে যাবে।’

‘আপনি পথ দেখালে পরের কাজ আমাদের,’ বলল এলেনা, ‘এক্সকেভেট করতে দিতে পারব কি না জানি না, কিন্তু সব কাজ শেষ হলে বড় এক বাক্স চকলেট পাঠিয়ে দেব।’

খুশি হয়ে হাসলেন মিষ্টিখোর প্রফেসর। ‘কিছু না পাওয়ার চেয়ে ভাল।’ আশ্বস্ত করলেন তিনি, ‘আর বড়জোর কয়েক ঘণ্টা, এলেনা, তারপর যোগাযোগ করব। তোমরা স্যাটালাইট অনুসরণ করলেই তখন পাবে ওই বাগান।’

‘খুঁজে বের করুন,’ বলল এলেনা, ‘খুব উপকৃত হব।’ ওর মাথা থেকে দূর হচ্ছে না ওই বিপজ্জনক কাল্টের চিন্তা। সেই ফলের বাগান তারা খুঁজে পাওয়ার আগেই পৌঁছুতে হবে ওখানে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *